মহামারির আবহে খুঁটি পুজো দিয়ে শুরু সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি

চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়

বিগত কয়েক বছর ধরেই কলকাতার পুজো কমিটিগুলোর মূল লক্ষ্যই হয়ে উঠেছে মণ্ডপ থেকে মাতৃপ্রতিমায় বিশেষত্বের ছোঁওয়া। তাই নজির গড়তে থিম পুজোর পাশাপাশি সাবেকিপুজো মণ্ডপগুলিও একে অপরকে টক্কর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
এবার করোনার জেরে কুমোরটুলির শিল্পীরা এখনও পর্যন্ত সেভাবে প্রতিমা তৈরির বরাত পাননি। এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার। সজল ঘোষের নেতৃত্বে এক ঝাঁক তরুণ তুর্কী সবার প্রথম কুমোরটুলির শিল্পীকে প্রতিমা তৈরির বরাত দেননি, শিল্পীদের পাশে দাঁড়াতে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
মধ্য কলকাতার নাম করা এই পুজো মণ্ডপে প্রথম থেকেই থাকে নতুনত্বের চমক। যদিও
পুজোয় থিমের লড়াইয়ে যখন কোমর বাঁধেন কলকাতার পুজো উদ্যোক্তারা তখন সেই কঠিন যুদ্ধে না গিয়ে একেবারে অন্য লড়াইয়ে , বরং বলা ভালো কোভিড-১৯ আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে সেরার সেরা ভূমিকা নিয়েছে মধ্য কলকাতার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার।
গত কয়েক বছর ধরে পুজোর সব দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন সজল ঘোষ । আজ রবিবার একেবারে ঘরোয়া পরিবেশে লকডাউনের সমস্ত নিয়মবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠিত হল খুঁটি পুজো। উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি হাজির ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ প্রদীপ ঘোষ, রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায়, রাজ্যের প্রাক্তন সাংসদ-সাংবাদিক কুণাল ঘোষ সহ বিশিষ্টরা।
পুজো কমিটির সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ প্রদীপ ঘোষ জানিয়েছেন, মায়ের পুজো সবরকমের নিয়মবিধি মেনেই হবে। একমাত্র মা পারেন আমাদের এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে, রক্ষা করতে। রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায় বলেন, লকডাউনের নিয়মবিধি ও সরকারি নির্দেশ মেনেই এই পুজো এবারও হবে।আশা করছি সবাই একটু স্বস্তি পাবেন। অন্যতম উদ্যোক্তা
সজল ঘোষ বলেন, পুজো কমিটির পক্ষ থেকে মায়ের কাছে একটাই আবেদন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই করোনা রোগ থেকে সারা বিশ্ববাসীকে মুক্ত করো। কয়েকমাস ধরে শুধু করোনার খবরে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত । মায়ের পুজো যখন শেষ পর্যন্ত হবে তখন সাধারণ মানুষও হাঁপ ছেড়ে বাঁচবেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরাও পুজোর দিনগুলোতে সতর্কতা হিসাবে বাড়তি ব্যবস্থা রাখছি। স্যানিটাইজার, মাস্ক, গ্লাভস, সোশ্যাল ডিসটেন্সিং যাতে মানা হয় সে জন্য সদা সতর্ক থাকব আমরা। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সে জন্যও যেমন বাড়তি সতর্ক আমরা, তেমনি পুজোর দিনগুলোতে মানুষ যাতে একটু আনন্দ পান সেদিকেও আমরা নজর রাখবো।
উদ্যোক্তারা আশাবাদী, কোভিড-কে দূরে সরিয়ে দিয়েই ‘মা দুর্গার আগমন হবে’।এই মহামারির আবহে খুঁটি পুজো সম্পর্কে প্রাক্তন সাংসদ তথ্য সাংবাদিক কুণাল ঘোষ বলেন,‘কলকাতার দুর্গা পুজো এখন একটি শিল্পের রূপ নিয়েছে। এই উৎসবের সঙ্গে অর্থনীতির নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে । এই উৎসবকে কেন্দ্র করে সারাবছরই ব্যস্ত থাকেন শিল্পীরা। কিন্তু প্রস্তুতি শুরু হবার জন্য একটি আনুষ্ঠানিকতা প্রয়োজন। আজ খুঁটি পুজোর মাধ্যমে পুজোর কাজ শুরু হল। অযথা ভয় না পেয়ে সরকারি নিয়মবিধি মেনেই সবাই দুর্গাপুজোতে সামিল হবেন।
উদ্যোক্তাদের দাবি, পরিস্থিতির উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে পুজোর আয়োজন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাই করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পুজোর জন্য সমস্ত নিয়মকানুন মেনে পুজো করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে ৷

Previous articleকেন ৭টা ২৯ মিনিটে অবসরের ঘোষণা ধোনির?
Next articleবিজেপি কর্মী খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত খানাকুল