রাঁধুনির কাজ থেকে লাইব্রেরিতে নিয়োগ, বৃদ্ধের আবেদনে সাড়া মুখ্যমন্ত্রীর

প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়তে লড়তে কেটে গিয়েছে জীবনের অধিকাংশ সময়। প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষ হওয়ায় সহ্য করতে হয়েছে অবিচার। নকশাল আন্দোলনে অংশ নেওয়া বছর ৭০এর মনোরঞ্জন ব্যাপারী হয়েছেন লেখক। দুবেলা দুমুঠো জোগাড় করার জন্য হেলেন কেলার বধির বিদ্যালয়ে রাঁধুনি হিসেবে কাজ করেন। নিজের এই অবস্থার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। সাড়াও দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে বৃদ্ধ জানিয়েছিলেন, এই বয়সে এত পরিশ্রমের কাজ আর করতে পারছেন না তিনি। অন্য কোনও কাজের আবেদন জানান বৃদ্ধ। চিঠি পেয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিদ্যানগর জেলা গ্রন্থাগারে নিয়োগ করা হলো মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।

লেখক মনোরঞ্জন হয়ে ওঠার কাহিনী মোটেই সহজ ছিল না।১৯৫৩ সালে মাত্র তিন বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে এদেশের মাটিতে পা রেখেছিলেন তিনি। দিন কেটেছে রিফিউজি ক্যাম্প ও কলোনিতে। প্রথাগত শিক্ষার সুযোগ মেলেনি। রোজগারের তাগিদে ১৪ বছর বয়সে পাড়ি দেন মধ্যভারতের দন্ডকারণ্যে। সেখানেই জড়িয়ে পড়েন নকশাল আন্দোলনে। কলকাতায় ফিরে জীবন কাটে জেলে।

জেল থেকে ছাড়া পেয়ে শহরে রিকশা চালাতে শুরু করেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। রিকশা চালাতে গিয়ে সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর সঙ্গে পরিচয় হয়। মহাশ্বেতাদেবীর অনুপ্রেরণায় লিখে ফেলেন, ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন’। বাংলা অ্যাকাডেমির পুরস্কারপ্রাপ্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। দলিত, সমাজের প্রান্তিক শ্রেণীর মানুষের কথা ফুটে ওঠে পাতায়।

Previous articleসুশান্ত মৃত্যুরহস্যে এবার মাদক যোগ! রিয়ার বিরুদ্ধে মাদক পাচারের অভিযোগ ঘিরে তোলপাড়
Next articleড্রোনের মাধ্যমে ভারতে বিস্ফোরণের ছক পাকিস্তানের! তথ্য ফাঁস গোয়েন্দাদের