‘ফিজিক্যাল হিয়ারিং’ -এ অংশ নেবেন না আইনজীবীরা, হাইকোর্ট চালু করা নিয়ে ধন্দ

কলকাতা হাইকোর্টের কাজকর্ম শুরু হওয়ার কথা ১১ জুন থেকে৷ তার মাঝেই বার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়ে দিলো, এজলাসে গিয়ে প্রত্যক্ষ শুনানিতে যোগ দেবেন না আইনজীবীরা৷ ‘ফিজিক্যাল হিয়ারিং’ শুরুর যে সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ নিয়েছে, তাতে সামিল হবেন না অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা । এর ফলে হাইকোর্ট ঘোষণা মতো ১১জুন থেকে চালু হতে পারবে না৷ ফের অনির্দিষ্টকাল বন্ধ হতে চলেছে রাজ্যের শীর্ষ আদালত৷

প্রায় ৩ মাস হাইকোর্টে স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ থাকায় অনেক আইনজীবীই প্রবল আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন। অ্যাসোসিয়েশনের এই ঘোষণায় আইনজীবীদের একাংশ তাই ক্ষুব্ধ। হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি যাচাই করতে
পরীক্ষামূলক ভাবে এজলাসে শুনানির চেষ্টা করছিলো৷ অ্যাসোসিয়েশন তা আটকে দেওয়ায় জুনিয়র আইনজীবীদের একাংশ বেশ হতাশ। বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অশোক ধনধনিয়ার এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ” আমরা আদালত বয়কট করছি না, আমরা শুধু এজলাসে গিয়ে শুনানিতে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। কারণ, কর্তৃপক্ষ কর্মী- অফিসারদের যাতায়াতে পৃথক বাসের, তাঁদের জন্য বিমারও ব্যবস্থা করেছেন। অথচ আমরা তিন আইনজীবী সংগঠন যে দাবি করেছিলাম, তার কিছুই মানা হয়নি।”

লকডাউন শেষ হলে গণপরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার পর হাইকোর্টে স্বাভাবিক কাজকর্ম চালুর করার সিদ্ধান্ত প্রথমে নেওয়া হয়েছিলো৷ সেই সিদ্ধান্তে সায় দিয়ে আইনজীবীরা গত ৩১ মে তাঁদের যৌথ আর্জি পেশ করেন। এরই মধ্যে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে বাসের ব্যবস্থা করে ফেলে হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষ ৷ এই সব বাসে কর্মী- অফিসারদের আজ, মঙ্গলবার থেকে কোর্টে আনার ব্যবস্থা করেছেন কর্তৃপক্ষ।

বার অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্য, আইনজীবীদের সুরক্ষার দিকে কেন নজর দিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ? এই মুহুর্তে করোনা-সংক্রমণ দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে অপরিকল্পিত ভাবে ফিজিক্যাল কোর্ট চালু করার এই সিদ্ধান্ত আইনজীবীদের সঙ্কটে ফেলবে। কোনও সরকারি হাসপাতালে অন্তত ৫টি বেড আইনজীবীদের জন্য নির্দিষ্ট রাখা বা কোনও আইনজীবী করোনা আক্রান্ত হলে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার সুপারিশও করেছিল আইনজীবীদের তিনটি সংগঠন। কিন্তু একটি দাবিও হাইকোর্ট কর্তৃপক্ষ মানেননি বলে আইনজীবীদের অভিযোগ।

এদিকে বিচারপ্রার্থীদের একাংশের বক্তব্য, সুরক্ষা- বিধি মেনে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে হাজির হয়ে শুনানিও করা যায়। হাইকোর্টও সব বেঞ্চ এখনই চালুর কথা বলেনি। চরম আর্থিক সঙ্কটে থাকা জুনিয়র আইনজীবীদের একাংশও এ কথাই বলছেন৷ কিন্তু বার অ্যাসোসিয়েশন তাদের সিদ্ধান্তে অনড়৷

Previous articleলকডাউন শিথিল হতেই ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে রাজ্যের পর্যটনকেন্দ্রগুলি
Next articleকরোনা আক্রান্ত পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী