কেন্দ্রের কাজে অখুশি RSS ! কং-বামের সঙ্গে ধর্মঘটে BMS, কণাদ দাশগুপ্তর কলম

কণাদ দাশগুপ্ত

সঙ্ঘ পরিবার কি ক্রমশই অসন্তুষ্ট হয়ে উঠছে প্রধানমন্ত্রীর কাজকর্মে ? কেন্দ্রের কিছু সিদ্ধান্ত কি একেবারেই পছন্দ করছেনা ? সে কারনেই কি ‘চির-অচ্ছুত’ বাম, কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথভাবে আন্দোলনে নামতেও আপত্তি নেই আরএসএসের ? কেন্দ্রের গৃহীত নীতির প্রতিবাদে বার বার আন্দোলনের পথে কেন আরএসএস নামাচ্ছে তাদের শ্রমিক সংগঠনকে ? আরএসএস যেভাবে দফায় দফায় তাদের শ্রমিক সংগঠন BMS-কে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার ছাড়পত্র দিচ্ছে, তাতে রাজনৈতিক মহলে এই প্রশ্নই বড়ভাবে দেখা দিয়েছে৷

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী যখন বেসরকারি হাতে
কোল-ব্লক তুলে দেওয়ার নিলামের সূচনা করলেন, তখনই আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন BMS, কংগ্রেস ও বাম শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশজুড়ে তিনদিনের খনি-ধর্মঘটের নোটিস দিয়েছে৷ কয়লাখনি বেসরকারিকরণের কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশজুড়ে আগামী ২,৩,৪, জুলাই যৌথভাবে খনি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে আরএসএস পরিচালিত BMS শ্রমিক সংগঠন৷ বাম, কংগ্রেস ও সমাজবাদী দলগুলির শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে মিলিতভাবেই BMS এই খনি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

দিনকয়েক আগে BMS ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ, হিন্দ মজদুর সভা, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি এবং সিটু শীর্ষ নেতারা ভিডিও বৈঠকের মাধ্যমে খনি নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই ধর্মঘটের কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে৷

কয়লা শিল্পে এই ধর্মঘটের কথা ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে৷ পাঁচটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কয়লা শিল্পে দেশ জুড়ে তিন দিনের ধর্মঘট ডাকার কথা জানিয়েও দিয়েছে৷
কয়লা শিল্পে ১০০ শতাংশ বিলগ্নিকরণ ও নিলামের মাধ্যমে ৫০০ কোল ব্লক বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। ৫ দফা দাবি সমেত ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, আগামী ২ জুলাই থেকে ৪ জুলাই- এই ৩ দিন ধর্মঘট হবে। চিঠি পাঠানো হয়েছে কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীকেও। ওই ৫ শ্রমিক সংগঠনের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (BMS), সিটু ( CITU), আইএনটিইউসি (INTUC), এআইটিইউসি ( AITUC) ও হিন্দ মজদুর সভা ( HMS)৷

BMS-এর সর্বভারতীয় নেতা বিকে রায় বলেছেন, ” আজ ১৮ জুন থেকে ৫০টি কোল ব্লক নিলামের কাজ শুরু হয়েছে, পাঁচ ইউনিয়ন এর প্রতিবাদে
কয়লাখনির সদর দপ্তরে বিক্ষোভ করছে। তিন দিনের ধর্মঘটের জন্য নোটিসও পাঠানো হয়েছে আজই৷ ৫ দফা দাবিতে ধর্মঘটের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকেও চিঠি পাঠিয়েছি।’

৫ দফা দাবি প্রসঙ্গে আইএনটিইউসি-র সর্বভারতীয় সম্পাদক
বলেছেন, ‘আমাদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, কমার্শিয়াল মাইনিং করা যাবে না, কোল ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না, CMPDI-কে কোল ইন্ডিয়া থেকে আলাদা করা যাবে না। এছাড়া ঠিকা শ্রমিকদের বেতন ও কর্মীদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও দাবিপত্রে আছে।’

সিটু নেতা ডিডি রামনন্দন বলেছেন, ‘কোনও ভাবে দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদকে এ ভাবে বিক্রি হতে আমরা দেব না। এ জন্যই বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত।’
এর আগে গত ২২ মে BMS দেশের শ্রম আইন যেভাবে কেন্দ্র সংশোধন করেছে, তার প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলো৷

Previous articleএকনজরে বাংলার করোনা আপডেট
Next articleচীনের আগ্রাসন নিয়ে উদাসীন মোদি, প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিক্ষোভ শিবসেনার