Monday, December 29, 2025

কৃষকদের নতুন আয়ের পথ দেখাচ্ছে পঙ্গপাল!

Date:

Share post:

পঙ্গপাল হানায় মাথায় হাত কৃষকদের।
ভয়াবহ পঙ্গপালের হামলায় ভারত ও পাকিস্তানের খাদ্য নিরাপত্তা সঙ্কটে। ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল ছড়িয়ে পড়েছে দুই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

এবার এই সংকটের মাঝেও নতুন একটি সমাধান খুঁজে পেয়েছেন পাকিস্তানের কৃষকরা। পঙ্গপাল শুধু দমনই নয়, তা বিক্রি করে আয়েরও বড় উপায় বের করেছেন পাঞ্জাবের ওকারা জেলার কৃষকেরা।

পঙ্গপাল মুরগির উচ্চপ্রোটিন যুক্ত খাবার। ওকারা জেলায় উদ্ভাবনী এ প্রকল্প এনেছেন পাকিস্তানের জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা ও গবেষণা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মোহাম্মদ খুরশিদ ও পাকিস্তান কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের জৈবপ্রযুক্তিবিদ জোহর আলী। তিনি বলেন, “আমরা যখন শুরু করলাম তখন অনেকেই উপহাস করেছেন। কারণ পঙ্গপাল ধরে বিক্রি করবে এ চিন্তা তখনও পর্যন্ত কেউ করতে পারেনি।” তিনি আরও বলেন যে , ‘আমরা ইয়েমেনের ২০১৯ সালের একটি উদাহরণ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ও দুর্ভিক্ষ কবলিত ওই দেশটিতে শ্লোগান উঠেছিল, ‘পঙ্গপাল খেয়ে ফেল, ওরা ফসল খাওয়ার আগে’।
এই শ্লোগানকে মাথায় রেখে পাকিস্তানের জনসংখ্যাবহুল প্রত্যন্ত গ্রাম ওকারা জেলাতে তিনদিনের পাইলট প্রকল্প গ্রহণ কর হয়। প্রকল্পটি ছিল দেপালপুরে পেপলি পাহার বনে। সেখানে গত ফেব্রুয়ারি থেকেই বিপুল সংখ্যক পঙ্গপাল আসে। তারপরই ওই বন নির্বাচন করা হয়। ওখানে পঙ্গপালের ওপর কীটনাশক ব্যবহার করাও হয় না। এরপর একটি শ্লোগান ছড়িয়ে দেন তারা, ‘পঙ্গপাল ধর, আয় কর এবং ফসল বাঁচাও’। প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের প্রতি কেজি পঙ্গপালের বিনিময়ে ২০ পাকিস্তানি রুপি করে দেয়া হয়।
পঙ্গপাল সাধারণত দিনের আলোতে উড়ে বেড়ায়, রাতে ওরা গাছপালায় বা উন্মুক্ত ময়দানে বিশ্রাম নেয়। তখন একদম নড়াচড়া করে না। মৃতের মতো পড়ে থাকে। ওই সময় পঙ্গপাল ধরা অনেক সহজ। কৃষকদের এই বুদ্ধি দেন জৈবপ্রযুক্তিবিদরা। তাতেই কাজ হয়। কৃষকরা প্রথম রাতেই ৭ টন পঙ্গপাল ধরে। তারপর সেগুলো মুরগির খাবার তৈরির কারখানায় বিক্রি কর হয়। একদিনে এই কাজে কোন কোন কৃষক ২০ হাজার রুপিও আয় করেন বলে জানিয়েছেন জৈবপ্রযুক্তিবিদরা।

আলী বলেন, ‘প্রথম রাতে ১০ থেকে ১৫ জন কৃষক কাজ করে। কিন্তু লোভনীয় এ আয়ের খবর চর্তূদিকে ছড়িয়ে পড়লে তৃতীয় রাতে কয়েকশ কৃষক জড়ো হয়। তারা নিজেরাই থলে নিয়ে আসে এবং সারারাত পঙ্গপাল ধরে থলে ভর্তি করে ফেলে। আমরাও তাদের বিনিময় দিয়ে দিলাম।’
পাকিস্তানে মুরগির খাবার তৈরির প্রতিষ্ঠান হাই-টেক ফিডসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আতাহার বলেন, ‘পঙ্গপাল যদি কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই ধরা যায় তবে এটি অত্যন্ত উচ্চপ্রোটিন যুক্ত খাবারে পরিণত হয়। এ খাবার হাস-মুরগি, মাছ ও গবাদিপশুকে খাওয়ানো যায়।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যে সয়াবিন আমদানি করে প্রাণীর খাবার তৈরি করি, তাতে প্রোটিন ৪৫ শতাংশ, আর পঙ্গপালে আছে ৭০ শতাংশ।পঙ্গপালে আমাদের খরচও পড়ে অনেক কম।’

spot_img

Related articles

উন্নাও ধর্ষণ: সুপ্রিম কোর্টে জামিন খারিজ সেঙ্গারের, নির্যাতিতাকে আইনি সহযোগিতার বার্তা

দিল্লি হাই কোর্টের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। উন্নাও ধর্ষণকাণ্ডে সিবিআই-এর করা মামলায় সুপ্রিম কোর্টে...

ক্যানিংয়ে MLA কাপ ফাইনাল ঘিরে বিশৃঙ্খলা, শিশুসহ আহত ৭!

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং স্টেডিয়ামে এমএলএ কাপের ফাইনালে (MLA Cup in Canning Stadium) চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। ভিড়ে ঠাসা স্পোর্টস...

মহানগরীতে মদ্যপ মহিলা যাত্রী, বেসামাল তরুণীকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে মন জিতলেন ক্যাবচালক 

এটাই বাংলা, এটাই কলকাতা। দেশের মধ্যে সবচেয়ে সুরক্ষিত শহর। এই শহরে মহিলারা মধ্যরাতেও নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারেন। এই...

সোমে কলকাতার তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রির ঘরে, তুষারপাতে বর্ষবরণের সম্ভাবনা উত্তরে!

বছর শেষ হতে আর মাত্র দু দিন বাকি, কিন্তু শীতের ইনিংস এখনও বেশ কয়েকদিন চলবে। সোমবার সকালে কলকাতার...