ইস্তফার দাবি নিয়ে ঘরে বাইরে প্রচণ্ড চাপে চিনের দালাল ওলি, মুখ বাঁচাতে স্থগিত নেপালি সংসদের বাজেট অধিবেশন

ভারত তাঁকে গদি থেকে সরানোর চক্রান্ত করছে বলে দেশে সহানুভূতির হাওয়া তুলতে গিয়েছিলেন চিনের দালাল কেপি শর্মা ওলি। কিন্তু এরপর সহানুভূতি দূরের কথা, লাগাতার ভারতবিরোধী মন্তব্য করার জন্য তাঁর ইস্তফা দাবি করছেন ওলির নিজের দল এবং নেপালের অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারা। বেজিংয়ের হাতের পুতুল হয়ে খেলতে গিয়ে নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি এখন তাঁর নিজের দেশেই ঘরে বাইরে প্রচণ্ড চাপে। অবস্থা এমনই যে বিরোধীদের তোপ থেকে বাঁচতে স্থগিত করে দিয়েছেন নেপালি সংসদের বাজেট অধিবেশন। তাঁর নিজের দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির সতীর্থদের দাবি, হয় ওলি ভারতের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করুন অথবা ইস্তফা দিন। এই পরিস্থিতিতে গদি বাঁচানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি ক্ষমতাসীন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (এনসিপি)-র সতীর্থদেরও ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা চালাচ্ছেন বেকায়দায় পড়া ওলি। ভারতের বিরুদ্ধে তোলা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এখন বুমেরাং হয়ে ফিরেছে তাঁর কাছে।

এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ওলি নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারি এবং এনসিপি’র কো-চেয়ারপার্সন তথা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহলের (প্রচণ্ড) সঙ্গেও দেখা করেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নেপালি সংসদের বাজেট অধিবেশন মুলতুবি করেছে ওলি সরকার। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কথা বলে সংসদের বাজেট অধিবেশন স্থগিত রাখার জন্য মন্ত্রিসভার প্রস্তাব রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করেছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস এবং মদেশীয় সাংসদদের বিরোধিতা এড়ানোর উদ্দেশ্যেই ওলির এই কৌশল।

শুধু বিরোধীরা নয়, প্রচণ্ড এবং আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাধবকুমার নেপালও ওলির সমালোচনা করেছেন। নেপালের সংবাদপত্র হিমালয়ান টাইমস সূত্রে খবর, এনসিপি’র স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকেও ওলির ভারত বিরোধী মন্তব্য ঘিরে প্রবল বিতর্ক হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য লীলামণি পোখরেল প্রধানমন্ত্রী ওলিকে বলেন, আমাদের একটাই কথা। আপনি অভিযোগ তুলেছেন, ভারত আপনাকে সরানোর ষড়যন্ত্র করছে। হয় সেই অভিযোগ প্রমাণ করুন অথবা ইস্তফা দিন। এনসিপি’র প্রবীণ নেতা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঝালানাথ খনাল সরাসরি ওলির সমালোচনা করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা করার উদ্দেশ্যে বিতর্ক খুঁচিয়ে তুলছেন। জানা গিয়েছে, ৪৪ সদস্যের স্ট্যান্ডিং কমিটির ৩১ জনই ওলির ইস্তফার দাবি সমর্থন করেছেন। প্রচণ্ড ও মাধবকুমার নেপালের বৈঠকে হাজির ১৮ জনের মধ্যে ১৭ জনই ওলির পদত্যাগের দাবি তোলেন। নেপালের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ওলি-অনুগামী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাম বাহাদুর থাপাও যোগ দিয়েছেন দলের ওলি- বিরোধী প্রচণ্ড শিবিরে।

 

Previous articleমুম্বই বিমানবন্দর দুর্নীতিতে মামলা করল সিবিআই
Next articleকরোনা যোদ্ধা চিকিৎসক ও নার্সদের কুর্নিশ ইন্ডিগোর, বিমান যাত্রায় ২৫ শতাংশ ছাড়