অমিতাভের মুখোশ খুলে দিতে কেন অমর সিং ছুটে বেড়াতেন

অমর সিং। কলকাতার বড়বাজারের অমর সিং থেকে দিল্লির রাজনীতির অলিন্দে গ্রেট ম্যানিপুলেটর। লখনউয়ের ঠাকুর উত্তরপ্রদেশ রাজনীতিতেও ছিলেন সমানভাবে ফ্রন্ট লাইনার। আর নয়ের দশকে তাঁর সঙ্গে বচ্চন পরিবারের সখ্যতা ছিল হিংসা করার মতো। কিন্তু কী আশ্চর্য, যাঁর বাড়িতে তিনি ছিলেন পরিবারের সদস্যর মতো, অভিভাবকের মতো, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গেল চুকে! এমনকী যে অমিতাভ কথায় কথায় ট্যুইট করেন, হাসপাতালের বেডে শুয়ে ট্যুইট করেন, তিনি তাঁর এক সময়ের ‘ছোট ভাই’য়ের মৃত্যুর জন্য একটি শব্দও ব্যয় করলেন না! কেন? কেনই বা অমিতাভের মুখোশ টেনে ছিঁড়ে দেওয়ার জন্য অনেক গল্প জমিয়ে তার লেখকের জন্য ঘুরে বেড়াতেন অমর? কলকাতা থেকে দিল্লি, বহু সংবাদপত্র মালিক, সাংবাদিকের সঙ্গে কেন কথা বলেছিলেন? কেন এই বৈরীতা? কেন মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে হয়ে গিয়েছিল? অমর যখন মরিয়া অমিতাভের ‘সত্যনাশ’ করতে, তখন এক শিল্পপতির পরামর্শে সরে আসেন। আবার সিঙ্গাপুরে হাসপাতালের বেডে শুয়ে অমিতাভের কাছে ট্যুইটে দুঃখপ্রকাশ করে কী সম্পর্কে জোড়া দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন? অমর ঘনিষ্ঠদের দাবি, নয়ের দশকে অমিতাভ প্রায় কপর্দক হওয়ার পর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অমর। জয়াকে এমপি করা থেকে অমিতাভের পাশে দাঁড়ানো, সব ব্যাপারেই পাশে ছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার পর অমরকে এলিমিনেট করার চেষ্টা শুরু করেন বিগ বি। এটা অমর নিতে পারেননি।

অমর ছিলেন মুলায়ম পরিবাররের লোক। সেই পরিবার থেকেও একসময় বিচ্ছিন্ন হতে হয়। মুলায়ম তাঁকে দল থেকে তাড়ান। অমর মনে করতেন নতুন প্রজন্ম অর্থাৎ অখিলেশ এসে তাঁর আর নেতাজির মধ্যে সম্পর্ক খারাপ করেছে। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী-সাংসদ জয়াপ্রদা তাঁকে উপেক্ষা করে বিজেপিতে চলে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছিলেন।

আবার শোনা যায়, অরুণ জেটলির ঘনিষ্ঠ হওয়ায় নরেন্দ্র মোদি তাঁকে সাক্ষাৎ -এর সময় দেননি। কে কে বিড়লার ঘনিষ্ঠ ছিলেন, ধীরে ধীরে দারুন সম্পর্ক গড়ে ওঠে আম্বানি ভাইদের সঙ্গেও। মাধব রাও বেঁচে থাকতে ভাল সম্পর্ক ছিল সিন্ধিয়া পরিবারের সঙ্গে। ছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার বোর্ড সদস্য। কিন্তু মানুষগুলো না থাকায় সম্পর্কের টান আলগা হয়ে যায় কালের নিয়মে। ফলে রাজধানীর ক্ষমতার বৃত্ত থেকে ক্রমশ জায়গা হারাতে থাকেন, অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যান।

ভালবাসতেন কব্জি ডুবিয়ে খেতে। ফিশ ফ্রাই পছন্দের। মোবাইল নয় ডিভিডিতে পুরনো দিনের হিট হিন্দি ছবি বা উত্তম কুমারের ছবি দেখতে ভালবাসতেন। কিন্তু এই মানুষই কেন অমিতাভের অন্দরের কথা প্রকাশ্যে আনতে চেয়েছিলেন, সেটাই আশ্চর্যের। হয়তো কোনও একদিন প্রকাশ্যে আসবে সে সব এক্সক্লুসিভ কথা।

Previous articleতৃণমূল নেতাকে বোমা মেরে কুপিয়ে খুন , উত্তপ্ত বিষ্ণুপুর
Next articleবিধ্বংসী আমফানের পরে রাজ্যকে কেন্দ্রের সাহায্য সামান্য: সোজা বাংলায় জানালেন ডেরেক