আজকাল: সম্পাদকের কলমের দুমাসেই সত্যমের বিদায় কেন?

এই তো কদিন আগে।

মাত্র 8 মে 2020।
আজকাল পত্রিকা সংক্রান্ত জটিলতায় সম্পাদক অশোক দাশগুপ্ত হঠাৎ বিশেষ কলম ধরলেন চেয়ারম্যান সত্যম রায়চৌধুরীর সমর্থনে। বুঝিয়ে দিলেন ( বোঝানোর দরকার পড়ল) সত্যমের বিরুদ্ধে যে কর্মীরা সরব, তার পিছনে তিনি নেই। এতটাই জরুরি পরিস্থিতি যে সম্পাদককে কলম লিখতে হল।

যাই হোক সেই কলমে সত্যম রায়চৌধুরীর বিস্তর প্রশংসা করে অশোক দাশগুপ্ত লিখলেন: ” গত কয়েকবছরে সংস্থার জন্য তিনি অনেক করেছেন, করছেন, বিশ্বাস করি অভিষ্যতেও করবেন।”
সত্যমকে সমর্থনের প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন,” হ্যাঁ, করছি।আজকাল পরিবারের সদস্য হিসেবে সেটা ন্যূনতম কর্তব্য। যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন সত্যম রায়চৌধুরীর পাশে থাকব।”

 

এতবড় কথা! তবু, দু’মাস, মাত্র দুমাসের মাথায় খবর, তিতিবিরক্ত সত্যম আজকালের সব শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন। বিপুল ক্ষতি মেনেই। কাগজের অধিকার ছেড়েছেন। এতদিনের লগ্নির কারণে হাতে রেখেছেন নামমাত্র অনলাইন সংস্করণ ও পুজোবার্ষিকীসহ ম্যাগাজিনদুটি। নাকের বদলে নরুণ।

প্রশ্ন হল, অশোক দাশগুপ্তর অত বড় ভাষণ ( নেপথ্য নয়) সত্ত্বেও সত্যমবাবুকে সরে যেতে হল কেন?
সত্যমের শেয়ার নিলেন অশোক রায় ও কল্যাণ সরকার। এক্ষেত্রে ভগীরথ প্রদীপ দাশগুপ্ত। তিনিও নতুন বোর্ডে আসবেন। বস্তুত অশোক দাশগুপ্তর থেকে বেশি লাগাম থাকবে এই দ্বিতীয় দাশগুপ্তর হাতে। কিন্তু আজকালে যেভাবে যুগে যুগে মালিক বা সাহায্যকারীরা সাহায্য করেও পরে বিপদে পড়েছেন এবং কোনো এক রহস্যময়তায় সঙ্কট কাটেনি, এবার নতুন দুই মালিকও যে মধুচন্দ্রিমা পর্বের পরেও ভবিষ্যতে হাসিমুখে থাকবেন, তার কোনো গ্যারান্টি এখন কেউ দিতে পারবেন না।

এদিকে প্রশ্ন উঠেছে ইউনিয়নের আন্দোলন এবং কোনো কোনো ব্যক্তির ভূমিকা নিয়ে। নতুন মালিকদের সামনে দাবিদাওয়া কী থাকবে? নাকি সত্যমবিদায়ের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছেন কেউ কেউ?

সূত্রের খবর, আপাতত লকডাউনপর্বের অচলাবস্থায় কাগজ খুব কম ছাপা হচ্ছে। ফলে নিউজপ্রিন্ট খরচ কম। অথচ সরকারি বিজ্ঞাপন ঢালাও। ফলে এখন ক্ষতির চাপ কম। তবে কৌতূহল হল কর্মীছাঁটাই ও বেতন সঙ্কোচন নিয়ে। প্রায় শতাধিক কর্মী কমানোর পরিকল্পনা ছিল। এখন নতুন মালিকরা সেই পথে যাবেন কিনা, সেটাও স্পষ্ট নয়। অশোক রায়, কল্যাণ সরকাররা প্রথমেই কোনো বাড়তি চাপ কর্মীদের উপর দেবেন না বলেই সকলের আশা।

তবে, একটি প্রশ্ন ঘুরছে সর্বত্র, যুগে যুগে সরকারপন্থী অবস্থান নিয়ে এত বিজ্ঞাপন এবং বারবার এত ব্যক্তির এত টাকা সাহায্য পেলেও আজকালের সঙ্কট কাটে না কেন? কাগজ কেন কমতেই থাকে? সত্যম সরে যাওয়ার পর এই প্রশ্ন আরও তীব্রতর হয়েছে।

একটি মহলের বক্তব্য, অশোক দাশগুপ্তর কলমের শব্দগুলির কী দাম থাকল, যখন দুমাসেই তা ভিত্তিহীন বলে প্রমাণিত হল।
যিনি আজীবন সত্যমের পাশে থাকার সকৃতজ্ঞ অঙ্গীকার করলেন, তিনি চেয়ারে রয়ে গেলেন আর সত্যমকে শেয়ার বিক্রি করে দিতে হল !

একটি সূত্রের সরস মন্তব্য,” ভুলে যাবেন না, আজকাল একসময়ে খেলার জন্যে বিখ্যাত ছিল। খেলাই চলছে।”

কর্মীরা আপাতত নতুন মালিকদের মুখের দিকে অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে।

 

Previous articleকন্টেনমেন্ট জোনে শ্যুটিং! হচ্ছেটা কী
Next articleএনকাউন্টারের আগে মিডিয়াকে আটকে দেওয়া হলো সাক্ষী হঠাতে?