গলওয়ানে সেদিন ঠিক কী হয়েছিল? ৩৫০ লাল ফৌজের সঙ্গে ১০০ ভারতীয় সেনার ৩ ঘন্টা লড়াই!

গত ১৫ জুন রাতে গলওয়ানে ঠিক কী হয়েছিল? আগ্নেয়াস্ত্র না থাকা সত্ত্বেও ভারত-চিন সেনার মধ্যে এমন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হল কেন ? নানা জল্পনা, নানা মত থাকলেও সেনা বা সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে , চিনের সেনা গলওয়ান উপত্যকার ওয়াই পয়েন্টে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করেছিল। বিবাদের সূত্রপাত সেটা নিয়েই। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পরিকল্পিত ভাবেই হামলা চালিয়েছিল চিনা সেনা। কারণ, তারা অপেক্ষাকৃত উঁচু অবস্থানে ছিল। ভারতের পক্ষে ছিল ১০০ অফিসার-জওয়ান। চিন জড়ো করেছিল প্রায় ৩৫০ সেনা। সংঘর্ষ স্থায়ী হয়েছিল প্রায় তিন ঘণ্টা।
১৫ জুন সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত গলওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-এ ভারত-চিন সংঘর্ষে ভারতের দিকে বিহার রেজিমেন্টের এক কর্নেল ও ১৯ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়। চিনের দিকেও হতাহত হয় অনেকে। চিন হতাহতের কথা স্বীকার করলেও এখনও সঠিক সংখ্যা জানায়নি। ওই সংঘর্ষের পর থেকেই দু’দেশের সম্পর্কে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে । সর্বদলীয় বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবারই প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেনার তিন বাহিনীকে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। কিন্তু ওই দিন প্রকৃত ঘটনা ঠিক কী হয়েছিল বা কী ভাবে হয়েছিল, তার এখনও স্পষ্ট ছবি পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর একটি প্রতিবেদনে সেটাই উঠে এসেছে । সেনা সূত্র উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে , ওই পিপি-১৪ চিন সেনা দখল নেওয়া থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। সেখান থেকে চিনের সেনা সরাতে ১৫ জুন রাতে পূর্ব লাদাখের শিয়ক ও গলওয়ান নদীর সংযোগস্থলে ওয়াই পয়েন্টে দু’দেশের সামরিক পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। তাতে যোগ দিয়েছিলেন ৩ নম্বর ডিভিশনের কমান্ডার ও অফিসাররা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে ওই পিপি-১৪ থেকে সরে যাবে চিনা সেনা। ১৬ বিহার রেজিমেন্টের উপর দায়িত্বভার বর্তায় ওই পিপি-১৪-এ গিয়ে চিনের সেনাকে সরে যেতে বলার জন্য। সেই অনুযায়ী বিহার রেজিমেন্টের একটি ছোট টহলদারি দলকে ওই পয়েন্টে পাঠানো হয়।
সেনা সরিয়ে ১৪, ১৫ ও ১৭-এ পেট্রোলিং পোস্ট এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা ফেরাতে ফের দু’দেশের সেনা পর্যায়ের বৈঠকের পরিকল্পনা চলছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দু’দেশের লেফেটেন্যান্ট জেনারেল পর্যায়ের বৈঠক হতে পারে ।

Previous article*পরিকল্পনামাফিক আটকানো হয়েছে রথযাত্রা, অভিযোগ পুরীর শঙ্করাচার্যের*
Next articleমোদির মন্তব্য চিনের হাতেই অস্ত্র তুলে দিয়েছে, ক্ষোভ জানালেন মনমোহন