লকডাউন শিথিল হতেই ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে রাজ্যের পর্যটনকেন্দ্রগুলি

করোনা-বিধি মেনেই সোমবার থেকে চালু হয়ে গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের সৈকত পর্যটন দিঘা। এখানকার প্রায় ৬০ হোটেল খুলেছে। আজ মঙ্গলবার খুলেছে আরও প্রায় ৪০ টি হোটেল । মন্দারমণিতেও খুলেছে প্রায় ১০০টি হোটেল। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে অন্যত্র । কর্মী সঙ্কট সবচেয়ে বড় সমস্যা, এরই সঙ্গে যোগ হয়েছে স্থানীয় মানুষের আপত্তি। সবমিলিয়ে এই পর্যটন কেন্দ্রগুলি কী ভাবে ছন্দে ফিরবে তা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ জানিয়েছেন , ‘‘সোমবার থেকেই দিঘা-সহ রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে । রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা প্রত্যেককেই মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । নির্দেশিকা মানা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি চালাবে সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসন।
করোনার জেরে দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হয়েছিল ২২ মার্চ। তখন থেকেই রাজ্যের সব পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরের সব হোটেল একে একে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
‘আনলক-১’ পর্বে হোটেল, রিসর্ট, রেস্তরাঁ খোলা হয়েছে ৮ জুন থেকে।
দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের আধিকারিক সুমিত নন্দ জানিয়েছেন , ওল্ড এবং নিউ দিঘা মিলিয়ে প্রায় ৫৫০ টি হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে ৮ জুন থেকে গোটা ষাটেক হোটেল খুলেছে। এই হোটেলগুলিতে পর্যটকরা উঠতে পারবেন। তবে ঢোকা-বেরনোর সময় প্রত্যেকটার তাদের দেহের তাপমাত্রা মাপা হবে, নিয়মিত চলবে জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়া।
দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানিয়েছেন , ‘‘লকডাউনে অধিকাংশ হোটেলের কর্মীরা বাড়ি চলে গিয়েছেন। ফলে, প্রথমে অল্প কিছু হোটেলই খুলছে।’’
আগামী ১০ জুন বৈঠকে বসবে হোটেল মালিক সংগঠন। কিভাবে হোটেলগুলিকে দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা অগ্রাধিকার পাবে বলে জানানো হয়েছে ।
শুধু হোটেলই নয়, মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার, সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর এবং শঙ্করপুরে দর্শনীয় স্থানগুলিও খুলতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস।
মন্দারমণি সংলগ্ন দাদনপাত্রবাড় গ্রামের বাসিন্দারা পর্যটন কেন্দ্র চালুতে আপত্তি জানিয়েছে। সব হোটেল খুলে গেলে, বাইরে থেকে পর্যটকেরা এলে করোনা সংক্রমণ বাড়বে— এই আশঙ্কায় রামনগর ২-এর বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন প্রায় ৫০০ গ্রামবাসী। মন্দারমণির হোটেল ব্যবসায়ীরা অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন , জোড়-বিজোড় রীতিতে পর্যটকদের হোটেলের ঘর দেওয়া হবে। সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে জন্য, দূরত্ব বজায় রেখেই পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। মাস্ক ব্যবহার করা, জীবাণুমুক্ত রাখা এবং নিয়মিত পর্যটকদের দেহের তাপমাত্রা মাপার প্রক্রিয়াও চালু থাকবে।
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, “ এরই পাশাপাশি ডায়মণ্ড হারবার, বিষ্ণুপুর, মাইথন, রাঙাবিতান ও ডুয়ার্সের টিলাবাড়ি আপাতত পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এই পাঁচটি জায়গার টুরিস্ট লজগুলি অনলাইনে বুকিংও করতে পারছেন ভ্রমণপিপাসুরা। প্রথম ধাপে এই ৫ টি পর্যটনকেন্দ্র খোলা হয়েছে । আগামীতে আরও পর্যটনকেন্দ্র ধীরে ধীরে খোলা হবে।”

Previous articleকলকাতা পুলিশে করোনা আক্রান্ত ২২০, থানার কাজ চালাতে সমস্যা দেখা দিয়েছে
Next article‘ফিজিক্যাল হিয়ারিং’ -এ অংশ নেবেন না আইনজীবীরা, হাইকোর্ট চালু করা নিয়ে ধন্দ