হার নিশ্চিত বুঝে মনিকতলা-মামলা প্রত্যাহারের আবেদন কল্যাণের, খুলল ভোটের রাস্তা

সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার পরে পরাজয় নিশ্চিত বুঝে মানিকতলা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন কল্যাণ চৌবের (Kalyan Chowbay)। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মানিকতলা আসনের বিজেপি (BJP) প্রার্থী কল্যাণ। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে কল্যাণের আইনজীবী মামলা প্রত্যাহার করার আবেদন জানান। হার নিশ্চিত জেনেই এই সিদ্ধান্ত বলে কটাক্ষ তৃণমূলের (TMC)। দীর্ঘদিন আটকে থাকা মানিকতলা উপনির্বাচনের রাস্তা এর ফলে খুলল বলে মত রাজনৈতিক মহলের। তবে লোকসভা ভোটের সঙ্গেই উপনির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা।

২০২১ সালে মানিকতলা বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সাধন পাণ্ডের কাছে পরাজিত হন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ। এরপরই তিনি ভোটের ফল নিয়ে বিস্তর অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাধন পাণ্ডে (Sadhan Pandey) প্রয়াত হন। কিন্তু কল্যাণের সেই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় এই আসনে এখনও উপনির্বাচন হয়নি। মানিকতলার তিন বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) যান। মামলাকারীদের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে জানান, জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১৫১-এ ধারা অনুযায়ী কোনও আসন ছ মাসের বেশি শূন্য থাকতে পারে না, উপনির্বাচন করানো বাধ্যতামূলক। অভিযোগ, কল্যাণের দীর্ঘ গড়িমসিতেই বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে এই মামলার শুনানি। শুক্রবার, এই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি পিএস নরসিংহের বেঞ্চে। কল্যাণের কীর্তিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা। সুপ্রিম কোর্ট কল্যাণকে শো-কজ নোটিশ পাঠিয়ে জানতে চায় কেন তাঁকে ফেডারেশন সভাপতি বা ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সচিব ও কোষাধ্যক্ষর পদ থেকে সরানো হবে না? কেন না, এইসব পদ থেকে সরলেই তিনি বিজেপি নেতা হিসেবে মামলায় মন দিতে পারবেন। ইতিমধ্যে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগও উঠেছে কল্যাণের বিরুদ্ধে।

এরপরে সোমবার হাই কোর্টে ‘ইলেকশন পিটিশন’ প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন জানান কল্যাণ চৌবে (Kalyan Chowbay) ব্যক্তিগত কারণে ওই সিদ্ধান্ত বলে জানান কল্যাণের আইনজীবী। যদিও বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ওই আবেদন মঞ্জুর করেননি। তিনি জানান, ৯ মে মামলার পরবর্তী শুনানিতে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

এরপরে বিজেপি নেতা কল্যাণকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। স্যোশাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘‘অকারণে প্রচুর সময় নষ্টের পর আদালতে পরাজয় নিশ্চিত জেনে মানিকতলা কেন্দ্র নিয়ে মামলা তুলে নিলেন বিজেপির কল্যাণ চৌবে। অকারণে প্রচুর সময় নষ্টের পর আদালতে পরাজয় নিশ্চিত জেনে মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে মামলা তুলে নিলেন বিজেপির কল্যাণ চৌবে।
এই কেন্দ্রে ২০২১ সালে জিতেছিলেন তৃণমূলের সাধন পাণ্ডে। তিনি প্রয়াত হন।
তবে এই লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই মানিকতলা উপনির্বাচনের সম্ভাবনা কম। কার্যত নেই। কারণ, কল্যাণের চিঠি নিয়ে হাইকোর্টের শুনানি ৯ মে। যদি সেদিনই ফয়সালা হয়, তাহলেও গেজেট নোটিফিকেশনসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়ায় কিছু সময় লাগবে। অন্যদিকে উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে ভোট ১ জুন, মনোনয়ন পেশ শুরু ৭মে থেকে। ফলে সময়ের কারণেই লোকসভা ভোট ও উপনির্বাচন একসঙ্গে কার্যত অসম্ভব। অনুমান, লোকসভার পর্ব মিটলে যে কটি উপনির্বাচন হবে, তার সঙ্গে মানিকতলার ভোট হতে পারে।’’

কল্যাণ মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ফলে দীর্ঘদিন আটকে থাকা মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচন দ্রুত হবে বলে আশায় এলাকার বাসিন্দারা।




Previous articleকোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে! মামলার জেরে আদালতে স্বীকার করল প্রস্তুতকারী সংস্থা
Next articleমালদহে জোড়া সভা মমতার, সঙ্গে রোড-শো, পাথরপ্রতিমায় অভিষেক