কেন ছেড়েছেন অভিনয়? অকপটে জানালেন অনেক কথা ‘আশিকি’-র হিরো রাহুল…

৯০ এর দশকে সুপার ডুপার হিট ছবি । আজও যে ছবির গান এক কথায় সবার প্রিয়। যে ছবির গান গেয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন কুমার শানু। সেই ‘ আশিকি’ ছবির হিরো রাহুল রায় নিঃশব্দে বিদায় নিয়েছিলেন অভিনয় জগৎ থেকে। কেউ জানতে পারেনি এর কারণ । এবার তিনি জানলেন।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র পরিবারের জন্য অভিনয় ছেড়ে ছিলেন রাহুল রায় ! সুপারহিট ‘আশিকি’ ছবির নায়কের দাবি, তিনি বিয়ের পরে পরিবারকে সময় দেবেন বলে অভিনয় ছেড়ে দেন।

দীপক ও ইন্দিরা রায়ের ছেলে রাহুলের জন্ম ১৯৬৮ সালের ৯ ফেব্রয়ারি। হিমাচল প্রদেশের নামী প্রতিষ্ঠান লরেন্স স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র রাহুলের অভিনয়কে কেরিয়ার করার পরিকল্পনা ছিল না।তাঁর দাবি, কিছুটা আচমকাই হিসেবের বাইরে তিনি পা রাখেন অভিনয়ের কেরিয়ারে। রাহুলের মামা কোরি ওয়ালিয়া ছিলেন বলিউড এবং ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত নাম।

রাহুলের বাড়িতে পরিচালক মহেশ ভট্ট গিয়েছিলেন সম্পূর্ণ অন্য কারণে। সেখানে রাহুলকে দেখে তাঁর পছন্দ হয়। মহেশের প্রস্তাবে ‘আশিকি’ ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হন রাহুল।

১৯৯০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘আশিকি’ ছিল মহেশ ভট্টের নিজের জীবনেরই আখ্যান। তাঁর এবং লোরেন ব্রাইটের দুরন্ত প্রেমপর্ব ছিল ‘আশিকি’-র গল্প। পরবর্তী সময়ে লোরেন ব্রাইটকে বিয়ে করেন মহেশ। নাম পাল্টে লোরেন হন কিরণ।ব্লকবাস্টার ‘আশিকি’-র নায়ক নায়িকা দু’জনেই অকালে হারিয়ে যান বলিউড থেকে। নায়িকা অনু আগরওয়াল এবং নায়ক রাহুল রায়, দু’জনের কেউই পরে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেননি ইন্ডাস্ট্রিতে।

রাহুল যে সুযোগ পাননি, তা নয়। ইন্ডাস্ট্রির প্রচলিত ধারা মেনে ‘আশিকি’-র সাফল্য তাঁর কাছে প্রচুর সুযোগ পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু কোনওটাই তাঁর সফল কেরিয়ারের জন্য ফলদায়ক হয়নি।

১৯৯২ সালে মহেশ ভট্টের পরিচালনায় ‘জুনুন’ও রাহুলের কেরিয়ারের অন্যতম সেরা কাজ। কিন্তু কার্যত এই দু’টি সিনেমার পরেই তাঁর কেরিয়ার গ্রাফ নীচের দিকে নামতে থাকে।তার পরেও ‘দিলওয়ালে কভি না হারে’, ‘প্যায়ার কা সায়া’-র মতো কিছু মাঝারি হিট ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রাহুল। পাশাপাশি, ‘গজব তামাশা’, ‘ভূকম্প’, ‘গুমরাহ’, ‘গেম’, ‘ফির তেরি কহানি ইয়াদ আয়ি’, ‘ধর্ম কর্ম’, ‘মেঘা’, ‘নসিব’, ‘ফির কভি’, ‘অচানক’-সহ তাঁর বেশির ভাগ ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে।রাহুলের আরও বেশ কয়েকটি ছবির কাজ আটকে যায় মাঝপথে। ‘দিলোঁ কা রিশতা’, ‘আয়ুধ’, ‘প্রেমাভিষেক’, ‘তু নে মেরে দিল লে লিয়া’, ‘দিল দিয়া চোরি চোরি’, ‘ফির কভি’, ‘জম জব দিল মিলেঁ’-সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করার কথা ছিল রাহুলের। বিভিন্ন কারণে এই ছবিগুলি অসমাপ্ত থেকে যায়।

 

এক দশক পরে ২০১১ নাগাদ বলিউডে ফিরে এসে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেন রাহুল। কিন্তু এ যাত্রায় আশিকি-জুনুনের ম্যাজিক অধরাই থেকে যায়। ২০০০ সালে তিনি বিয়ে করেন মডেল রাজলক্ষ্মী খানভিলকরকে। সমীর সোনির প্রাক্তন স্ত্রী রাজলক্ষ্মীর এটা ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। ক্যাডবেরির বিজ্ঞাপনের চেনা মুখ রাজলক্ষ্মীর প্রথম বিয়ে স্থায়ী হয়েছিল মাত্র সাত মাস। রাহলের মতে, বলিউডে নায়কের ভূমিকায় থেকে পরিবারের সঙ্গে কোয়ালিটি সময় কাটানো কার্যত অসম্ভব। তিনি দুই নৌকায় পা দিয়ে চলতে চাননি। ফলে কেরিয়ারকে রেখে বেছে নিয়েছিলেন পরিবারকেই। বিয়ের পরে কেরিয়ারের টানে রাজলক্ষ্মী পাড়ি দেন অস্ট্রেলিয়া। রাহুলও তাঁর সঙ্গে চলে যান প্রবাসে। ফলে সেই অবস্থায় বলিউডে অভিনয় করে যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভবও ছিল না। এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন রাহুল রায়।কিন্তু যে পরিবারের জন্য এত আত্মত্যাগ রাহুলের, সেটাও ভেঙে গেল ২০১৪-এ। ১৪ বছরের দাম্পত্য শেষ করে বিচ্ছেদ হয়ে যায় রাহুল-রাজলক্ষ্মীর। ২০১৯-এ মুক্তি পেয়েছে তাঁর ছবি ‘ক্যাবারে’। চলতি বছর তাঁর অভিনীত ‘আগরা’ মুক্তি পাওয়ার কথা।

Previous articleইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলতে একবছর সময় নিক: কুশল
Next articleপ্রয়াত হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কেলি প্রেস্টন