রাজ্যে পুরভোটের আগেই হতে পারে বিধানসভা ভোট

করোনাভাইরাস আঘাত না হানলে এতদিনে কলকাতা-সহ শতাধিক পুরসভার নির্বাচন মিটে যেত৷ শাসক-বিরোধী দু’তরফই এখন পাখির চোখ করতো ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনকে৷

তা হয়নি৷ পুরভোট কবে হবে জানা নেই৷ ওদিকে, ভোট নিয়ে একাধিক জল্পনাও মাথাচাড়া দিয়েছে৷ দুই ভোট একসঙ্গে সেরে ফেলা, আগে পুরসভা পরে বিধানসভা, আগে বিধানসভা পরে পুরসভা, ভোট নিয়ে এ জাতীয় নানারকম কথা ভেসে বেড়াচ্ছে৷

বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলির অনেকেই চাইছে, আগে পুরভোট হোক, তারপর হোক বিধানসভার ভোট৷ এতে বাংলার ‘আওয়াজ’ মেপে নেওয়া যাবে৷ বিধানসভা নির্বাচনের কৌশল সাজাতে সুবিধা হবে বলে তারা মনে করছে৷

তবে এমন নাও হতে পারে৷ রাজ্যে এখনও তুঙ্গে সংক্রমণ৷ করোনার ধাক্কা কমলেও সামাজিক দূরত্ব বিধি-সহ অন্যান্য একাধিক সতর্কতামূলক প্রক্রিয়া আগামী বহুদিন চালু থাকবে৷ স্বাভাবিক ও চালু পদ্ধতিতে ভোটের প্রচার সেক্ষেত্রে অসম্ভব৷ চালু করতে হবে নতুন কোনও উপায়৷ সেই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষে ভোটে যাওয়া যথেষ্টই সমস্যাজনক৷ তার উপর পরপর দু’টি ভোট৷

জুন মাস চলছে৷ রাজ্যে খুব দ্রুত ভোটের পরিবেশ ফিরে আসতেও কমপক্ষে দেড়-দু’মাস৷ আগস্ট- সেপ্টেম্বরে শতাধিক পুরসভার ভোট হলে, নতুন বোর্ডগঠন প্রক্রিয়া মিটতে আরও ২-৩ সপ্তাহ ৷ ততদিনে চলে আসবে পুজো৷ ওদিকে বিধানসভার ভোটের সময়ও চলে আসবে৷
পুরভোট শেষ করার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিধানসভার ভোটে ঝাঁপানো, দলগুলির পক্ষে যথেষ্টই চাপের বিষয়৷

তাই ভাবনা চলছে আগে বিধানসভা ভোট সেরে তারপর বকেয়া পুরভোট করা নিয়ে৷ মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভাগুলিতে ইতিমধ্যেই আইনি পথে প্রশাসক বসিয়ে ‘রেগুলারাইজ’ করা হয়েছে৷ এই পদ্ধতিতে এক বছর কাজ চালাতেই পারে পুরসভাগুলি৷ তাই আগে বিধানসভা ভোট করে ফেলা যায় সহজেই৷

রাজনৈতিক মহলের খবর, বিজেপি চায় পুরভোট আগে হোক৷ রাজ্যে বেশ কিছু পুরসভা এবার তাদের হাতে আসবে বলেই পদ্ম শিবির আশাবাদী ৷ আর সেই ফলের প্রভাব পড়বে বিধানসভা ভোটে৷ তাদের প্রচারের হাতিয়ার হবে ওই সব ফল, এমন ভেবেই ঘর গোছানোর কাজ চালাচ্ছে বিজেপি৷ পাশাপাশি এমনও ভাবছে, পুরভোটে যে সব সদ্য মেয়াদ শেষ হওয়া কাউন্সিলরদের তৃণমূল প্রার্থী করবে না, তাঁদের দলে টেনে, প্রার্থী করে ঘাসফুল শিবিরে ফাটল লাগানো যাবে৷

এই ছকেই কিন্তু ঠাণ্ডা জল পড়তে পারে৷ বিধানসভা ভোটে আগে হলে কিছুটা অসুবিধায় পড়তে পারে বিজেপি৷ দল ভাঙানোর ছক কাজে আসবেনা৷ বিধানসভা ভোটে পরিকাঠামো সাজানোই আছে তৃণমূলের ৷ এই ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়েই আছে বিজেপি৷ বিধানসভা ভোটে পরাস্ত করলে বিজেপি’র মনোবল ভেঙে যাবে৷ ‘আশাহত’ হয়ে দল ছন্নছাড়া হবে৷ পুরভোটে আর গেরুয়া শিবির সেভাবে দাঁত ফোটাতে পারবে না বলেই ধারনা করছে শাসক শিবির৷ এ পথে অগ্রসর হলে দু’টি ভোটেই সুবিধাজনক অবস্থায় থাকতে পারবে৷

এই সব কারনেই রাজনৈতিক মহলের ধারনা, বাংলায় আগে হবে বিধানসভা নির্বাচন, তার পরে হবে বকেয়া পুরভোট৷

Previous articleফের যোগী রাজ্যে দলিতদের উপর নৃশংস আচরণ
Next articleঐতিহাসিক উদ্যোগ: ১৪ জুন  ‘ব্রিগেড চলো’!