শান্তি ফেরাতে বৈঠক, তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় উপস্থিত মহিলা প্রতিনিধিরাও

গত কয়েক দশক ধরে বহু পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে আফগানিস্তান। সম্রাট মহম্মদ জাহির শাহর আমলে গোলাপি স্কার্ট পরেছেন আফগান সুন্দরিরা। তালিবান আমলে তাঁরাই আবার বোরখার আড়ালে থেকেছেন। এই আফগানিস্তানের মাটিতে লাঞ্চিত হতে হয়েছে দেশের মহিলাদের। এই আফগানভূমিতে এবার নতুন যুগের সূচনা হলো। তালিবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছেন চার আফগান মহিলা।

গত শনিবার থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় আফগান সরকার ও তালিবানের শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকের মূল উদ্দেশ আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানো। ওই বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে অংশ নেন ১৭ জন পুরুষ। নিজেদের যোগ্যতায় ওই বৈঠকে ১৭ জন পুরুষের সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন ফজিয়া কুফি, ফতিমা গৈলানি, হাবিবা সারাবি এবং শরিফা জুরমাতি।

এই চার মহিলাকে কখনও না কখনও তালিবান আমলে অত্যাচারিত হতে হয়েছে। নেলপলিশ লাগানোর ‘দোষে’ চাবুক খেতে হয়েছিল ফজিয়া কুফিকে। তালিবান আমলে পাকিস্তানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন পেশায় শিক্ষিকা হাবিবা সারাবি। পেশাগত তাগিদে মেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন তিনি। চেয়েছিলেন মেয়েরা লেখাপড়া করুক। কিন্তু তালিবান শাসকরা সেটা মানতে পারেনি। তালিবান শাসনের পর দেশে ফিরেছিলেন তিনি। আফগানিস্তানে ফিরে দেশের প্রথম প্রাদেশিক গভর্নর হয়েছেন। দু’বার মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন। শনিবার থেকে শুরু হওয়া শান্তি আলোচনাকে সদর্থক বলেই ব্যাখ্যা করলেন হাবিবা। কিন্তু মহিলাদের নিয়ে তালিবান নেতৃত্বের যে মনোভাব, এত সহজে পাল্টাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাঁর।

প্রসঙ্গত, আমেরিকা চায় আফগানিস্তানে দীর্ঘদিনের এই লড়াই শেষ হয়ে যাক। দু’পক্ষের শান্তি বজায় রাখার আর্জি মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও। আলোচনায় দু’পক্ষের সদর্থক ভূমিকার আর্জি জানিয়েছেন, কাতারের বিদেশমন্ত্রী শেখ মহম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি। মাইক পম্পেও বলেন, “আফগানিস্তান কীভাবে চলবে, সেটা সেই দেশকেই করতে হবে। রাজনৈতিক রীতিনীতি তৈরি করবেন আপনারাই। এই শান্তি প্রক্রিয়ায় গোটা বিশ্ব আফগানিস্তানের সঙ্গে রয়েছে।”

আরও পড়ুন : মস্কোর বৈঠকের আগে লাদাখ সীমান্তে ১০০ থেকে ২০০ রাউন্ড গুলি বিনিময়!