ফিরহাদ হাকিমের বিধায়ক পদ কেন খারিজ হবে না, জানতে চায় নির্বাচন কমিশন

একুশের ভোটের মুখে চরম অস্বস্তিতে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম৷

দিনকয়েক আগেই তিনি ই-মেলের মাধ্যমে নারদা-কাণ্ডে ED- র নোটিশ পেয়েছেন৷ নারদ-ঘুষ মামলার তদন্তে ED ফিরহাদকে নোটিশ পাঠিয়ে বলেছেন, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে তাঁকে গত ৭ বছরের নিজস্ব আয়-ব্যয়ের হিসাব পেশ করতে হবে৷

দিনকয়েক কাটতে না কাটতেই ফের আর এক ফতোয়া, এবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের৷ কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের ‘চেয়ারম্যান’-এর ‘লাভজনক’ পদে বসার জন্য কেন ফিরহাদ হাকিমের বিধায়ক পদ খারিজ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার কাছে রিপোর্ট তলব করেছে নির্বাচন কমিশন।
প্রসঙ্গত, গত ৬ মে পুরসচিব সুব্রত গুপ্ত এক নির্দেশে জানান, পুরসভার মেয়র এবং মেয়র- ইন- কাউন্সিলের সমস্ত কাজ, দায়িত্ব অবিকল পালন করবে মেয়াদ শেষের পর তৈরি হওয়া প্রশাসনিক বোর্ড। এর অর্থ, নির্বাচিত পুর বোর্ডের সমস্ত সুবিধা নবগঠিত পুর প্রশাসনিক বোর্ডও ভোগ করতে পারে। এর পর গত ৮ মে কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব নেন বন্দরের বিধায়ক তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এ প্রসঙ্গে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, ‘‘আমি পুরসভার থেকে কোনও বেতন, ভাতা, গাড়ি-সহ কোনও সুবিধাই নিই না। লাভ নিলে তবেই না লাভজনক পদের প্রশ্ন উঠবে। বিজেপি এবং রাজ্যপাল রাজভবনে বসে এ সব কূটকচালি করছেন। আমাকে আদালত এই কাজ চালাতে অনুমতি দিয়েছে।’’
ওদিকে নির্বাচন কমিশনের আইন অধিকর্তা বিজয়কুমার পাণ্ডে গত ১ জুলাই বাংলার মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে ‘বিধায়ক’ ফিরহাদ সংক্রান্ত ৯ দফা প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন। যদিও নবান্ন এখনও কমিশনকে জবাব দেয়নি। কমিশন সূত্রের খবর, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সতীশ তিওয়ারি গত ২২ জুন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে চিঠিতে লেখেন, রাজ্যপালের কাছে দু’টি অভিযোগপত্র জমা পড়েছে৷ তাতে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিধায়ক পদ খারিজের বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। সংবিধানের ১৯১(১)(ক) ধারা মেনে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ নিয়ে আর্জি জানানো হয়েছে। তাই সংবিধানের ১৯২(২) ধারা মেনে রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনের মতামত জানতে চান। রাজ্যের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত ভোট কমিশন এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তই নিতে পারবে না৷ সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশন রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে জানতে চেয়েছে, কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে ফিরহাদ হাকিম বেতন, ভাতা পান কি না, কী ধরনের কাজ তাঁকে করতে হয়, কবে তাঁর পদে বসার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে, পুর প্রশাসকের পদটি রাজ্য সরকারের অধীনে কি না, নিয়োগ পত্র, নিয়োগকর্তা, নিয়োগ পদ্ধতির বিস্তারিত বিবরণ, পুর-প্রশাসক হিসেবে কী কী আনুসঙ্গিক সুবিধা বিধায়ক ভোগ করেন এবং লাভজনক পদ সংক্রান্ত আইনে কলকাতার পুর প্রশাসকের চেয়ারম্যান পদটি ‘এক্সজেমশন’ বা ছাড়ের তালিকায় রয়েছে কি না।