Wednesday, November 12, 2025

এনআরএস হাসপাতাল থেকে করোনা পজিটিভ দুই প্রসূতি হাইজ্যাক ঘিরে চাঞ্চল্য

Date:

এনআরএস হাসপাতালের কোভিড -১৯ টেস্ট রিপোর্টে দু’জনেরই ‘পজিটিভ’ আসে। বছর ৪৫ এর প্রসূতির বাড়ি আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকায়। ট্যাংরার বাসিন্দার বয়স সতেরো। কোভিড পজিটিভ হওয়ায় দু’জনকেই এনআরএস থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা । কিন্তু তাদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার দুই প্রসূতিকে তাঁদের বাড়ির লোক অ্যাম্বুল্যান্স থেকে জোর জবরদস্তি নামিয়ে নেয়। গোটা ঘটনার ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে পুলিশ কর্মীরা তা দেখেও না দেখার ভান করে থাকলেন। এমনই অভিযোগ করেছেন এনআরএসের আধিকারিকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, পুলিশকে বারবার অনুরোধ করেও টলানো যায়নি।
বরং পরিবারের লোকজন পেশির আস্ফালন দেখিয়েই প্রসূতিদের অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামিয়ে নেন। পিপিই খুলে ছুঁড়ে ফেলে দেন মাটিতে। প্রসূতিদের আটকানোর চেষ্টা করলে মারধর ও ভাঙচুরের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় এনআরএসের আধিকারিকরাও আর সাহস দেখান নি। এনআরএসের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডা. শান্তনু সেন জানিয়েছেন, “দু’জন রোগীই ‘রেফারাল ডিসচার্জ’ হয়ে গিয়েছিলেন এনআরএস থেকে। মেডিক্যাল কলেজ যাওয়ার পথে গেটের সামনে অ্যাম্বুল্যান্স আটকে এই ঘটনা ঘটান রোগীর পরিজনরা। স্বভাবতই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশ আউটপোস্টে খবর দেয়। তারা পুলিশকে মনে করিয়ে দেয়, ট্রানজিটে থাকা ওই রোগী কিন্তু পুলিশের হেফাজতে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। গায়ের জোরে রোগীকে বাড়ি নিয়ে যান পরিজনরা।”
এনআরএসের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এনআরএস-এর ডার্মাটোলজি ওয়ার্ডে ‘রেফারেল ডিসচার্জ’ হওয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১৮ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে। মেডিক্যালে যেতে না চাওয়ায় ওই দুই রোগীকে সেই ওয়ার্ডে পাঠানোর প্রস্তাবও দেওয়া হলেও, কোনও কথাই কানে তোলেননি পরিজনরা। বাধ্য হয়েই রেফারেল ডিসচার্জ বাতিল করে শুধু ‘লিভ এগেনস্ট মেডিক্যাল অ্যাডভাইস’ বা ‘লামা’ বন্ডে সই করিয়ে নেওয়া হয়।
অদ্ভুতভাবে অভিযুক্তদের পরিজনরা জানান, তাদের রোগী এনআরএসে ছিল না। পরিজনেরা যাই বলুন না কেন, ওই করোনা পজিটিভদের থেকে সংক্রমণ ছড়ালে তার দায় কে নেবে, ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন উঠেছে । এবারও কি তাই হবে? পুলিশ কত দ্রুত ব্যবস্থা নেয় সেই দিকেই তাকিয়ে আছেন স্থানীয়রা । ভয়ে আতঙ্কে ভুগছেন তারা ।
হাসপাতাল সূত্রে
জানা গিয়েছে, ওই দুই প্রসূতির ১৪ জুলাই লালারস নেওয়া হয়েছিল পরীক্ষার জন্য। ১৬ জুলাই রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসে। তার পরই এনআরএসের গাইনি ওয়ার্ড থেকে রোগীদের মেডিক্যালে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়। নিয়ম মেনেই সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে পিপিই পরিয়ে প্রসূতিদের তোলা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেই ঘটে প্রসূতি হাইজ্যাক করার ঘটনা। প্রসূতিদের বাড়ির লোকজন করোনা পজিটিভ মানতে চাননি। তাঁরা মেডিক্যালের বদলে রোগীদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য গোঁ ধরে বসেন। এনআরএসের এক আধিকারিক দুই রোগীর পরিবারকেই বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। গোটা বিষয়টি গাইনি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিক্যাল অফিসার নোট দিয়ে জানিয়েছেন এনআরএসের সুপার ডা. করবী বড়ালকে। সেই নোটে বলা হয়েছে, গাইনির আইসোলেশন ওয়ার্ডের ১৩ ও ৪০ নম্বর বেডে থাকা রোগী কোভিড পজিটিভ হয়েছে। রোগীর পরিবার ‘লিভ এগেনস্ট মেডিক্যাল অ্যাডভাইস’ দিয়ে রোগীদের বাড়ি নিয়ে চলে গিয়েছে। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতর কত দ্রুত ব্যবস্থা নেয় সেই দিকেই তাকিয়ে সবাই ।

Related articles

‘হাঁটি হাঁটি পা পা’-র ট্রেলার-পোস্টার লঞ্চে ‘বাবা-মেয়ে’র রসায়নে চিরঞ্জিৎ-রুক্মিণী

অর্ণব মিদ্যার ছবি 'হাঁটি হাঁটি পা পা'-র ট্রেলার ও পোস্টার লঞ্চের জমজমাট অনুষ্ঠান হল ফ্লোটেলে। বৃদ্ধ বাবা ও...

লক্ষ্য ২০২৭! ২৫ নভেম্বর শুরু ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ

ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে। রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস...

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...

সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা বাড়াতে চালু হচ্ছে জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা! নির্দেশিকা জারি নবান্নের 

সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও তদারকিতে আরও স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নবান্নের নির্দেশে এবার থেকে রাজ্যের...
Exit mobile version