Thursday, August 28, 2025

মহামারির জের, টাকা নেই, বিক্রির মুখে হাজারেরও বেশি বেসরকারি স্কুল

Date:

এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে উদ্বেগজনক চিত্র৷ মহামারির জেরে ভয়াবহ প্রভাব পড়তে চলেছে দেশের শিক্ষা- পরিকাঠামোয়৷ এই প্রবনতা বজায় থাকলে দেশে মাঝারি থেকে ছোট মাপের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি নিশ্চিতভাবেই অস্তিত্বের সংকটে পড়বে৷ স্কুলছুট হবে লাখো পড়ুয়া৷

গোটা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এমনিতেই মহামারির প্রভাব ভয়াবহ৷
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, পরীক্ষা অনিশ্চিত ৷ এবার বেসরকারি স্কুল চালানোর ক্ষেত্রেও এই মহামারি ভয়ঙ্কর বার্তা দিচ্ছে।

শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত CERESTRA VENTURES বা সেরেস্ট্রা ভেনচারস নামে একটি সংস্থার সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, দেশের প্রায় ১ হাজার বেসরকারি স্কুল বিক্রি হতে চলেছে৷ এই সব স্কুল বাঁচাতে আনুমানিক প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন। এই টাকা কে দেবে ?

সেরেস্ট্রা-র সমীক্ষা বলছে, মহামারির জেরে দেশের সমস্ত স্কুল এখন বন্ধ। স্কুলের পরিকাঠামোগত
খরচ সামলানোর পর শিক্ষক-অশিক্ষকদের নিয়মিত বেতন মেটানো অনেক বেসরকারি স্কুলের কাছেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ অনেক ক্ষেত্রে এই করোনা-কালে অভিভাবক স্কুলের ফি দিতে পারছেন না। ফলে বেসরকারি স্কুলগুলির মালিকপক্ষের ঘাড়ে অতিরিক্ত খরচের বোঝা চেপেছে৷

শুধুমাত্র এই কারনেই অনেক স্কুলের মালিকরাই, মালিকানা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ফলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।

সমীক্ষায় আন্তর্জাতিক মানের এক বেসরকারি স্কুলের কর্ণধারের মন্তব্য তুলে ধরা হয়েছে৷ সেখানে বলা হয়েছে, “বেসরকারি স্কুল চালাচ্ছেন এমন অনেকেই কোনও না কোনও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সেই ব্যবসার টাকাই স্কুলে বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু করোনার জেরে তাঁদের মূল ব্যবসাতেই প্রভাব পড়েছে। বাধ্য হয়েই তাদের অনেকেই স্কুলগুলিতে আর বিনিয়োগ করতে রাজি হচ্ছেন না। টাকা না পেলে ওই সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া বিকল্প রাস্তা নেই৷ ফলে সব মিলিয়ে পরিস্থিতি জটিলতর হচ্ছে।”

ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের ৮০ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই বেসরকারি বিনিয়োগে চলে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক ফি ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা। CERESTRA-র তরফে বিশাল গোয়েল বলেছেন, “মহামারি পরিস্থিতিতে অনেক রাজ্য সরকারই বেসরকারি স্কুলগুলোর ফি বেঁধে দিয়েছে। এর ফলে বড়মাপের সমস্যা তৈরি হয়েছে।” তিনি বলেছেন, “স্কুলের সার্বিক খরচ এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মীদের বেতন মেটাতে প্রতিমাসে বিশাল অঙ্কের টাকার দরকার। বর্তমানে স্কুলগুলো বন্ধ, টাকা আসবে কোথা থেকে ? এ কারনেই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বেতন দিতে না পেরে কোনও কোনও স্কুল, শিক্ষক ছাঁটাই করছে, কোথাও আবার শিক্ষকদের বেতন কেটে নেওয়া হচ্ছে।”

ঠিক এমন নজিরবিহীন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহন করতে না পেরে অনেক মালিকই স্কুল বিক্রির পথে হাঁটছেন বলে দাবি করেছে সমীক্ষা৷

CERESTRA-র এই সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, কর্নাটক- মহারাষ্ট্র-তেলঙ্গানায় এমন অসংখ্য স্কুলের হদিশ মিলেছে যেগুলো বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজছেন। স্কুলগুলো কবে খুলবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই পরিস্থিতির বদল ঘটবে বলে আশাবাদী সমীক্ষকরা।

আরও পড়ুন- Big Breaking: সুশান্ত মৃত্যুতে যোগের অভিযোগে ৮ বলি তারকাকে হাজিরার নির্দেশ আদালতের

Related articles

উন্মুক্ত শৌচমুক্ত ৯৪ পুরসভা, স্বচ্ছতার শংসাপত্র বাংলাকে

শহরাঞ্চলে আর খোলা শৌচের দৃশ্য নেই। পুরসভাগুলির উদ্যোগ এবং পুর দফতরের তদারকিতে উন্মুক্ত শৌচমুক্ত হয়েছে কলকাতা সহ রাজ্যের...

ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে দ্রুত ইআরও–এইআরও নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের 

ফাঁকা পড়ে থাকা একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (ইআরও) এবং অ্যাসিসটেন্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন আধিকারিক (এইআরও) নিয়োগের...

নথিভুক্ত অথচ নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে তলব করল কমিশন 

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ফের সক্রিয় হল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। নথিভুক্ত হলেও কার্যত নিষ্ক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলিকে শুনানিতে...

সুখবর! পুজোর আগে পার্ট টাইম কর্মীদের বেতন বাড়াল রাজ্য 

পুজোর আগে রাজ্যের আংশিক সময়ের কর্মীদের জন্য বড় সুখবর দিল নবান্ন। বিভিন্ন দফতর ও সরকার অধীনস্থ সংস্থায় কর্মরত...
Exit mobile version