
স্লোগান ছিল ‘সরকারে নেই, দরকারে আছি।’ কিন্তু এই স্লোগানে যে নেতিবাচক দিক রয়েছে, তা টের পেয়েছে রাজ্যে ৩৪ বছর ক্ষমতায় থাকা সরকারি দল সিপিএম। তাই আগামী নির্বাচনের লক্ষ্যে স্লোগান বদলে হচ্ছে ‘দরকারে পাই, সরকারে চাই।’

১৯৭৮ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার সময় বামফ্রন্ট সরকারের স্লোগান ছিল ‘অন্ধকারের দিন শেষ হোক’। আটের দশকে ‘রক্ত দিয়ে বক্রেশ্বর গড়ছি গড়ব।’ নয়ের দশকে ‘ উন্নততর বামফ্রন্ট।’ তারপর বামফ্রন্টের বিকল্প বামফ্রন্ট, ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ।’ এরপর দুর্গ ভেঙে খানখান ‘বদলা নয় বদল চাই’ স্লোগানের কাছে। ক্রমশ বাম ভোট শীর্ণকায়। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর স্পর্ধা দেখাচ্ছে বামেরা। সরকারে নেই দরকারে আছি, এমন স্লোগানে যে সরকারে আসার ব্যাপারটা ফিকে হয় যাচ্ছে, সেটা বুঝে বামেরা বলছে, আমরা স্বেচ্ছ্বাসেবী সংগঠন নই। রাজনৈতিক দল। মানুষের কাজ করতে চাই, ক্ষমতাতেও আসতে চাই। বিকল্প সরকার গড়তে চাই।
এই লড়াইয়ে স্লোগান যে মানুষের মনের মধ্যে, বুকের মধ্যে দামামা বাজানোয় বড় ভূমিকে নেয় এবং নেবে, তা অতঃপর মস্তিষ্কের নরম অংশে প্রবেশ করেছে সিপিএমের। আর লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকদের খাবার দেওয়া, সমবায় ক্যান্টিন চালানো, মানুষের কাছে ওষুধ, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়ায় সাড়া পাওয়ায় বিধানসভায় এই স্লোগানকে সামনে রেখে এগোতে চাইছে।

আসলে নিউ নর্মাল সময়ে সিপিএম পদে পদে বুঝতে পারছে, আধুনিক প্রচার মাধ্যমগুলিকে কাজে লাগাতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে স্লোগান, মিডিয়া থেকে টেকনোলজিকে ব্যবহার করতে হবে। নইলে পিছিয়ে পড়তে হবে। তবে স্লোগান নিয়ে তীব্র চর্চার মাঝেও বলতে হয়, অন্য রাজনৈতিক দলগুলি যতখানি সিরিয়াস ভঙ্গিতে এই কাজগুলো করছে, বাম এবং কংগ্রেস এখনও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পিছিয়ে রয়েছে। দুটি দলেরই বোঝা উচিত, এই প্রজন্মকে সাম্রাজ্যবাদ আর ধর্মনিরপেক্ষতার বুলি আউড়ে আর প্রভাবিত করা যাবে না!!
