BIG BREAKING: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা ধোনির

চিরকালই সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেন তিনি। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। আজ, দেশের ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসে দেশ-বিদেশের অজস্র ভক্ত-অনুরাগীদের হৃদয় ভাঙলেন ভারতের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে চিরতরে বিদায় জানালেন “ক্যাপ্টেন কুল”। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন মাহি।শনিবার সন্ধ্যায় নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে অবসরের কথা ঘোষণা করেন তিনি।

সোশ্যাল মিডিয়া ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ৪ মিনিটের ছোট্ট একটি ভিডিও আপলোড করে ধোনি জানিয়ে দিলেন, “আলবিদা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট”। সেখানে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক লেখেন, “কেরিয়ার জুড়ে আমার প্রতি ভালবাসা এবং সমর্থনের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ৭টা ২৯ থেকে আমাকে অবসর প্রাপ্ত ক্রিকেটার হিসেবে ধরে নিতে পারো।”

টেস্ট ক্রিকেট থেকে আগেই অবসর নিয়েছিলেন। ফলে সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকে তাঁর অবসরের জল্পনা চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। অবশেষে শনিবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।
আর ধোনির অবসরের সঙ্গে সঙ্গেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের গজে উইকেটের সামনে ও পিছনে এক বর্ণময় অধ্যায়ে ইতি পড়ল।

শুধু অবসর ঘোষণা করাই নয়। নিজের জীবনের নানা ক্রিকেটীয় মুহূর্তের ছবি নিয়ে একটি গানও ইনস্টাগ্রামে দিয়েছেন ধোনি। বিখ্যাত “ম্যায় পল দো পল কা শায়ের হু” গানটির সঙ্গে নিজের ক্রিকেটীয় মুহূর্তের ছবি পোস্ট করেছেন ক্যাপ্টেন কুল।

ধোনির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে চির অবসরে ভারতীয় ক্রিকেট এক সুবর্ণ অধ্যায়ের অবসান হলো। ঝাড়খণ্ডের
রাঁচির মেকন কলোনি থেকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড, বিশ্ব ক্রিকেটে ধোনির বর্ণময় কেরিয়ারের বৃত্তটা ঠিক কেমন ছিল?

*ফ্ল্যাশ ব্যাক*

২০০৪ সালের শেষদিকে ভারতীয় দলের বাংলাদেশ সফরে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা শেষ হল করোনার আবহে। দেড় দশকের ক্রিকেটীয় যাত্রাপথ সহজ ছিল না। কিন্তু কঠিন-অসম্ভবকে সহজ-সম্ভব করে নেওয়ার আরেক নাম মহেন্দ্র সিং ধোনি। যিনি ভারতীয় ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক। ধোনির সাফল্যের ঝুলিতে দু-দু’টি বিশ্বকাপ, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। বরাবরই হিসেবের বাইরে তিনি। চেনা ছকে কোনওদিনই তাঁকে ফেলা যায় না। ক্রিকেটের ব্যাকরণকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

*ঈর্ষণীয় পরিসংখ্যান*

ভারতের জার্সিতে ধোনির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ার যে কোনও ক্রিকেটারের কাছেই ঈর্ষার। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের হয়ে ৯০টি টেস্ট, ৩৫০টি একদিনের ম্যাচ এবং ৯৮টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন ধোনি। টেস্টে তাঁর রান ৩৮.০৯ গড়ে ৪,৮৭৬। শতরান ৬টি এবং অর্ধশতরান ৩৩টি। সর্বোচ্চ স্কোর ২২৪। একদিনের আন্তর্জাতিকে ৫০.৫৩ গড়ে তাঁর রান ১০,৭৭৩। শতরান ১০টি এবং অর্ধশতরান ৭৩টি। সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ১৮৩। একদিনের আন্তর্জাতিকে একটি উইকেটও নেন তিনি। টি-২০ ম্যাচে তাঁর রান ১,৬১৭। গড় ৩৭.৬০। অর্ধশতরান দু’টি।

উইকেটকিপার হিসেবে ধোনির রেকর্ড আরও উজ্জ্বল। একের পর এক রেকর্ড। কেমন সেই পরিসংখ্যান? টেস্টে তিনি ক্যাচ নিয়েছেন ২৫৬টি এবং স্টাম্পিং ৩৮টি। একদিনের আন্তর্জাতিকে ৩২১টি ক্যাচ এবং ১২৩টি স্টাম্পিং। আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে ৫৭টি ক্যাচ ও ৩৪টি স্টাম্পিং।

*অধিনায়কত্ব মুন্সিয়ানা*

পরিসংখ্যান দিয়ে ধোনির ক্রিকেটীয় কেরিয়ারকে বিচার করলে তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাঁর “ক্যাপ্টেন কুল” হয়ে ওঠার রসায়ন এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক। ২০০৭ সালে প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালের শেষ ওভারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চাপের মুহূর্তে অখ্যাত যোগীন্দর শর্মার হাতে বল তুলে দেওয়া বা ওয়াংখেড়েতে ব্যাটিং অর্ডার বদল করে চার নম্বরে নেমে নুয়ান কুলশেখরের বলে ছক্কা মেরে দলকে জিতিয়ে ব্যাট ঘোরানো, ধোনির আসল মুন্সিয়ানা তো ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসকেই বদলে দেওয়া। সেই ইতিহাস কোনওদিন মোছা যাবে না। ভারতীয় বৃহৎ মহাসাগরের একটা বড় অংশ জুড়ে চিরকাল লেখা থাকবে মাহির নাম।

Previous article৬০ হাজার কোটির সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ঠিক করে ফেললেন আম্বানি
Next articleBreaking : ধোনির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন সুরেশ রায়না