Wednesday, December 17, 2025

পরিযায়ী পরিবারের কচিকাঁচাদের পড়িয়ে রোল মডেল পুলিশ-স্যার

Date:

Share post:

ওঁরা পরিযায়ী শ্রমিক। দু’বেলা দু’মুঠো জোগাড় করতে ওঁদের ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে হয়। দিনরাত পরিশ্রম করতে হয়। লকডাউনে সে কাজও বন্ধ। করোনা পরিস্থিতিতে বহু কষ্টে বাড়িতে হয়তো ফিরতে পেরেছেন ওঁরা, কিন্তু খাবার জোটে না ঠিকমতো। যে বাড়িতে খাবারই জোটে না, সেখানে ছেলেমেয়েদর পড়াশোনা দূরের ব্যাপার। আর অনলাইন পড়াশোনার জন্য স্মার্টফোন তো কষ্টকল্প। পরিযায়ী পরিবারের বাচ্চাদের পড়িয়ে সাক্ষরতা দিবসে রোল মডেল বেঙ্গালুরুর পুলিশ স্যার।

পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের দুর্দশা, তাঁদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য এবার এগিয়ে এলেন বেঙ্গালুরুর এক পুলিশকর্মী।সাব ইন্সপেক্টর সন্থাপ্পা জাদেম্মানাভর। বিশ্ব স্বাক্ষরতা দিবসে তিনি দেশের এক রোল মডেল। পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের কচিকাঁচাদের পড়াচ্ছেন তিনি নিজেই। পুলিশের কাজ সামলে এখন পুরোদস্তুর শিক্ষক সন্থাপা। ফুটপাথেই তাঁর স্কুল। চাকরিতে যাওয়ার আগে ছেলেমেয়েদের পড়ান তিনি। কাজ থেকে ফিরেও বিরাম নেই। ওদের পড়াশোনা দেখিয়ে না দিলে চলবে কী করে?

আরও পড়ুন : এবার পুলিশকর্মীদের পাশাপাশি পুজো বোনাস পাবেন সাংবাদিকরাও: মুখ্যমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের জেরে জনজীবন বিধ্বস্ত। স্কুল খোলার প্রশ্ন নেই। আর পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারে বাচ্চাদের পড়াশোনা, করাবে কে? এমনিতেই অর্থাভাবে এখনও অনেক বাচ্চাই স্কুলে যায় না। মেয়েদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও জটিল। মেয়ে একটু বড় হওয়া মানেই বিয়ে দিয়ে রেহাই পাওয়া।

পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারের সন্তানরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে, শিক্ষার আলো থেকে সরে না যায় সেই চেষ্টাই করে চলেছেন বেঙ্গালুর পুলিশ মাস্টারমশাই সন্থাপা। তাঁর কথায়, “এই সমস্ত বাচ্চাদেরও শিক্ষার অধিকার রয়েছে। স্মার্টফোন নেই বলে ওরা অনলাইন ক্লাস করতে পারছে না। এতে ওদের তো কিছু করার নেই।পড়াশোনা বন্ধ হলে ওদেরও শৈশবেই কাজে যোগ দিতে হবে। সেটা আমি চাই না।ওদের পড়াশোনা করানো, বড় করে তোলাই আমার মূল লক্ষ্য।”

নতুন মাস্টারমশাইকে ভারি পছন্দ বাচ্চাদের। পুলিশ হলেও মোটেও তারা ভয় পায় না স্যারকে। বরং স্যার কখন তাদের ভারি আপনজন হয়ে গিয়েছেন। রোজ সকালেই ২০-২৫ জন পড়ুয়া ফুটপাথের স্কুলে হাজির হয়ে যায়। পুলিশ স্যারও সময়ের বিষয়ে খুব কড়া। বেঙ্গালুরুর অন্নপূর্ণেশ্বরী নগরে ফুটপাথে চলে পুলিশ-শিক্ষকের ক্লাস। গ্লোসাইন বোর্ডে মার্কার পেনে লিখে, এঁকে পড়ান সন্থাপা স্যার।

বিনয়ী পুলিশ-স্যারের কথায় কাউকে না কাউকে উদ্যোগ তো নিতেই হত।আপাতত তিনিই নিজের উর্দির দায়িত্ব সামলে, সমাজের পিছিয়ে পড়া বাচ্চাগুলোর জন্য কিছু করতে চান। কারণ, তারা আজ শিক্ষিত হলে আখেড়ে সমাজেরই ভালো হবে। যতদিন পারবেন এই চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তিনি।

spot_img

Related articles

ঢাকায় হুমকি হাইকমিশনে: বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে তলব বিদেশ মন্ত্রকের

বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসে ক্রমাগত হুমকি। অথচ বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনূস (Mohammed Yunus) পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার নীরব। প্রতিবেশী দেশ ভারতের...

বাংলায় কোটি কোটি রোহিঙ্গা-বাংলাদেশি কোথায়? মিথ্যাচারের জন্য ক্ষমা চাক বঙ্গ বিজেপি: তীব্র নিশানা অভিষেকের

বিজেপি বলেছিল বাংলায় এক-দেড় কোটি রোহিঙ্গা, অগণিত বাংলাদেশি নাগরিক আছে। তারা কোথায় গেল? বাংলার ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন...

NCRT-র সিলেবাসে বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ইতিহাস রাখার দাবি ঋতব্রতের

এনসিইআরটি-র পাঠ্যবইয়ে বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের (Bengali Freedom Fighters) ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত...

অস্কার নমিনেশনে শর্টলিস্টেড ‘হোমবাউন্ড’! উচ্ছ্বসিত করণ শুভেচ্ছা জানালেন টিমকে

অ্যাকাডেমি পুরস্কার জেতার স্বপ্ন দেখছে ভারতীয় বিনোদন জগত (Indian Entertainment Industry)। মঙ্গলবার ৯৮তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসে সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার...