বিশ্বজুড়ে করোনার করাল থাবা। সংক্রমণ আটকাতে লকডাউন। আর তার জেরে ব্যবসায় মন্দা। এ ছবি গত তিন-চার মাসের। সব ক্ষেত্রেই এর প্রভাব পড়েছে। বাদ যায়নি ফ্যাশন জগৎ। সেখানে কী প্রভাব পড়েছে? আর কীভাবে কাটিয়ে উঠে নতুন দিন দেখা যাবে? এই বিষয়ে আলোচনার আয়োজন করেছিল সিআইআই আইডব্লিউএন।
আলোচনা প্রথমভাগে ছিল হস্তশিল্পের লকডাউনের কী প্রভাব পড়েছে? শুক্রবার, বিকেল পাঁচটায় প্লাটফর্মে এই আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন ‘বিশ্ব বাংলা’র ক্যাটেগরি ম্যানেজার ময়ূখী বসাক, ‘বাইলুম’-এর কর্ণধার মালবিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, গোকুপ ডট কমের ফাউন্ডার শিবা দেবীরেড্ডি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ‘সাশা’-র সিইও রূপা কাপুর মেহতা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সিআইআই আইডব্লিউএন-এর চেয়ারপার্সন সুচরিতা বসু বলেন, কীভাবে লকডাউনের সময় মহিলারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফ্যাশন দুনিয়াতেও প্রচুর মহিলা যুক্ত আছেন, যাঁরা বাড়ি বসে এ কাজ করেন। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতিতে তাঁরাও অনেক ক্ষেত্রে কাজ হারিয়েছেন। আবার একই সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফিরে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন ডিজাইনার ও উইভাররা।
বিশ্ব বাংলার তরফে ময়ূখী বসাক বলেন, প্রাচীন, গ্রামীণ শিল্পের ঐতিহ্যকেই নতুন আঙ্গিকে তুলে আনে বিশ্ববাংলা। প্রচুর কারিগর এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কারিগরদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ময়ূখী জানান, লকডাউনের সময় কোনও কারিগরই কাজ হারাননি। তাঁরা অর্ডারও পেয়েছেন। কিন্তু পরিমাণটা সীমিত ছিল।
বাইলুম-এর মালবিকা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, লকডাউনে অত্যন্ত সাহায্য করেছে অনলাইন প্লাটফর্ম। দীর্ঘদিন ধরেই বাইলুম অনলাইনে তাদের সামগ্রী বিক্রি করছে। কিন্তু এই সময়টা তারা অনেক বেশি পরিমাণে জিনিস অনলাইনে নিয়ে এসেছে।
গোকুপ ডট কমের ফাউন্ডার শিবা দেবীরেড্ডি বলেন, হস্তশিল্পে লকডাউনের প্রভাব পড়েছে। কারণ, কাঁচামাল পেতে অসুবিধা হয়েছে কারিগরদের। এক্ষেত্রে তিনি অনলাইনের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। আলোচনায় এঁরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইএনআইএফডি-র সেন্টার ম্যানেজার অর্ণব রায় বলেন, এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং একটা চ্যালেঞ্জ। সেটাকে অতিক্রম করে নিউ নর্মালে ফিরতে চাইছেন তাঁরা।
পরমা ফ্যাশনের পরমা গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, লকডাউনের গৃহবন্দি জীবনে নিজের পোশাকের পাশাপাশি বাড়ির আসবাবের রূপ বদল করতে চাইছেন অনেকেই। ফলে চাহিদা বাড়ছে বেড কভার, বেডশিট, পিলো কভার, পর্দার মতো গৃহস্থালীর জিনিসের। এস সাহা ওয়ার্কস অমিত্রসূদন সাহার মতে, এই পরিস্থিতিতে শুধু উৎসবের জন্য নয়, সবসময়ের জন্য সাধারণ পোশাকের চাহিদা বাড়ছে।