Saturday, December 13, 2025

সংঘাত তুঙ্গে: মুখে-চোখে যাই বলুন, দিল্লি থেকে জোর ধাক্কা খেয়েই ফিরেছেন মুকুল

Date:

Share post:

লক্ষ্য বাংলা দখল। লক্ষ্য নবান্ন। লক্ষ্য একুশের ভোট। লক্ষ্য তৃণমূলের বিনাশ। আর সেই লক্ষ্যেই দিল্লি অভিযান। দিল্লি অভিযান বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ ব্রিগেডের। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতি, নির্বাচনী প্রস্তুতি এবং আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য রাজধানী শহর দিল্লিতে সপ্তাহব্যাপী বৈঠক চলছে বিজেপির। দলের সর্বভারতীয় সহকারী সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ এবং পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক মুকুল ঘনিষ্ঠ কৈলাস বিজয়বর্গীয়ই বৈঠক ডেকেছেন। তবে এই বিশেষ বৈঠকে কাদের ডাকা হবে বা হবে না, কারা থাকবেন বা থাকবেন না, সে সিদ্ধান্ত শুরু থেকেই রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নিজের হাতে রাখতে চাইছিলেন বলে সংশ্লিষ্ট মহলের খবর। আর সেখান থেকেই পরিস্থিতি জটিল ও গরম হতে শুরু করে। আর শেষ পর্যন্ত তা দিলীপ ঘোষ এবং মুকুল রায়ের মতানৈক্যর জেরে কার্যত
সঙ্ঘাতের চেহারা নেয় বলেই দিল্লির খবর।

বিজেপির একটি বিশ্বস্ত ও জোরালো সোর্স জানাচ্ছে, গত বুধবার প্রথম দিনের বৈঠকে দিলীপ ঘোষ শিবিরের তৈরি রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট পেশ করেছিলেন শিব প্রকাশ। তাতে বাংলায় বিজেপির প্রায় ১৯০টি আসন পাওয়ার সম্ভাবনার আভাস ছিল। কিন্তু মুকুল সংশয় প্রকাশ করে ভরা সভায় সেই তথ্য কার্যত উড়িয়ে দেন। রাজ্যজুড়ে যতই মিটিং-মিছিল হোক কিংবা গেরুয়া শিবিরের একটা হইহই-রমরমা ব্যাপার চলুক, বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলায় বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতা যুক্তি-তথ্য সহকারে তুলে ধরেন মুকুল। আর তাতেই ক্ষেপে লাল দিলীপ ঘোষ শিবির। সবমিলিয়ে বৈঠকের মধ্যেই যুক্তি-পাল্টা যুক্তির লড়াইয়ে শুরু হয় বাদানুবাদ। মতানৈক্য থেকে ধীরে ধীরে তা চরম সংঘাতের রূপ নেয়। বাড়ে তিক্ততা। বিজেপির অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, মুকুল শিবির দিলীপের বিরুদ্ধে রাজ্যের সংগঠন “কুক্ষিগত” করতে চাইছে বলে শীর্ষ নেতৃত্বকে নালিশ জানিয়েছে।

এদিকে প্রথমদিনের বৈঠক শেষে দিল্লি নেতৃত্বকে মুকুল সাফ জানিয়ে দেন, পরের বৈঠকগুলিতে তিনি থাকবেন না। যথারীতি শনিবার চোখের ইনফেকশনের তত্ত্ব তুলে ধরে কালো চশমা পড়ে কলকাতায় ফেরেন মুকুল। বিমানবন্দরে নেমে জানান, একান্তই ব্যক্তিগত ও চোখের ইঞ্জেকশনের জন্য। বাকি সব দ্বন্দ্ব মিডিয়ার তৈরি। অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষ তার আগেই বৈঠকে মুকুলের গরহাজিরা নিয়ে করোনা আতঙ্কে মুকুল দূরে দূরে থাকছেন মন্তব্য করে বাজার গরম করে দেন।

তবে মুকুল কলকাতায় ফিরে তাঁর এই প্রত্যাবর্তন নিয়ে যাই বলুন না কেন, রাজ্য বিজেপির অন্দরে অস্বস্তি স্পষ্ট। ৬, মুরলিধর সেন লেনের হেভিওয়েটদের মন্তব্য থেকেই জল্পনা আরও স্বচ্ছতা পাচ্ছে। দিলীপ-মুকুল বিতর্ককে নস্যাৎ করার চেষ্টা তো তাঁরা করেছেনই না, বরং দলের প্রায় প্রত্যেকেই অস্বস্তিকর প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন!

spot_img

Related articles

মুম্বইয়ে মেসির অপেক্ষায় এবার করিনা

মেসিকাণ্ডে বিক্ষুব্ধ কলকাতার দর্শক। চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় আজ স্টেডিয়ামে। এরপরেই কলকাতা ছেড়ে মেসি হায়দরাবাদের উদ্দেশে রওনা...

বিধানসভা ভোটের আগে সমন্বয় বৈঠক, কড়া বার্তা মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের

ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি যে অনেক আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে, তারই স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলল শুক্রবার। কলকাতার উইলিয়ামসন মেগর...

লোক আদালত: সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর, প্রত্যেকের জন্য সময়োচিত সমাধান-সহায়তার সুব্যবস্থা

লোক আদালত বন্ধুত্বপূর্ণ ও ঘরোয়া মঞ্চ- যেখানে বিরোধ বিবাদের মাধ্যমে নয় বরং সহমতের ভিত্তিতে সমাধান করা হয়। ভারতজুড়ে...

উদ্যোক্তাদেরই কোর্টেই বল ঠেলল এআইএফএফ-আইএফএ, যুবভারতীতে আইএসএল নিয়ে সংশয়!

ফুটবলের মক্কায় নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা। মেসি(Messi) ইভেন্টে চূড়ান্ত অব্যবস্থা। ঘটনার পরই ফেডারেশন, আইএফএ-র পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে দায় ঠেলা...