Friday, August 29, 2025

সুন্দরবনে বাঁচার লড়াই, এবার যাব হিঙ্গলগঞ্জ

Date:

Share post:

পৃথিবী একটা অদ্ভুত কঠিন সময়র মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।পশ্চিমবঙ্গের জন্য সময়টা কঠিনতর হয়ে গেল ২০ মার্চ আমফান ঝড়ের পর থেকে।

আমার মনে হয়না জীবদ্দশাতে কোন পশ্চিমবঙ্গবাসী এরকম ভয়াবহ ঝড়ের তাণ্ডব দেখেছে বলে।যাইহোক পরের দিন থেকে কলকাতার যা দৃশ্য দেখতে থাকলাম তাতে সহজেই অনুমান করতে পারলাম যে সংবাদমাধ্যমে যে অঞ্চলগুলি সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত বলা হচ্ছে তাদের অবস্থা কী হতে পারে।মনে মনে ঠিক করলাম সুন্দরবন বা হিঙ্গলগঞ্জের মানুষের পাশে দাড়াব।পুরো ভাবনাটা গিয়ে বললাম আমাদের বিধায়ক সাধন পান্ডের কাছে। দাদা সঙ্গে সঙ্গে বললেন একদম করো সাথে সমস্ত প্রয়োজনীয় সাহায্যের আশ্বাস।
আলোচনা শুরু করলাম আমাদের ওয়ার্ডের বিশিষ্ট সমাজসেবী প্রশান্ত হাজরার সাথে।ও বলল দাদা করো।আমাদের ঠিক করতে একটু অসুবিধা হচ্ছিল প্রথমে কোথায় যাব সুন্দরবন না হিঙ্গলগঞ্জ।
এরই মধ্যে ৫ জুন প্রশান্তর ফোন দাদা কালকেই সুন্দরবন চলো।আমি প্রথমে রাজি হচ্ছিলাম না কারণ একদিনের মধ্যে প্রস্তুতি নেওয়া একটু কঠিন।ওই জোর দিয়ে বললো চলো সব হয়ে যাবে।এরপরে দায়িত্ব ভাগ করে কাজ শুরু।চাল,মুড়ি,চিড়ে,শাড়ি,নাইটি,গেঞ্জি,ধুতি আর বাচ্চাদের জামাকাপড় সব ব্যবস্থা করা হলো।
সুন্দরবন এর আগে তিনবার যাওয়া।তাই রাস্তাটা জানাই।এর মধ্যে আমার বন্ধু অঞ্জন আর নবমীতারা দুবার ত্রাণ দিয়ে এসেছে।যোগাযোগ করলাম ওদের সাথে।ওরা অনন্ত বলে একটি সুন্দরবনের ছেলের নম্বব় দিল।খুব ভালো ছেলে।কথা বলে জানতে পারলাম ত্রাণ নিয়ে অনেকেই আসছে কিন্তু যেখানে নদীর বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে গেছে সেখানের অবস্থা খুবই খারাপ।ঠিক হলো আমরা সে রকমই ৪টে গ্রামে যাবো।

পরের দিন সকালে ৪টে গাড়ি নিয়ে রওনা হলাম সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে।প্রশান্ত,আমি আর সম্রাট ঘোষ সাথে ২৬ জনের টিম।
বাসন্তী হাইওয়ে ধরে গাড়ি গদখালিতে গিয়ে থামলো।
অনন্ত লঞ্চের ব্যবস্থা করেই রেখেছিল।ত্রান নিয়ে সবাই লঞ্চে উঠলাম।লঞ্চ চলতে শুরু করলো বাবলাতলার উদ্দেশ্যে।লঞ্চ দেখে দুধারের অনেক গ্রামের মানুষ হাত নেড়ে আসার আহ্বান দিতে লাগল।যেহুতু আমাদের গন্তব্য ঠিক তাই প্রথমেই আমরা গেলাম বাবলাতলা।গিয়ে প্রথমেই দেখলাম গ্রামের পুরুষরা বাঁধ মেরামতের কাজ করছে।আমরা ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করলাম।এরপর একে একে সোনাগা,ধুলকি আর বিরাজমনি।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি এই গ্রামগুলোতে ১৫০ থেকে ২০০ পরিবার থাকে।গ্রামের মানুষ ও অনন্তের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম অনেক মানুষের ব্যাংকে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের প্রদান করা টাকা ঢুকতে শুরু করে করেছে।বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন প্রতিনিয়ত এদের পাশে আছে।আর সবচেয়ে বড় কথা এদের ঘুড়ে দাড়ানোর অদম্য জেদ।আর এতে সম্বল করে খুব তাড়াতাড়ি এরা ঘুরে দাড়াবে এই বিশ্বাস আমাদের।
আরও একটা জিনিস লক্ষ্য করার মতো পেটে খিদে আর মাথার ওপর ছাদ না থাকলে করোনা নিয়ে কেউ মাথায় ঘামায় না।
এবার ঘরে ফেরার পালা।গদখালি থেকে যখন গাড়ি ছাড়লাম তখন ঘড়িতে রাত ৭.৩০ টা।
গাড়িতে আস্তে আস্তে মনে মনে ঠিক করলাম খুব তাড়াতাড়ি হিঙ্গলগঞ্জে পৌছতে হবে।
ওখানের মানুষের অবস্থাও হয়তো একইরকম।

spot_img

Related articles

রজতজয়ন্তীতে ডব্লিউবিএনইউজেএসকে উচ্চ প্রশংসা, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ প্রধান বিচারপতির

কলকাতার পশ্চিমবঙ্গ জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয় (ডব্লিউবিএনইউজেএস)-এর উৎকর্ষতা এখন বেঙ্গালুরুর থেকেও এগিয়ে—রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের...

এসএসসি নিয়োগ পরীক্ষা পিছবে না, আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট 

স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেও লাভ হলো না কিছু প্রার্থীর। দেশের...

যাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ! রবিবার টালিগঞ্জ থেকে ক্ষুদিরাম পর্যন্ত বন্ধ মেট্রো 

কলকাতার ব্লু লাইনের যাত্রীদের জন্য দুঃসংবাদ। আগামী রবিবার মহানায়ক উত্তম কুমার (টালিগঞ্জ) থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন পর্যন্ত বন্ধ...

এনএইচএম কর্মীদের বড় উপহার, উৎসবের মুখে বোনাস ঘোষণা রাজ্যের 

উৎসবের দোরগোড়ায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কাজে নিযুক্ত রাজ্যের স্বেচ্ছাসেবক ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের জন্য বড় ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।...