সেনা-এনডিআরএফে মুখরক্ষা, বিপর্যয় মোকাবিলা টিম নিয়ে নতুন করে ভাবুক রাজ্য

সেনা এবং এনডিআরএফ সাফাই অভিযানের কেন্দ্রে। তার সঙ্গে এসডিআরএফ, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম, পুরসভার টিম এবং সিইএসসির টিম। একসঙ্গে এতগুলি টিম কাজ করায় মুখ রক্ষা হলো রাজ্যের। বড় রাস্তা থেকে সরে গেল গাছ, চালু হলো বিদ্যুৎ, চলল পাম্পিং স্টেশন। কলকাতা পুরসভা ও তার সংলগ্ন এলাকার বাড়ি-বাড়িতে এল জল।

কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বিদ্যুৎ না আসার দায় সিইএসসির ঘাড়ে চাপিয়েছেন। দুর্যোগে গাছ পড়বে জানা ছিল। কিন্তু তা সরিয়ে ফেলার দায় পুর প্রশাসন না সিইএসসির সে নিয়ে বিস্তর বিতর্ক থাকলেও সিইএসসি অবশ্য এই দায় ঘাড় পেতে নিয়েছে। সংস্থার কর্তা অভিজিৎ ঘোষ বলেছেন, লকডাউন ও কর্মী সঙ্কটে আমরা পারিনি দ্রুত পরিষেবা ঠিক করতে। আজ চলছে দিন-রাত এক করে। আশা করছি মঙ্গলবারের মধ্যে আর কোনও অভিযোগ থাকবে না।

এনডিআরএফের টিম রাজ্যে আমফান পরবর্তী সময় থেকে ছিলই। শুক্রবার রাত থেকে আরও ১০টি টিম কাজে নামে। সঙ্গে ৫ কলম সেনা। সল্টলেক থেকে ভবানীপুর হয়ে বেহালা। ‘ এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’ -এর প্রতিনিধিরা যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই শুনতে হয়েছে দুটি কথা। ১. সেনা ও এনডিআরএফের টিম আর একবার মনে করিয়ে দিল সেই প্রবাদটি… যার কাজ তারই সাজে…। ২. সেনাই যদি নামাতে হলো তাহলে ২১ মে সন্ধ্যা থেকে কেন নামানো হলো না! ৩. অধিকাংশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ফোন নয় প্রযুক্তিগত কারণে বন্ধ ছিল। বিক্ষোভ প্রশমনে তাঁরা কেন আগাম সামাল দিলেন না! ওদের কেন পাওয়া গেল না! ৪. সিইএসসি বা এসিইবি তাদের হেল্প লাইন উঠিয়ে দিক। শহরের ৯০% মানুষ তাঁদের ফোনে পাননি।

কাল, সোমবার থেকে ভিতরের রাস্তাগুলিতে কাজে নামবে এই টিম। দ্রুত কাজ যে হচ্ছে তা বোঝাই যায় মানুষের বিক্ষোভ ক্রমশ প্রশমিত হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। রবিবারও শহরের ২-৩ এলাকায় বিদ্যুৎ-জলের জন্য বিক্ষোভ হয়। কিন্তু বেলা যত গড়িয়েছে, বিক্ষোভরত মানুষজন বাড়ি ঢুকে গিয়েছেন পরিষেবা ফিরে আসায়। কলকাতার কাজ শেষ করে সেনা ও এনডিআরএফ যাবে দক্ষিণ ২৪ পরগণায়।

আমফান বিপর্যয় জাতীয় বিপর্যয় এটা ঠিক। কিন্তু টানা তিন দিন বৃষ্টি হলেই কলকাতা পুরসভা নাকানি চোবানি খায়। সেই পুরসভার কাছে আমফান বিপর্যয় মোকাবিলা করার আশা বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার মতো। রাজ্যের যেসব বিপর্যয় মোকাবিলা দল আছে সেগুলো যে এইসময়ে নস্যি, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেল। দোষ নিষ্কাশনের পথ থেকে সরে এসে রাজ্যের কিন্তু নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। আর শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যাবে না।

Previous articleফেরত আসা যাত্রীদের জন্য শর্তাবলী প্রকাশ করল কেন্দ্র
Next articleআমফান বিধ্বস্ত বাংলায় লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা! মৃত বেড়ে ২০০