১৯ বছরের আইনি লড়াই, নির্দেশ মিলল ‘স্থায়ী’ চাকরির

টানা ১৯ বছর ধরে লড়াই। অবশেষে মিলল স্বস্তি। চাকরিতে স্থায়ী হতে চলেছেন পূর্ব বর্ধমানের রায়নার হরিপুর জুনিয়র হাইস্কুলের ছ’জন সংগঠক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রায়ে রাজ্য সরকার ও রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, ২০০০ সালের ১ মে থেকে ওই সংগঠক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের চাকরি ‘স্থায়ী’ করতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি নির্দেশ দেন, হরিপুর জুনিয়র হাইস্কুলকেও ওই তারিখ থেকে ‘স্থায়ী অনুমোদন’ দিতে হবে।
বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রায়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন যে, ওই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা এমন একটি প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করে চলেছেন, যে জায়গার শিশুরা অনেক সুযোগ থেকেই বঞ্চিত। কিন্তু পঠনপাঠনের কাজে শিক্ষকেরা কোনও রকম ত্রুটি রাখেননি। প্রশান্তকুমার দাস-সহ ওই ছয় শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের আইনজীবী এক্রামুল বারি বৃহস্পতিবার জানান, ১৯৮১ সাল থেকে তাঁর মক্কেলরা ওই স্কুলের সঙ্গে যুক্ত। সেই সময়ে স্কুলটি ‘সংগঠক স্কুল’ হিসেবে পরিচিত ছিল। ১৯৯৯ সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ স্কুলটিকে ‘নিউ সেট আপ’ হিসেবে চিহ্নিত করে এক বছরের অস্থায়ী অনুমোদন দেয় এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। ‘নিউ সেট আপ’-কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন ওই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। তা খারিজ হয়ে যায়।

তার পরেও ওই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা স্থায়ী চাকরি পাননি বলে অভিযোগ। হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন তাঁরা। তৎকালীন বিচারপতি অশোক দাস অধিকারী বিচারপতি লালার নির্দেশ বহাল রাখেন এবং সেই সঙ্গে নির্দেশ দেন, বিচারপতি লালার নির্দেশ কার্যকর করা না হলে জেলা স্কুল পরিদর্শকের বেতন বন্ধ থাকবে। রাজ্য সরকার বিচারপতি দাস অধিকারীর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ফের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে। ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি দাস অধিকারীর নির্দেশ বহাল রাখে। ওই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অভিযোগ, এর পরে তাঁদের মাত্র এক বছরের বেতন দেওয়া হয়। রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ২০১৪ সালে স্কুলটিকে স্থায়ী অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ১৯৯৯ সাল থেকে সেই অনুমোদনের দাবি জানিয়ে ফের হাইকোর্টে মামলা হয়।
আইনজীবীদের সূত্রে জানা যায়, মামলার দশটি শুনানি হয়েছে। শেষ হয় জানুয়ারিতে। বিচারপতি বুধবার রায় দেন।

Previous articleএকাধিক সম্পর্কের মর্মান্তিক পরিণতি, খুনির কাঠগড়ায় স্ত্রী!
Next articleবিস্ফোরক অভিযোগ দিব্যার, আবু সালেমের সঙ্গে যোগ ছিল সোনুর