৩৪ বছর টানা বিধায়ক থাকার রেকর্ড!

তাঁর অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু বাদল ভট্টাচার্য কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, এই মৃত্যু নিয়ে কী বলব? সোমেন আর আমি ছিলাম সেই কবেকার অভিন্ন হৃদয় বন্ধু। আমাকে ফেলে চলে গেল। ক্রিয়েটিনিনের বিষয়টা দেখতে গিয়ে বুকের সংক্রমণটার বোধহয় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সকলে আসুক। প্রদেশ সভাপতি চলে গিয়েছেন। আমহার্স্ট স্ট্রিটের ছোড়দার সম্মানের সঙ্গে শেষকৃত্য করা উচিত।

সকালে বেলভিউয়ের সামনে তখন ভিড় করে আছেন অসংখ্য কংগ্রেস নেতা-কর্মী। রাতেই বাড়ি থেকে হাসপাতালে এসে স্ত্রী ও পুত্র আকাশ ভাঙা খবরটি শুনেছিলেন। ভোর ৬টা নাগাদ তাঁরা ফিরে গেলেন বাড়িতে। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে দেহ কোথায় কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে, সে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বাড়ি থেকে প্রদেশ কংগ্রেস অফিস, তারপর শিয়ালদহ অফিস, আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাড়ি। বিধানসভায় দেহ নিয়ে যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।

১৯৪১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সোমেন মিত্রর জন্ম। ছাত্র রাজনীতি থেকে রাজ্যব্রাজনীতিতে প্রবেশ। প্রয়াত গণিখান চৌধুরীর শিষ্য বলেই পরিচিত ছিলেন তিনি। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় যে ভোটে জিতে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিলেন, সেই ১৯৭২ সালের ভোটে তিনি প্রথমবার বিধায়ক হন শিয়ালদহ থেকে। টানা ৩৪ বছর ছিলেন বিধায়ক। ১৯৯২ সালে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের বদলে তিনি হন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। টানা ৬ বছর দায়িত্ব পালনের পর ভোটে খারাপ ফলের দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করেন। দলের দায়িত্ব নেন গণিখান চৌধুরী। ২০০৮-এ দলের সঙ্গে মনোমালিন্য। দল ছেড়ে প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস তৈরি করেন। ২০০৯-এর ভোটের আগেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ডায়মন্ডহারবার থেকে সাংসদ। কিন্তু পরে দলনেত্রী মমতার সঙ্গে দূরত্ব বাড়লে সাংসদ থাকাকালীনই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে ফের ২০১৪-র আগে কংগ্রেসে ফেরেন। স্ত্রী শিখা মিত্রও তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন। তিনিও বিধায়ক পদ ছাড়েন। সোমেন আবার প্রদেশ সভাপতি হয়ে ফেরেন ২০১৮ সালে।

Previous articleরাজ্য রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন, চলে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র
Next articleমুকুলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বে সবুজ সঙ্কেত দিলেন দিলীপ, অভিজিৎ ঘোষের কলম