রাজ্য রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন। ৭৮ বছর বয়সে চলে গেলেন সোমেন মিত্র। অবসান একটি যুগের। বুধবার গভীর রাতে দক্ষিণ কলকাতার নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হলো। দিন সাতেক আগে কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন পেসমেকার বদলের জন্য। সেই সময় তাঁর রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রাও বেশি ছিল। ডায়ালিসিসও হচ্ছিল। মাঝে মধ্যেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। বুধবার তিনি শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন, নার্সিংহোমে হাঁটেনও। রাতের খাবারও খান। কিন্তু ভোর রাতে (১.৫০ মিনিটে) হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সে ধাক্কা আর সামলাতে পারেননি।
কংগ্রেস রাজনীতিতে আমহার্স্ট স্ট্রিটের ‘ছোড়দা’ বলে পরিচিত ছিলেন সোমেন মিত্র। কেন্দ্রের রেলমন্ত্রী গণিখান চৌধুরীর সঙ্গে ছিল অসম্ভব ভালো সম্পর্ক। কলকাতার শিয়ালদহ বিধানসভা কেন্দ্র যা এখন লুপ্ত, এখান থেকে তিনি সাতবার জিতে এসেছেন। ২০০৭-২০০৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস তৈরি করেন। ২০০৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। কিন্তু ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে ফের ফেরেন কংগ্রেসে।
নয়ের দশকে তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রর সঙ্গে মতভেদ এবং নির্বাচনে লড়াইয়ের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দল ছেড়েছিলেন। এরপর ১৯৯৮ -এর ভোটে কংগ্রেসের খারাপ ফলের দায় নিয়ে তিনি প্রদেশ সভাপতির পদ ছেড়ে দেন। এরপর ২০১৮ সালে ফের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে ফুল পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। যোগাযোগ রাখছিলেন অধীর চৌধুরীও। রাত থেকেই আসতে থাকেন কংগ্রেস নেতারা। রাতেই খবর যায় স্ত্রী শিখা মিত্র ও পুত্র রোহনের কাছে। তাঁরা হাসপাতালে আসেন। ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। সোমেনবাবুর অভিন্ন সঙ্গী বাদলদা বাক্যহারা। প্রদেশ সভাপতির দেহ হাসপাতাল থেকে তাঁর দেহ যাবে বিধানভবনে। সেখান থেকে বিধানসভা হয়ে তাঁর বাসভবন লোয়ার রডন স্ট্রিটে যাবে। সেখান থেকে শিয়ালদহ হয়ে তাঁর অফিস এবং আমহার্স্ট স্ট্রিটের পুরানো বাড়ি হয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে নিমতলা মহাশ্মশানে।
WBPCC President Somen Mitra has breathed his last, a short while ago. As we struggle to come to terms with this immense loss, all our prayers and thoughts are with Dada’s family.
May his soul rest in peace 🙏 pic.twitter.com/6T207fyt2A
— West Bengal Congress (@INCWestBengal) July 29, 2020