
এ অভিমান আপনি রাখবেন কোথায়? তিনি ভারত সেরা। বিশ্বসেরা বললে কি অতিরঞ্জিত হবে? মোটেই না। তাঁর রাজনীতিতে আসাটাই বাংলার মানুষের কাছে একটা অন্য আবেগ। তবু ৬ বছর আগের রাজনীতির মানুষটার মনে চাপা অভিমান। একদিকে ভালবাসা আর অন্যদিকে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার পরেও মর্যাদা না পাওয়াটা আজ তীব্র দংশন করে শরীরে, বিশেষত যখন দেখেন ঘরের লোককে উপেক্ষা করে দাপট বাড়ছে পরিযায়ীদের!

পি সি সরকার জুনিয়র। পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ভারতীয় জনতা পার্টির সেই তারকা, যিনি ৬ বছর আগে নরেন্দ্র মোদির প্রথম নির্বাচনে বারাসত থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু দলে থাকতেই চেয়েছিলেন। সামনের সারিতে থেকে কাজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোথায় পি সি সরকার?
জিজ্ঞাসা করার পর টিপিক্যাল ম্যাজিসিয়ানের হাসিতে বললেন, কেন আছি তো! দিলীপবাবুর সঙ্গে কথা হয়। আলোচনা হয়। পার্টি কোথাও যেতে বললে যাই তো। বিজেপিতে আছি, নরেন্দ্র মোদির “সব কা সাথ সব কা বিকাশ” স্লোগানে পুরোপুরি ভরসা আছে।

প্রদীপদা, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা হচ্ছে নাকি? কালকের লোকজন, যারা আড়াই খানা সিরিয়াল আর তিনটি ছবিতে মুখ দেখিয়েছে, তারাও দলে সুপার স্টার! সেখানে বিশ্বসেরা ম্যজিসিয়ান কোথায়?

পি সি সরকার এবার থমকালেন। তিনিও জানেন, বলটা নিয়ে তাঁর দুর্বল ডিফেন্সে ঢুকে পড়েছি। তাই স্টেজে যেভাবে দর্শকদের বিমোহিত করেন, ভাবলেন এই ভবিকেও ভোলাবেন। কিন্তু উত্তরটা খুব দুর্বল হলো, ধরাও পড়ে গেলেন। বললেন, দলের প্রয়োজন যতটুকু, ততটুকু তো করি। পাল্টা প্রশ্ন, ব্রিগেডে সভা হলে সামনের আসনে, কিংবা বিশিষ্টদের নিয়ে দিল্লির নেতাদের বন্ধ হলে সভা হলে আমন্ত্রণ! জাদুকরের জবাব, দুটো সভা দিয়ে কী প্রমাণিত হয়? দল দরকার হলে ঠিক জায়গায় ব্যবহার করবে। ওটা দলের উপর ছাড়ুন। দিলীপ ঘোষ দারুন সামলাচ্ছেন দল। সাফল্য আসছে।

সেই সাফল্যে খালি নেই পি সি সরকার? ৬ বছর আগে নিজের সেলিব্রিটি স্ট্যাটাস সিন্দুকে রেখে গেরুয়া পতাকা তুলে নিয়েছিলেন। তখন কোথায় কে? তবে এতদিনে বুঝেছেন যত সহজে তাজমহল ভ্যানিশ করা যায় ততটা সহজ নয় দলে ‘দুষ্টুদের’ পরাস্ত করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। আর দুদিনের যোগীরা যতখানি তৈলমর্দন করতে পারবেন, ততখানি তো সম্ভব নয় দেশের সেরা জাদুকরের। চাপা অভিমান বুকে নিয়ে তাই ৭৩ বছরের জাদুকর রবীন্দ্রনাথকে কোট করে বললেন… হোক না কথা, আমি আছি আগের মতোই…
