মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী এক স্বামীজি! তাহলে কি উত্তর প্রদেশের পথেই এ রাজ্যের বিজেপি?

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কাকে মুখ করে লড়াইয়ে নামবে বঙ্গ বিজেপি? রাজনৈতিক মহলের চর্চায় উঠে আসছে একাধিক নাম। রাজ্য বিজেপির বর্তমান সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে তথাগত রায়ের নাম ঘুরছে। তবে কোনও কোনও মহল থেকে গেরুয়া শিবিরের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে জোরালো ভাবে উঠে আসছে আরও একটি নাম। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ থেকে তাঁর কথা চিন্তাভাবনা চলছে। সত্যি-মিথ্যা জানা নেই, তবে রাজ্য রাজনীতিতে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এক স্বামীজীর নাম। তাহলে কি বাংলার রাজনীতিতে এবার এক স্বামীজির উত্থান? জোরদার জল্পনা কিন্তু শুরু হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের পর আরও এক স্বামীজিকে বাংলার সক্রিয় রাজনীতিতে তুলে আনতে পারে আরএসএস। তিনি স্বামী কৃপাকরানন্দ মহারাজ। যদিও এই স্বামীজী রাজনৈতিক জগতের মানুষ নন। কিন্তু তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা থেকে শুরু করে কৃষ্টি-সংস্কৃতির জুড়িমেলা ভার। রাজনৈতিক পরিচয় না থাকলেও স্বচ্ছভাবমূর্তির স্বামী কৃপাকরানন্দ মহারাজকেই একুশের নির্বাচনের আগে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী প্রজেক্ট করতে পারে আরএসএস। যদিও এটা এখনও সম্পূর্ণরূপে ভাবনা বা আলোচনার স্তরে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

কে এই স্বামী কৃপাকরানন্দ মহারাজ? তাঁর আসল পরিচয় কী?

জানা যাচ্ছে, স্বামী কৃপাকরানন্দ মহারাজের প্রকৃত নাম
দেবতোষ চক্রবর্তী। তিনি এই বাংলারই এক মেধাবী-অসম্ভব প্রতিভাবান ব্যক্তি। মাধ্যমিকে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছিলেন। সপ্তম হয়েছিলেন উচ্চমাধ্যমিকে। তারপরে তিনি মেডিকেল জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ১৭তম স্থান অর্জন করেন এবং এনআরএস মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এরপরে তিনি দিল্লির এইমস থেকে এমডি করেন এবং আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে হার্ট রিসার্চ করতে যান। সেই দেবতোষই আজ কৃপাকরানন্দ মহারাজ।

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী যোগী মহারাজ কৃপাকরানন্দ
একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক, সুবক্তা হওয়ার পাশাপাশি একজন শিল্পী ও গায়ক বলেও জানা যাচ্ছে। তবে রামকৃষ্ণ মঠের আদর্শ, তাঁর নিজের আদর্শের পরিপন্থী হবে এই সিদ্ধান্ত। তাই এই সম্ভাবনা এ রাজ্যে তৈরি হওয়া কঠিন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

বাংলার জনসাধারণকে চমকে দিতে রাজনীতির বাইরের কোনও মানুষকে প্রশাসনিক শীর্ষ পদে বসানোর চেষ্টায় রয়েছে সঙ্ঘ পরিবার। তাই যদি হয়, কৃপাকরানন্দ মহারাজ অন্যতম মুখ হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশন রাজনীতির প্রতি স্পর্শকাতর থেকেছে। তবে এর আগেও রাজনীতিতে তাঁর নাম ভেসে উঠলেও স্বামী কৃপাকরানন্দ নিজেই তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা অস্বীকার করেছিলেন।

ফের একবার রাজনীতিতে তাঁর নাম ভেসে উঠছে। কিন্তু বাংলার রাজনীতিকে এরকম বিস্ময়কর পরিবর্তন কি আদৌ সম্ভব? যদি বিজেপি নেতৃত্ব এই যোগী মহারাজকে সক্রিয় রাজনীতিতে আনতে পারে কিংবা তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিতে রাজি হন, তাহলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির মুখ নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হচ্ছে, তাতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোরদার লড়াইকে সামনে রেখে দলের শীর্ষে উঠে আসতে পারেন রাজনীতিরে বাইরের কেউ। তিনি হলেন স্বামী কৃপাকরানন্দ মহারাজ। এর আগে উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসিয়ে চমক দিয়েছিল। তবে আদিত্যনাথ অনেক আগে থেকে হিন্দি বলয়ের সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে বিজেপির নির্বাচিত সাংসদও ছিলেন তিনি।

Previous articleস্বাধীনতা দিবসের আগের দিন চমক দিতে চলেছেন রুদ্রনীল, কী সেটা?
Next article৭ সেপ্টেম্বর সারাদিন ট্যাক্সি-ক্যাব শূন্য থাকবে কলকাতা