দুর্গাপুজো নিয়ে কমিটিগুলিকে কী গাইড লাইন দিল ফোরাম?

বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে, আগামী দুর্গাপুজো সম্পর্কে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের কার্যকারি কমিটি গত ১০ ই জুলাই এক সভায় মিলিত হয়ে পুজো সুষ্ঠ ভাবে করার জন্য কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে|যদিও করোনা পরিস্থিতি দিন দিন উদ্বেগজনক হওয়ার কারণে আগামী ৩ মাস পরের পরিস্থিতির কথা আমাদের এখনই অনুমান করা সম্ভব নয়, তবু পুজো হবেই এই আশা নিয়ে আমরা নিম্নোক্ত প্রস্তাব গুলি আপনাদের অবগতির জন্য রাখলাম …

১) বর্তমান পরিস্হিতিতে আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য যথাসম্ভব বাজেট কমিয়ে একটি স্নিগ্ধ সুন্দর সুস্থরুচির পুজো দর্শকদের উপহার দেওয়া কারণ অতিরিক্ত আড়ম্বর করলে বা বৈভব প্রদর্শন করলে এই বছর সমস্ত দেশের কাছে কলকাতার দুর্গাপুজা নিয়ে খুব একটা ভালো বার্তা যাবেনা বরং কিছু জনহিতকর কাজের নিদর্শন রাখতে পারলে ভাল ।
২)প্যান্ডেল ও প্রতিমার উচ্চতা খুব বেশী না করাই ভালো কারণ আমাদের চেস্টা করতে হবে রাজ্য সরকার বা পুরসভা কে অনুরোধ করে তাঁদের সাহায্যে প্রতিদিন অন্ততঃ একবার পুরো প্যান্ডেল ও প্রতিমা sanatize করার ।সেক্ষেত্রে উচ্চতা বেশী হলে sanitize করতে সমস্যা হবে
৩) শিল্পীদের ও কর্মকর্তাদের অনুরোধ করতে হবে তাঁরা এমন একটি মণ্ডপ তৈরী করেন যাতে দর্শক বাইরে থেকেই ভালোভাবে প্রতিমা দর্শণ করতে পারেন মণ্ডপে না ঢুকেই | অর্থাৎ প্যান্ডেলের ভেতরের কাজ যথাসম্ভব কম করে বাইরের দিকে কাজের চাকচিক্য বেশী করলে দর্শক সেইদিকেই বেশী দৃষ্টি দেবেন ভিতরে না ঢুকে |
৪/ প্যান্ডেল এর প্রবেশ পথ ব্যারিকেড দিয়ে যতটা সম্ভব দীর্ঘ করতে হবে, তাতে প্রতিটি মানুষকে অনেকটা পথ অতিক্রম করতে হবে, এর ফলে স্বাভাবিক ভাবেই Social distancing বাড়বে ।
৫) ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবকদের খেয়াল রাখতে হবে যাতে প্রতিটা দর্শক যাতে মাস্ক পরে ঢোকেন ও প্রবেশ করার সময় তাঁদের হাতে sanitizer দেওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে । মূল প্রবেশ পথে একাধিক থার্মাল গান রাখতে হবে। জ্বর নিয়ে কোন ব্যক্তিকে প্যান্ডেলে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।
৬/ মূল প্রবেশ পথে ও প্যান্ডেলের ভিতর দায়িত্বরত প্রতিটি স্বেচ্ছাসেবকের সঠিক ভাবে নিরপত্তার ব্যাবস্থা করতে হবে।যাতে তারা কোনভাবেই সংক্রমিত না হয়ে পড়ে।
৭) প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে দফায় দফার লোক ঢোকাতে হবে একসঙ্গে বহু লোক প্রবেশ করতে দেওয়া যাবেনা।এক বারে ২৫ জনের বেশী লোক প্যান্ডেলে প্রবেশ করানো যাবে না।
৮) ফোরামের পক্ষ থেকেও পুজোর আগে থেকে প্রচার করা হবে যাতে দর্শক সারাদিন ধরে ঠাকুর দেখে। শুধু রাত্রের কয়েকঘন্টা ঠাকুর দেখার জন্যে বেছে না নেয়।
প্রয়োজনে আলোর চাকচিক্য এবছর একটু কম করতে হবে যাতে দর্শক ওই আলোর চমক দেখার জন্যে শুধুমাত্র রাত্রে ভীড় না করেন ।
৯) যাদের পক্ষে সম্ভব তাঁরা ট্যাংকার এনে sanitizer স্প্রে করতে পারেন দর্শকদের লাইনের ওপর সপ্তমী অষ্টমী নবমীর দিনগুলোতে ।
১০) যে সব পুজোয় স্টল হয় সেখানে ফাঁক দিয়ে দিয়ে জায়গা ছেড়ে ষ্টল বানাতে হবে যাতে দুটি স্টলের মধ্যে 3/4 ফুট ফাঁক থাকে
১১) স্টলের লোকেদের রেডিমেড খাবার বিক্রীর জন্য জোর দিতে হবে যাতে স্টলে লোক বসিয়ে না খাওয়ানো হয়।
১২/ ঠাকুরের ভোগ নিবেদনে গোটা ফল দিতে হবে।
১৩/ পুষ্পাঞ্জলি, সন্ধি পুজো, সিঁদুর খেলার সময় Social distancing মেনে চলতে হবে। ঐ সময়েও একসাথে বেশী মানুষকে প্যান্ডেলে ঢোকানো যাবে না।
১৪/ প্রতিযোগিতার বিচারের সময় বিশেষ করে ফাইনাল রাউনডে ১৫ জনের বেশী বিচারক বা এজেন্সির টিমকে প্যান্ডেলের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। প্রতিটি বিচারকে প্যান্ডেলে থার্মাল স্ক্রিনিং করে ঢুকতে হবে। জ্বর নিয়ে প্যান্ডেলে ঢোকা যাবে না।
১৫/পুরস্কার এজেন্সি দের অনুরোধ করা কেবলমাত্র স্বল্প বাজেটে নান্দনিক উৎকর্ষতা কেই পুরস্কারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া
১৬। প্যান্ডেল করার সময় বা লাইট লাগাবার সময় লেবারদের স্বাস্থ্য সঠিক রাখার দায়িত্ব পুজো কমিটিকেই নিতে হবে। তার জন্য থার্মাল চেকিং থেকে বিভিন্ন প্রতিষেধক পুজো কমিটিকে নিশ্চিত করতে হবে।
১৭/ প্রশাসনকে কুমোরটুলিকে সঠিক ভাবে Sanitising করার জন্য অনুরোধ করতে হবে। ঠাকুর আনার সময় এক সাথে বেশী কর্মকর্তা কুমারটুলিতে না যাওয়াই উচিৎ।

ধন্যবাদান্তে,
কাজল সরকার (সভাপতি)
শাশ্বত বসু (সাধারণ সম্পাদক)
ফোরাম ফর দুর্গোৎসব

Previous articleদীর্ঘ ১৩ বছরের অপেক্ষার অবসান, ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অসামরিক পারমানবিক চুক্তি
Next articleরাজ্যে করোনায় মৃত ১ হাজার, আক্রান্ত ৩৫ হাজারের দোরগোড়ায়