কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ ৮টি ফ্লাইওভারের ভবিষ্যৎ নিয়ে যা বললেন ফিরহাদ

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কেএমডিএ’র অধীনে থাকা শহরের পুরনো ব্রিজগুলির জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আজ, শনিবার এমনটাই জানালেন কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক তথা রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট এসে গিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরের হাতে। আপাতত অর্ধেক রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কালীঘাট ব্রিজ, চেতলা ব্রিজ, উল্টোডাঙা ব্রিজ, বিজন সেতু-সহ শহরের ৮টি ব্রিজের মেরামতের প্রয়োজন। যদিও সেই ব্রিজ মেরামতের জন্য রাস্তা বন্ধ করার প্রয়োজন নেই বলেই জানান ফিরহাদ হাকিম। ফলে যান চলাচল স্বাভাবিক রেখেই ব্রিজগুলির মেরামতির কাজ করবে পুর ও নগর উন্নয়ন দফতর।

তিনি আরও বলেন, কোনও কোনও ব্রিজের বয়স প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বছর হয়ে গেছে। তাই সেগুলির দ্রুত মেরামতের প্রয়োজন। চিংড়িঘাটা উড়ালপুল ভেঙে একটি নতুন ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা করছে কেএমডিএ। সেই ব্রিজ চিংড়িঘাটা থেকে সেক্টর ফাইভ হয়ে নিউটাউন পর্যন্ত যাবে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।

পাশাপাশি, বাঘাযতীন উড়ালপুল নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি বলেন, এই ব্রিজ তৈরি হয়েছে অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে। তাই বাঘাযতীন ফ্লাইওভারের নির্মাণকারী সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করে শাস্তি দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। কেএমডিএ আইনে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাঘাযতীনের দুটি ফ্লাইওভারের একটির বয়স হয়েছে ১০ বছর, আর অন্যটির বয়স ২০ বছর। দুটি ফ্লাইওভারের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল ফ্লাইওভার দুটি। এমনকি নিম্নমানের জলও ব্যবহার করা হয়েছে।

ফিরহাদ হাকিম আরও জানিয়েছেন, পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের সিইও-কে বলা হয়েছে এবার থেকে যে সংস্থা এগুলোর টেন্ডার নেবে, তাদেরকে জানাতে হবে কোন কোন সামগ্রী দিয়ে ব্রিজ তৈরি করছে।

পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় কলকাতার কনটেইনমেন্ট জোন বাড়ানো নিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, নতুন করে কনটেইনমেন্ট জোন বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই কলকাতা পুরসভার। কিন্তু যে সমস্ত এলাকায় করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে, সেই সমস্ত এলাকায় নজরদারি আরও বাড়াবে পুরসভা। সেখানকার মানুষ যাতে মাস্ক পড়েন এবং সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলেন, সেটা দেখার জন্য কড়া নজরদারি চলবে প্রশাসনের তরফে।

এক নজরে কলকাতার ৮টি ফ্লাইওভার নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট—

(১) বাঘাযতীন ফ্লাইওভারের প্রচুর গাড়ির চাপ। তাই ভাঙা যাবে না এই ফ্লাইওভার। নীচে লোহার খাঁচা তৈরি করে ফ্লাইওভার পোক্ত করতে হবে।

(২) চিংড়িঘাটা ফ্লাইওভারের নকশা ত্রুটিপূর্ণ। তাই কয়েক বছরের মধ্যে এটি ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে। আপাতত মেরামতি করা হবে। পরে ওই ফ্লাইওভারকে বাড়িয়ে চিংড়িঘাটা থেকে সেক্টর ফাইভ হয়ে নিউটাউন পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে।

(৩) কালীঘাট উড়ালপুলের ৫০ থেকে ৬০ বছর। তাই ভাঙতেই হবে। আপাতত মেরামত করে সারিয়ে তোলা হবে।

(৪) উল্টোডাঙা উড়ালপুব ভাঙতে শুধু মেরামত করলেই হবে।

(৫) শিয়ালদহ উড়ালপুলও ভাঙা হবে না। তবে ট্রামলাইন তুলে দিয়ে তা সারানো হবে। ফ্লাইওভারের নীচ দিয়ে মেরামতি করতে হবে।

(৬) অরবিন্দ সেতু, বিজন সেতু ও বঙ্কিম সেতু আপাতত মেরামত করলেই হবে।

Previous articleএক গাড়ির পরপর ধাক্কায় মহিলার নির্মম পরিণতি!
Next articleচিনকে উচিত শিক্ষা দিতে বিধ্বংসী ইজরায়েলি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম আনতে পারে ভারত