দুর্গা-মণ্ডপ খোলামেলা করতেই হবে, গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি বোর্ডের পরামর্শ নবান্নকে

করোনা-আবহেই এবারের দুর্গাপুজো৷ একদিকে যেমন ঝুঁকি, অন্যদিকে তেমনই চ্যালেঞ্জ ৷

পুজো উদ্যোক্তাদের এ বছর বাড়তি কোন ধরনের সুরক্ষাবিধি মেনে চলতে হবে, সে বিষয়ে নবান্নকে পরামর্শ দিয়েছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি বোর্ড।

অ্যাডভাইজরি বোর্ড মূলত জোর দিয়েছে, এ বার যেন ঘেরা প্যান্ডেল না হয়৷ পুজোমণ্ডপ অনেক বেশি খোলামেলা হোক। প্রসঙ্গত, দূরত্ববিধি রক্ষা করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ইতিমধ্যেই একইকথা বলেছেন৷

এই দুই মতামতের ভিত্তিতেই পুজো নিয়ে পুলিশ সুপার, পুলিস কমিশনারদের বিশেষ নির্দেশ দিলেন ডিজি। বলা হয়েছে, প্রত্যেক থানার ওসি বা আইসি’রা তাঁদের এলাকার প্রতিটি পুজো কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠাবেন। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর পুজোর অনুমতি পাওয়া যাবে।
বলা হয়েছে:

◾প্রত্যেক পুজো কমিটির কাছে জানতে চাওয়া হবে, সতর্কতা- বিধি মেনে কীভাবে তাঁরা পুজো করতে চান ?

◾সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মণ্ডপে কী ব্যবস্থা রাখা হবে?

◾ স্যানিটাইজারের জন্যে কী ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে?

◾স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে করোনা সচেতনতা প্রচার করা হবে?

◾অঞ্জলি দেওয়ার সময় অনেক মানুষ ভিড় করেন, তা সামলাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?

পুজো কমিটিগুলির কাছ থেকে এই তথ্যগুলি পাওয়ার পর স্থানীয় থানা
তা পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনারকে পাঠাবে। পুজো কমিটিভিত্তিক রিপোর্ট দেখার পর, সন্তুষ্ট হলে অনুমতি মিলবে৷ প্রয়োজনে পুজো আয়োজনে কিছু সংশোধন করার নির্দেশও দেওয়া হতে পারে। পুজো চলাকালীন নজর রাখা হবে, উদ্যোক্তারা নিজেদের জানানো নিয়ম মেনে চলছেন কি’না৷

গ্লোবাল অ্যাডভাইজরি বোর্ডের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে গত সোমবার নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বৈঠক শেষে তিনি বলেছেন, ‘অ্যাডভাইজরি বোর্ড খুব ভালো পরামর্শ দিয়েছেন। সামনেই দুর্গাপুজো আছে। এবারের পুজো আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। দুর্গাপুজো আমাদের জাতীয় উৎসব। মুখ্যমন্ত্রী জানান, “বোর্ড বলেছে, পুজোমণ্ডপ খোলা রাখতে, যাতে হাওয়া ঢোকে, মুক্ত থাকে। চারদিক বন্ধ থাকলে সমস্যা হবে। বেস্ট ম্যানেজমেন্ট ও নিরাপদ থাকার জন্য এটা করতে হবে।”

ওদিকে, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর পুজো উদ্যোক্তাদের নিয়ে পুলিশ, দমকল, বিদ্যুৎ সংস্থা, পুরসভা-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বৈঠক হওয়ার কথা। ওই বৈঠকে পুজো উদ্যোক্তাদের এই পরামর্শই দেবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “প্যান্ডেল পুরোটা না-ঢেকে দিয়ে খোলা রাখতেই হবে, যাতে হাওয়া চলাচল করে, নিঃশ্বাস নিতে সুবিধা হয়৷ তাছাড়া, প্যান্ডেল খোলা রাখলে জীবাণু থাকলেও তা বেরিয়ে যেতে পারে। মণ্ডপে শুধুই দু-একটা ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রাখলে হবে না। যেখান থেকে দর্শকরা পুজো দেখবেন বা অঞ্জলি দেবেন, সেই জায়গাটা খোলা রাখতেই হবে। তবে যেখানে প্রতিমা বসবে, সেই জায়গা অবশ্যই ঢাকা থাকবে।”

করোনা আবহে এ বছরের দুর্গাপুজো যে অন্যরকম হবে, সে কথা বিবেচনা করে মাসখানেক আগে ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’ যে ১৭ দফা পরামর্শ শহরের পুজোকর্তাদের পাঠিয়েছিল, তার অন্যতম ছিল এই খোলা মণ্ডপই। মণ্ডপের ভিতরে না-ঢুকেই যাতে প্রতিমা দর্শন করা যায়, সেই মতো মণ্ডপ হোক, এমনটাই আবেদন করেছে ফোরাম৷ সামাজিক দূরত্ব মানতে সিঁদুরখেলা বন্ধ রাখা, মণ্ডপের মধ্যে ঠায় দাঁড়িয়ে সন্ধিপুজো দেখা, মণ্ডপের চারপাশে খাবারের স্টলে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা না-রাখার প্রস্তাবও ফোরাম পেশ করেছে৷

আরও পড়ুন-আজ মোদির জন্মদিনে শুভেচ্ছার ঢল, সেবা সপ্তাহ পালনের ডাক

Previous articleস্নাতকস্তরের পরীক্ষার সূচি প্রকাশ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের
Next articleতাপসীর সঙ্গে রাজকুমার হিরানির ছবিতে ‘কামব্যাক’ শাহরুখের!