পুরুষ সাম্রাজ্যে প্রবেশ করে নারী স্বাধীনতার পতাকা ওড়ালেন

পাঞ্জাবের হালওয়ারা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে এয়ার ফোর্সের মেডিক্যাল অফিসারদের টিমে হাজির এক তরুণী। সাল ১৯৭১। ভারত পাক যুদ্ধের দামামা বেজেছে সেই সময়। সেনাবাহিনীর অফিসারদের পাশে বেমানান হলেও, নিজের কৃতিত্বে সবার মন জয় করেছিলেন পদ্মাবতী বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি ভারতীয় বায়ুসেনার প্রথম এয়ার ভাইস মার্শাল। আবার এয়ার ফোর্স মেডিক্যালের প্রথম মহিলা অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল। বহু বছর আগেই অবসর নিয়েছেন। তবে তাঁর কৃতিত্বকে স্যালুট জানাই ভারতীয় বায়ুসেনা। চলতি বছর পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে তাঁকে।

১৯৪৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতিতে জন্ম পদ্মাবতীর। বরাবরই মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন বাবা ভি স্বামীনাথন। এদিকে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন পদ্মাবতীর মা। সেই সময় তাঁর মায়ের চিকিৎসা করতেন এক প্রতিবেশী মহিলা ডাক্তার। তাঁরও নাম ছিল পদ্মাবতী। লেডি হার্ডিঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক এস আই পদ্মাবতী। তিনিই ছিলেন পদ্মাবতীর অনুপ্রেরণা।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিরোরি মল কলেজ থেকে পাশ করেন পদ্মাবতী। পুণের আর্মড ফোর্স মেডিক্যাল কলেজের প্রবেশিকায় বসেন তিনি। কিন্তু পারিবারিক কারণে সেবার আর পড়া হলো না। ১৯৬৮ সালে দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় ভর্তি হলেন। পাঁচ বছরের কোর্স শেষে পদ্মাবতী যোগ দিলেন বায়ুসেনা বাহিনীতে।

আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। শুধুমাত্র অধ্যাবসায়ের হাত ধরে উন্নতির সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠেছেন তিনি। বেঙ্গালুরুর এয়ার ফোর্স হাসপাতালে যোগ দেন ইন্টার্ন হিসাবে। সেখানেই পরিচয় হয় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সতীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সেই পরিচয় থেকেই সাত পাকে বাঁধা পড়েন দুজনে। ১৯৭৫ সালে অ্যাভিয়েশন মেডিসিনে স্পেশালাইজেশন করেন পদ্মাবতী। ১৯৭৮ সালে ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজের এন্ট্রান্সেও দারুণ ফল করেন। প্রথম মহিলা হিসেবে এই কোর্সে সফলভাবে উত্তীর্ণ হন। অ্যারোস্পেস মেডিক্যাল সোসাইটির প্রথম মহিলা মেডিক্যাল অফিসার তিনি। ২০০০ সালে ভারতীয় বায়ুসেনা বাহিনীর প্রথম এয়ার মার্শাল হলেন পদ্মাবতী। এরপর এয়ারফোর্স মেডিক্যাল সার্ভিসের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেলও হয়েছিলেন।

Previous article১৫ আগষ্টের সকালেই জঙ্গলমহলে মাওবাদী পোষ্টার, এলাকায় চাঞ্চল্য
Next articleসুশান্তকে বিশেষ স্বীকৃতি দিল ক্যালিফোর্নিয়ার সরকার