দীর্ঘ ১৩ বছরের অপেক্ষার অবসান, ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অসামরিক পারমানবিক চুক্তি

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে অসামরিক পারমানবিক চুক্তি ভারতের। দীর্ঘ ১৩ বছরের জল্পনার অবসান ঘটল গত মঙ্গলবার। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই আলোচনারও ইতি ঘটল এদিন। আজ একটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই চুক্তির সম্বন্ধে বিস্তারিত জানানো হবে। ফলে এই চুক্তিতে কি লাভ পেতে চলেছে ভারত, তা জানতে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে গোটা দেশ।
এদিনের এই বৈঠকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।জানা যাচ্ছে, এই চুক্তির মাধ্যমে দুই দেশই আণবিক শক্তির ক্ষেত্রে একে অপরকে নির্দ্বিধায় সাহায্য করতে পারবে। অন্যদিকে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের হয়ে কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল এবং কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডাঁর লিয়েন উপস্থিত থাকবেন।
যদিও এই চুক্তিটি প্রথমদিকে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে হওয়ার কথা ছিল। ২০০৮ সালে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে সাক্ষরও করে দুই দেশের প্রতিনিধিরা। কিন্তু সেই সময় পরমানু আইনে কিছু পরিবর্তন হয়। নয়া নিয়ম অনুযায়ী, পরমানুর কারণে কোনওরকমের দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার ও ক্ষতিপূরণ নিতে হবে মার্কিন মুলুককেই। কারণ তারাই যে ইউরেনিয়াম সরবরাহ করার দায়িত্ব নেবে। এই আইন আসার পরেই তৎকালিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ পিছিয়ে আসেন এই চুক্তি থেকে। আর তখনই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এগিয়ে আসে। যদিও এই চুক্তির সফল হওয়ার পেছনে সিংহভাগ কৃতিত্ব প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের, এমনই মত বিশেষজ্ঞদের ।
উভয়পক্ষের মধ্যে ইতিমধ্যেই ‘framework agreement’ হয়ে গেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন হলো ২৭ টি দেশের মিলিত গোষ্ঠী। সম্প্রতি ব্রেক্সিট এই ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮-১৯ সালে ভারতের সঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রায় ১১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়। এরমধ্যে ভারত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে প্রায় ৫৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করে। এবার এই অসামরিক চুক্তির মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক আরও বেশি দৃঢ় হবে বলেই মত কূটনীতিকদের।
সূত্র থেকে জানা গেছে, অসামরিক চুক্তি ছাড়াও উভয় পক্ষের মধ্যে এদিনের বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ, আন্তর্জাতিক জলসীমা সুরক্ষা, মুক্তবাণিজ্য সহ একাধিক বিষয়ে আগামী পাঁচ বছরে উভয় পক্ষের তরফ থেকে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে সে সম্বন্ধে আলোচনা হবে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ইউরোপিয়ান পুলিশ এবং সিবিআই এর মধ্যে যৌথ উদ্যোগে লড়াই সম্পর্কেও চুক্তি হতে পারে।

Previous articleমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরেই আত্মঘাতী ছাত্রী!
Next articleদুর্গাপুজো নিয়ে কমিটিগুলিকে কী গাইড লাইন দিল ফোরাম?