তিন বছর পেরিয়েও রাজ্য বিজেপিতে তাঁর অবস্থান অস্পষ্ট, এবার পদ পেতে মরিয়া মুকুল

তৃণমূলের “সেকেন্ড ইন কম্যান্ড” থেকে বিজেপির নেতা। কিন্তু নয় নয় করে বছর তিনেক পেরিয়ে গেলেও গেরুয়া শিবিরে তাঁর পদ কী, সেটা এখনও অজানা স্বয়ং মুকুল রায়ের কাছে। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এরই মধ্যে পঞ্চায়েত থেকে লোকসভার মতো মেগা নির্বাচন পার করেছেন মুকুল। বিজেপির ফলও বেশ ভাল হয়েছে। কিন্তু মুকুল ছিলেন যে তিমিরে, এখনও সেই তিমিরেই রয়েছেন। পদ তো দূরের কথা, বিজেপি রাজ্য দফতরে নিজের একটা চেম্বার পর্যন্ত পাননি মুকুল।

তাই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে আর নিছকই নামে নয় পদাধিকার বলেও গুরুত্ব পেতে চাইছেন মুকুল রায়। তিনি বিলক্ষণ জানেন, ওজনদার পদ না থাকলে আগামী বিধানসভা ভোটে তাঁর ম্যাজিক দেখানোর কাজ আরও কঠিন হবে। এই অবস্থায় কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার সদস্য হওয়া না হলেও নিদেনপক্ষে মুকুলকে রাজ্যসভার সাংসদ করতে দিল্লিতে তাঁর অনুগামী সাংসদরা কোমর বেঁধে নেমেছেন।

সূত্রের খবর, দিল্লির বেশ কয়েক জন বিজেপি নেতাও জোরকদমে চেষ্টা চালাচ্ছেন মুকুলকে রাজ্যসভার সাংসদ করতে। জানা যাচ্ছে, দুই বাঙালি সাংসদ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছেও ছুটেছিলেন। কারণ, রাজ্যসভার সাংসদ বেণীপ্রসাদ ভার্মার মৃত্যুর পর একটি আসন ফাঁকা হয়েছিল সেখানে। শূন্যস্থানে মুকুলের নামে প্রস্তাব অবশ্য শেষ পর্যন্ত পাত্তা পায়নি। তবে হাল ছাড়েননি মুকুলপন্থীরা। তাঁদের পরবর্তী লক্ষ্য রাজ্যসভার নির্দল সাংসদ প্রয়াত অমর সিংয়ের ফেলে যাওয়া আসন।

নভেম্বরে উত্তরপ্রদেশে ১০টি রাজ্যসভা আসনে নির্বাচন। যোগ হবে অমর সিংয়ের আসনটিও। যোগী-রাজ্যে সংখ্যার বিচারে বিজেপির ৯টি আসন নিশ্চিত। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরের ছেলে নীরজ শেখরকে দু’টি আসনে মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়ে আছে বিজেপির অন্দরে। বাকি আসনগুলিতে কাদের জিতিয়ে আনা হবে, তা চূড়ান্ত করা হবে অক্টোবরে।

বিজেপি সূত্রের খবর, অমর সিংয়ের মৃত্যুর ফলে শূন্য হওয়া রাজ্যসভার আসনটিতে মুকুলের নাম নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বও। সে ক্ষেত্রে মুকুল জিতলে তিনি বছর দু’য়েকের কাছাকাছি রাজ্যসভার সাংসদ থাকবেন। এর মধ্যে বাংলায় বিধানসভার ভোটও হয়ে যাবে। তারপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা।

সেই সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় পদাধিকারী তালিকাতেও মুকুলের নাম তোলার প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছেন দিল্লির কিছু প্রভাবশালী নেতা। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই দলের নতুন কেন্দ্রীয় পদাধিকারীদের তালিকা ঘোষণা করতে পারেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা। সেই তালিকায় মুকুলের নাম সহ-সভাপতি হিসেবে থাকলে বঙ্গ-বিজেপিতে দিলীপ ঘোষের আধিপত্য কিছুটা হলেও ধাক্কা খাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

Previous articleঅভিনব এক রেকর্ড গড়লেন নরেন্দ্র মোদি!
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ