Saturday, August 23, 2025

মুষ্টি ভিক্ষায় তৈরি হয়েছিল ব্যতিক্রমী স্কুল, মিমির উদ্যোগে এবার দুঃস্থ মানুষের পাশে স্টুডেন্ট অ্যাকাডেমি

Date:

Share post:

মূলত কলোনি এলাকা। বন-জঙ্গল কেটে শুরু হয়েছিল ওপার বাংলা থেকে আসা উদ্বাস্তু-ছিন্নমূল গরিব মানুষের বাস। এলাকায় দোকান-পাট তো দূরের কথা, ছিল না হেঁটে চলার মতো রাস্তা। বর্ষা হলেই এক কোমর জল-কাদা পেরিয়ে মানুষকে যেতে হতো। প্রয়োজনীয় কাজে। কোনওরকমে চলতো দিন গুজরান।

চিকিৎসা করার জন্য ছিল না নূন্যতম কোনও স্বাস্থ্য কেন্দ্র। শিক্ষাদানের ছিল না কোনও স্কুলও। ঠিক সেই জায়গা থেকে শুরু হয় বেঁচে থাকার লড়াই। যাদবপুর লোকসভার অন্তর্গত দক্ষিণ শ্রীপুরে জন্ম হয় স্টুডেন্ট ক্লাবের। সালটা ছিল ১৯৮৬। ক্লাব চালানোর পাশাপাশি এলাকার বাচ্চাদের পড়াশুনার জন্য প্রয়োজন ছিল একটা স্কুলের।

কিন্তু স্বপ্ন থাকলেও সাধ্য ছিল না। তাই মহৎ উদ্দেশকে বাস্তবের রূপ দিতে ভিক্ষার পথই বেছে নিয়েছিলেন স্টুডেন্ট ক্লাব ও এলাকার মানুষজন। ক্লাবের পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে
পাশের কিছু সম্ভ্রান্ত এলাকায় গিয়ে গিয়ে মুষ্টি ভিক্ষা শুরু করেন। লোকের বাড়ি থেকে নেওয়া দানের চাল-ডাল অন্যত্র বিক্রি করে যা উপার্জন হতো তা জমিয়ে স্কুলের ইমারত সামগ্রি কেনা হয়েছিল।

এরপর একটা একটা করে ইট গেঁথে তৈরি হয় স্টুডেন্ট ক্লাবের স্বপ্নের স্কুল স্টুডেন্ট একাডেমি। বাকিটা গর্বের ইতিহাস। কোনওরকম সরকারি সাহায্য ছাড়াই এরপর ধীরে নার্সারি-প্রাইমারি থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত তা উন্নীত হয়।

বর্তমানে ৪৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাত্রছাত্রীদের পঠন-পাঠন করাচ্ছেন। তাঁরা অবশ্য বেতন নয়, নূন্যতম একটা সাম্মানিক নিয়ে সমাজ তৈরির কাজটি করছেন একেবারে হাসিমুখে।

স্টুডেন্ট ক্লাবের স্টুডেন্ট অ্যাকাডেমি আজ শুধুমাত্র একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজেদের বেঁধে রাখেনি। সমাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা। তারই মাঝে মানব সভ্যতা করোনা সঙ্কটের মুখে। তাই এই কঠিন সময়ে ফের মানুষের পাশে স্টুডেন্ট ক্লাবের স্টুডেন্ট একাডেমি। কিন্তু শুধু ইচ্ছা থাকলেই তো হবে না, সামর্থের প্রয়োজন।

ক্লাব ও তাদের স্কুলের মানুষের জন্য কাজ করার প্রবল ইচ্ছার কথা জানতে পারেন এলাকার সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর আপ্ত সহায়ক অনির্বান ভট্টাচার্য। তাঁর মাধ্যমে খবর যায় মিমির কাছে। আর এক মুহূর্ত দেরি নয়। সাংসদের নির্দেশে ক্লাবের পাশে দাঁড়াতে ছুটে যান অনির্বান। মুহূর্তে সমাধান।

স্টুডেন্ট ক্লাব ও তাদের ব্যতিক্রমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় সাংসদ মিমি চক্রবর্তী এলাকার দুঃস্থ-অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে লকডাউন পর্বে তুলে দেন প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী।

দেখুন ভিডিও…

spot_img

Related articles

বাংলা দখলে প্রধানমন্ত্রীর ‘হতাশার আর্তনাদ’! ভিডিও দেখিয়ে তোপ তৃণমূলের

বাংলার মানুষকে দিনের পর দিন বঞ্চিত রেখে বাঙালির কাছেই ভোট ভিক্ষা! বাঙালিকে একের পর এক রাজ্যে হেনস্থা করে...

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...