ভারসোভায় ইরফানের পাশে সমাধিস্ত ওয়াজিদ, এখনও ছেলের মৃত্যুর খবর পাননি মা

বলিউড অভিনেতা ইরফান খান এবং ঋষি কাপুরের মৃত্যুর এক মাস কাটতে না কাটতেই মৃত্যুর প্রয়াত হলেন বছর ৪২-এর জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক ওয়াজিদ খান। থেমে গেল তাঁর সুরের জাদু। কয়েকদিন আগে বলিউড অভিনেতা ইরফানের খানের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। আর আজ তারই পাশে চিরঘুমে শায়িত ওয়াজিদ। ইরফান খানের পাশেই মুম্বইয়ের ভারসোভা কবরস্থানে ঠাঁই হল ওয়াজিদের।

তাঁর শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হলেও এখনও তাঁর মা জানেন না যে তিনি আর নেই। তিনিও আক্রান্ত করোনাভাইরাসে। ওয়াজিদের মা রাজিনা খান করোনভাইরাসের প্রকোপ থেকে ধীরে ধীরে থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তিনি সুরানা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

ওয়াজিদের মৃত্যুতে ভেঙে গেল বলিউডের সাজিদ-ওয়াজিদ জুটি। ওয়াজিদের এই মৃত্যুর খবরে হৃদয় ভেঙেছে যায় সেলেবদের।

অক্ষয় কুমার থেকে অমিতাভ বচ্চন কিংবা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, তাঁর মৃত্যুতে ভারাক্রান্ত সেলেব দুনিয়া। প্রিয় ওয়াজিদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করলেন সলমন খান

গুরুতর অসুস্থ ছিলেন ওয়াজিদ। এক দিকে কিডনিতে সংক্রমণ, অন্যদিকে হৃদপিণ্ডে ব্লকেজ। ভর্তি ছিলেন মুম্বইয়ের চেম্বুরের এক হাসপাতালে। এরই মধ্যে দিন তিনেক আগে তাঁর শরীরে কোভিড পজেটিভ ধরা পড়ে। সঙ্গে ম্যাসিভ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। সব শেষ। রবিবার গভীর রাতে মারা যান ওয়াজিদ। খবরটা প্রথম জানিয়েছিলেন সোনু নিগম। জানা গিয়েছে, হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন তিনি। তার আগেই কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। কিছু দিন আগেই কিডনি ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট হয় ওয়াজিদের। সেখান থেকেই কিডনিতে সংক্রমণ ছড়ায়। চার দিন ধরে তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। ছিল উচ্চরক্তচাপের সমস্যাও।

মাত্র ৪২ বছর বয়স হলেও একসঙ্গে এত রোগের ধাক্কা নিতে পারেননি তিনি।

শেষযাত্রায় সঙ্গে ছিলেন পরিচালক আদিত্য পাঞ্চলি। ভাই সাজিদ কান্নায় ভেঙে পড়েন। যে সাজিদ-ওয়াজিদ জুটি প্রায় কুড়ি বছর ধরে ‘দাবাং’, ‘তেরে নাম’-এর মতো ব্লকবাস্টার ছবির সুপারহিট গান উপহার দিয়েছেন সেই জুটিতেই ভাঙন ধরল আজ। চলে গেলেন ওয়াজিদ। স্মৃতি আঁকড়ে বসে রইলেন সাজিদ খান।

অন্যতম জনপ্রিয় গায়িকা শ্রেয়া ঘোষাল তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে চোখে জল চিঠি লিখলেন ওয়াজিদ খানকে। যদিও এই চিঠি আর কোনও দিনই পড়ে ওঠা হবে না ওয়াজিদের। শ্রেয়া লিখেছেন, “আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। এটা সত্যি নয়। ওয়াজিদ ভাই, আমি চোখ বন্ধ করলেই তোমার হাসি মুখ দেখতে পাচ্ছি। তুমি সব সময় সব সিচুয়েশনে পজিটিভিটি খুঁজে পেতে। তোমার চারপাশে যারাই থাকতো, তাদের তুমি সাহস, ভালবাসা ও শক্তি জোগাতে। আমি যখন তোমায় প্রথম দেখেছিলাম, তখন আমি নতুন বলিউডে। কিন্তু তুমি আমায় একবারও তা অনুভব করতে দাওনি। পরিবারের সদস্য করে নিয়েছিলে আমায়। তোমার ভালবাসা, মানুষের জন্য কিছু পাওয়ার আশা না করে কাজ করা, তোমার ডেডিকেশন ভোলার নয়। এই সব কিছুর ওপরে তুমি একজন দক্ষ কম্পোসার ও গায়ক। তোমার সঙ্গে যখনই কথা হয়েছে তুমি বলতে এমন কিছু মেলোডি তুমি তৈরি করেছ যা তুমি রেকর্ড করতে চাও। তোমার মধ্যে সঙ্গীতের খনি ছিল। আমি ভগবানকে বলবো তুমি যেখানেই থাক, শান্তিতে থাকো। ভগবান তোমার পরিবারকে শক্তি দিক। তবুও তোমায় বিদায় বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে।”

Previous articleফের লোকালয়ে ঢুকে পড়ল ময়ূর! কোথায় দেখুন…
Next articleবাংলার মানুষ পরিবর্তন চান, ভোটেই বোঝা যাবে: শাহ