Thursday, August 21, 2025

বুধবার জাতীয় শিক্ষানীতি প্রয়োগে সবুজ সংকেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। আর এই শিক্ষানীতির খসড়া প্রকাশ্যে আসতেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। স্কুল শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষায় একাধিক বদল আনা হয়েছে। তা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা। ডিজিটাল ডিভাইড থেকে বেসরকারিকরণের পথ খুলে দেওয়া হলো বলে মত অধ্যাপকদের।

নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সমিতি সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসু বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই এই নতুন শিক্ষানীতি স্পষ্ট নয়। ৩৪ বছর পর শিক্ষানীতির বদল হলো, কিন্তু সেখানে নতুন কিছু নেই।” তাঁর বক্তব্য, “একজন মানুষ কেমন হবে তার ভিত তৈরি করে স্কুল শিক্ষা। এখানে মানুষ তৈরি করার ফর্মুলা নেই।” ত্রি ভাষায় সংস্কৃত ভাষার অন্তর্ভুক্তিকে তিনি ভালো সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন। তবে তাঁর মতে এই শিক্ষানীতিতে ইংরেজি শিক্ষা সম্পর্কে কোনও সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। স্কুল স্তর থেকে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তি করানোর বদলে আরও বিচ্যুতির দিকে ঠেলে দেবে মত পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকারের। তিনি বলেন, “স্কুল শিক্ষার পরিকাঠামো ১০+২ বদলে ৫+৩+৩+৪ করা হয়েছে। তাতে মোট স্কুল শিক্ষার সময় লাগবে ১৫ বছর। এই দীর্ঘ সময় ধরে পড়ুয়ারা স্কুল শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকবে এই নিশ্চয়তা কম।” তাঁর সংখ্যা এই ব্যবস্থায় স্কুল ছুটের সংখ্যা বাড়বে। পাশাপাশি তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়াকে প্রতিদিনের ‘ টিচিং লার্নিং’ পদ্ধতিতে আনা চূড়ান্ত অবৈজ্ঞানিক বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “স্নাতক স্তরে সময় বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ল।” নতুন শিক্ষানীতি কে ডিজিটাল লার্নিং এর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে দেবাশীষ সরকার বলেন, “কম্পিউটার ব্যবহার করে শিক্ষার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই দেশে ৯-১১ শতাংশ মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করে। ফলে ডিজিটাল ডিভাইড তৈরি হবে।”

নতুন এই শিক্ষানীতি বেসরকারিকরণের পথ প্রশস্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সভাপতি শুভোদয় দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ” নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির ছত্রে ছত্রে বেসরকারিকরণ এর দিক খোলা রাখা হয়েছে। এটা যথেষ্ট উদ্বেগের। মধ্যবিত্ত, গরিব ঘরের থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরা সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়বে এই জাতীয় শিক্ষানীতির জন্য। মহামারি আবহে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে অনেকেই। আমরা অনলাইন শিক্ষার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছি। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি বদলে ফেলা হলো।” কেন্দ্রীয় সরকার কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় স্বশাসনের অধিকার দেওয়ার কথা বলেছে। এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, ” এই নিয়মের অর্থ শিক্ষা থেকে হাত তুলে নিতে চাইছে সরকার।”

Related articles

গান-কবিতায় সংসদে সরব তৃণমূল! বয়কট রাজ্যসভার চা-চক্র

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদ উত্তাল হল বাংলা গান, কবিতা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে। সংসদের অন্দরে যেমন কালাকানুন, এসআইআর, ভাষাসন্ত্রাসের...

নওশাদ-সহ আইএসএফ সমর্থকদের জামিন দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত

ধর্মতলার কর্মসূচির নামে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা। বুধবার গ্রেফতার করা হয় ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে (Naushad Siddiqui)। বৃহস্পতিবার নওশাদ-সহ...

নোবেল খুঁজতে ব্যর্থ CBI, রাজ্য পুলিশ উদ্ধার করল বুলার পদ্মশ্রী: পুলিশও পদক পাক চান সাঁতারু

হুগলির হিন্দমোটরে সাঁতারু বুলা চৌধুরীর বাড়ি থেকে চুরি যাওয়া পদক অবশেষে উদ্ধার করল রাজ্য পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে...

মেট্রো রেল প্রকল্পের উদ্বোধনের আগে তৃণমূলকে নিশানা মোদির, পাল্টা ধুয়ে দিলেন কুণাল

রাজ্যে কয়েকটি মেট্রো রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এ-নিয়ে বৃহস্পতিবারই তিনি এক্স হ্যান্ডলে...
Exit mobile version