এবার আকাশবাণীতে উত্তমকুমারের মহালয়ার অনুষ্ঠান!

ব্যতিক্রমী দুর্গাপুজো। মহালয়ার একমাস ছদিন পরে দেবীর বোধন। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিরল অতিমারি পরিস্থিতি। এবার আকাশবাণীর মহালয়ার অনুষ্ঠানেও কি ব্যতিক্রমের ছোঁয়া? সূত্রের খবর, বহু বিতর্কিত উত্তমকুমার-বসন্ত চৌধুরীদের উপস্থাপনায় ‘দেবীং দুর্গতিহারিণীম’ এবার বাজতে পারে বেতারে। তবে সেটা মহালয়ার দিন নয়, এই অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হতে পারে ষষ্ঠীর দিন।
১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি উত্তমকুমার, বসন্ত চৌধুরীদের ভাষ্যে মহালয়ার সকালে ‘দেবীং দুর্গতিহারিণীম’ সম্প্রচারিত হয়। কিন্তু উত্তমকুমার তখন খ্যাতির মধ্যগগনে থাকা সত্ত্বেও, অত্যন্ত সমালোচিত হয় এই অনুষ্ঠান। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ দিয়ে সাজানো যে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ শুনে বাঙালির দুর্গাপুজোর সূচনা হয়, তার জায়গায় এই অনুষ্ঠান মেনে নিতে পারেননি শ্রোতারা। সেই অসন্তোষ ঢাকতে সে বার ষষ্ঠীতে ফিরিয়ে আনা হয় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রদের অনুষ্ঠানটি। এ বার উলটপুরাণ। ষষ্ঠীতে উত্তমকুমারের ওই অনুষ্ঠান বাজবে বলে জানাচ্ছে আকাশবাণী কর্তৃপক্ষ।
মহালয়া থেকে দেবীর বোধনের মধ্যে এক মাস ছ’দিনের ব্যবধান অভূতপূর্ব না হলেও বিরল। শেষ কবে ঘটেছিল স্মরণে নেই প্রবীণ পুরোহিতদেরও। বৃহস্পতিবার, মহালয়ার সকালে আকাশবাণীতে সম্প্রচারিত হবে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। তবে, মূল পুজো দেরিতে হওয়ায় ওই অনুষ্ঠানটি পুনঃসম্প্রচারের আবেদন জানিয়েছে পুরোহিত সমাজের একাংশ।
বঙ্গীয় পুরোহিত সম্মিলনীর তরফে যেমন বলা হচ্ছে, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে আকাশবাণীর ওই অনুষ্ঠানই হল পুজোর আবাহন। তাই তাদের দাবি, এ বছর আশ্বিনের মল মাস পেরোলে পুজোর আগে “মহিষাসুরমর্দিনী’ অনুষ্ঠানটি পুনঃসম্প্রচার করা হোক। আকাশবাণী কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাতে রাজি নয়।আকাশবাণীর কলকাতা কেন্দ্রের প্রোগ্রাম হেড সুব্রত মজুমদার জানান, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। মহালয়ার দিনেই ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সম্প্রচার করা হবে। পুজোর আগে সেটি দু’বার বাজানো যাবে না।
ইতিহাস বলছে, শুরুর দিকে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ ষষ্ঠীর ভোরে হত। এর পরে পিতৃপক্ষের শেষে মহালয়ার তর্পণের ভোরে শুরু হয় আকাশবাণীর দেবী-আবাহন। কিন্তু বার বার বাজিয়ে অনুষ্ঠানের কৌলীন্য নষ্ট করতে রাজি নয় কর্তৃপক্ষ। তাই এবার অন্যভাবে হচ্ছে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। শেষ মুহূর্তে আর কোনও সিদ্ধান্ত বদল না হলে, ১৯৬৬ সালের একটি রেকর্ডিং বাজবে বৃহস্পতিবার মহালয়ার ভোরে। আর উত্তমকুমারদের অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করা হবে ষষ্ঠীর ভোরে।

Previous articleএবারের তর্পণ সামাজিক দূরত্ব মেনেই, গণ্ডি থাকছে ঘাটে, পড়তে হবে মাস্ক
Next articleসমুদ্র ফুঁড়ে উঠে আসেন ‘নিষ্কলঙ্ক মহাদেব’ ! কোথায় জানেন?