মধ্যযুগীয় কায়দায় আক্রমণ করতে বর্শা হাতে এগোতে থাকে লাল ফৌজ! সামনে এল বিস্ফোরক ছবি

ভারতীয় এলাকায় অনুপ্রবেশের আগ্রাসী চেষ্টায় মধ্যযুগীয় কায়দার অস্ত্র হাতে লাল ফৌজ এগিয়ে এসেছিল। প্রতিটি চিনা সেনার হাতে ছিল তীক্ষ্ণ ফলক যুক্ত বর্শা, যা জ্যাভেলিন ছোঁড়ার মত করে ছুঁড়ে মারাত্মক জখম করা যায় প্রতিপক্ষকে, আর কাঁধে ছিল স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় লাল ফৌজ ঠিক যে কায়দায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ তৈরি করে, হুবহু সেই ছকেই ফের ভারতীয় সেনার উপর বিনা প্ররোচনায় হামলার পরিকল্পনা করেছিল পিপলস লিবারেশন আর্মি। এযাত্রা তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। উল্টে, প্রকাশিত ছবিতেই তাদের অপকীর্তির পর্দা ফাঁস।

ঠিক কী হয়েছিল? সোমবার মধ্যরাত থেকে হঠাৎ সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে কাঁদুনি গাওয়া শুরু করে চিন। প্যাংগং সো সংলগ্ন এলাকায় ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। চিনা লাল ফৌজ দাবি করতে থাকে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বা এলএসি অতিক্রম করে চিনের সীমানার দিকে গুলি চালিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।চিনের জিনপিং সরকারের মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ সোমবার গভীর রাতে দাবি করে, শেনপাও পাহাড়ের কাছে প্যাংগং সো-র দক্ষিণ তীরে ভারতীয় সেনা ফের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করেছে। লাল ফৌজের ওয়েস্ট থিয়েটার কম্যান্ডের মুখপাত্রকে এবিষয়ে উদ্ধৃত করেছে চিনের সরকারি সংবাদপত্র। শুধু তাই নয়, তাদের দাবি, নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে ভারত গুলিও চালিয়েছে। চিনের অভিযোগ সামনে আসার পরই ভারতের সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলতে থাকেন, কোনও প্ররোচনা ছাড়া ভারত একতরফা সক্রিয়তা দেখিয়েছে বা গুলি ছুড়েছে এটা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য নয়। এই প্রচার চিনের চিরাচরিত মিথ্যা প্রোপাগান্ডার অংশ। কয়েক ঘণ্টা পর ভারতীয় সেনাও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, ভারতীয় সেনা কোনও গুলি ছোঁড়েনি। বরং ৪৫ বছর পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি চালিয়েছে পিপলস লিবারেশন অার্মি। সোমবার রাতে লাল ফৌজের জনা চল্লিশ সদস্য প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ তীরে রেচিন-লা- রেজাঙ্গ-লা- মুখপারিতে জড়ো হয়ে এলএসি পেরোনোর মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে, এমনকী প্ররোচনা ছড়াতে গুলিও ছুঁড়েছে। তাদের হাতে ছিল বর্শা আর স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। কিন্তু ভারতীয় সেনারা তাদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা সর্বতোভাবে রুখে দিয়েছে। এরপর নিজেদের পাপ ঢাকতে চিন মিথ্যা গল্প বানিয়ে দুনিয়াকে বোকা বানাতে চাইছে।

প্রসঙ্গত, গত মাসের শেষ থেকেই লাদাখের প্যাংগং লেকের দক্ষিণ অংশে চিনের প্ররোচনায় নতুন করে সমস্যা শুরু হয়েছে। ২৯ ও ৩০ অগাস্ট থেকে এর শুরু। যদিও সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ভারতও। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্যাংগং লেকের উত্তরে ফিঙ্গার ৪-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নিজেদের দখলে নিয়েছে ভারতীয় সেনা। তাতে গাত্রদাহ বেড়েছে চিনের। কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওই অঞ্চলটি এখন ভারতের দখলে। দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত বিরোধে ভারত সহিষ্ণুতার নীতি নিয়ে চলেছে। কিন্তু চিনের বেআইনি আগ্রাসনের মুখে ভারতীয় সেনাও এখন প্রতি পদক্ষেপে পাল্টা দিতে ছাড়ছে না। আর এতেই অস্বস্তি ও উষ্মা বাড়ছে বেজিংয়ের। তা ঢাকতে ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুল তথ্য প্রচার করছে জিনপিং সরকার। গুলি ছোঁড়ার মিথ্যাচারও চিনের সেই ভারত বিরোধী প্রোপাগান্ডারই অংশ।

আরও পড়ুন- কৌশলী চালে বৈশাখীকে ছাঁটলেন দিলীপ! জায়গা নেই চন্দ্র বসুরও

 

Previous articleকৌশলী চালে বৈশাখীকে ছাঁটলেন দিলীপ! জায়গা নেই চন্দ্র বসুরও
Next articleফের আলুর দর বেঁধে দিল রাজ্য সরকার! বেশি দাম নিলেই আইনি ব্যবস্থা