Wednesday, December 24, 2025

অরূপ-মলয়কে কার্যালয়ে আটকে তুমুল বিক্ষোভ জলপাইগুড়ি তৃণমূলের

Date:

Share post:

উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের অস্বস্তি কিছুতেই কাটছে না ৷

দিনদুয়েক আগে কোচবিহারে দলীয় সভা চলাকালীন ঘটে তুমুল গোষ্ঠীকোন্দলের ঘটনা৷ আর বুধবার আরও ‘বড়’ ঘটনা জলপাইগুড়িতে।

এদিন শুধু বিক্ষোভ দেখানো নয়, দুই মন্ত্রীকে কার্যত আটকে রেখেই বেনজির বিক্ষোভ হয়েছে জলপাইগুড়ি তৃণমূলের জেলা দফতরে৷ দলীয় কার্যালয়ে ছিলেন তিন মন্ত্রী৷ তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ শুরু হওয়ামাত্রই
কোনও রকমে মন্ত্রী গৌতম দেব জেলা দফতর থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেও আটকে পড়েন অন্য দুই মন্ত্রী, অরূপ বিশ্বাস এবং মলয় ঘটক। দফতর ঘিরে ওই দুই মন্ত্রীকে আটকে রেখে তৃণমূল কর্মীদের গলায় তখন চড়া স্লোগান, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ। শুভেন্দু অধিকারি জিন্দাবাদ”। “শুভেন্দু অধিকারির নেতৃত্বে ময়নাগুড়ির তৃণমূল কংগ্রেস চলছে চলবে”৷ সমানে চলে তুমুল চিৎকার। দুই গোষ্ঠীর নেতারা একে অন্যকে ঠেলাঠেলি করতে থাকেন৷ সব ঘটনাই বসে থেকে দেখলেন দুই মন্ত্রী৷ মন্ত্রীদের জেলা দফতরে আটকে রেখেই ব্লক স্তরের কমিটি গঠন নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড চলে৷ রাস্তাতেও তখন চলছে মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে স্লোগান৷ শুরু হয়ে যায় অবস্থান বিক্ষোভও। পরিস্থিতি সামাল দিতে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। দৌঁড়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তারাও। কিন্তু তাতেও কাজ হয়না৷ তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূলের পুরোদমে বিক্ষোভ চলে৷

এদিন রাজ্যের তিন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, গৌতম দেব ও মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে প্রায় এক বছর পর তৃণমুলের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন তিন মন্ত্রী।
পরে সাংবাদিক বৈঠক করে সেই কমিটি ঘোষণা করা মাত্রই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে জেলা দফতর। জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ির ব্লক সভাপতি হিসেবে মনোজ রায়ের নাম ঘোষণা হতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ময়নাগুড়ির তৃণমূল নেতা ডালিম রায়ের অনুগামীরা। তাঁরা চিৎকার করে বলতে শুরু করেন, দলে টাকা দিয়ে পদ কেনাবেচা হচ্ছে। এটা তাঁরা মেনে নেবেন না। ডালিম রায়ের গোষ্ঠীর লোকজন বলতে থাকে, “দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মানা হচ্ছে না। যেমন খুশি তেমন দল চলছে। এটা আমরা মেনে নেব না।” তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিধায়ক অনন্ত দেব অধিকারীর বিরুদ্ধেও। ডালিম গোষ্ঠীর বক্তব্য, “এই বিধায়ক দু’দিন আগেও ইনকিলাব জিন্দাবাদ বলতেন। আজ তিনি আরএসএসকে সাহায্য করছেন।” পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যায়৷ তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যাণী বিক্ষোভ সামাল দিতে ব্যর্থ হন।
অরূপ বিশ্বাস অনেক দিন ধরেই দলের তরফে জলপাইগুড়ি জেলার পর্যবেক্ষক। লোকসভা ভোটে জলপাইগুড়িতে হারের পর দলীয় বৈঠকে দিদির ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে৷ তখনই মলয় ঘটককেও পর্যবেক্ষক হিসাবে জুড়ে দেওয়া হয়৷ আর এদিনের ঘটনার পর দলের অন্দরে তাঁর অস্বস্তি বৃদ্ধি পাওয়ারই আশঙ্কা৷

spot_img

Related articles

নতুন তিন বিমান সংস্থা: ইন্ডিগোর একচেটিয়া দখল ভাঙছে দেশের আকাশে 

দেশের আকাশপথে একচেটিয়া দখল ভাঙতে যাচ্ছে। ইন্ডিগোর বিমান বাতিল ও যাত্রী অসুবিধার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন তিনটি সংস্থাকে...

ক্রিসমাস ইভে পর্তুগিজ চার্চে সকলের মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা মুখ্যমন্ত্রীর

ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এই মতাদর্শে বিশ্বাসী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যতটা শ্রদ্ধা ও গুরুত্বের...

শালবনিতে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হুগলিতে ওয়্যারহাউস! সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার 

কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে...

ডিরেক্টরেট স্তরের কর্মীদের জন্য কমন ক্যাডার গঠন, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়

রাজ্য সরকার এবার সচিবালয়ের কর্মীদের মতোই ডিরেক্টরেট স্তরের কর্মীদের জন্য কমন ক্যাডার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা...