এবার ‘জাত’ গেল যে সিপিএমের! অভিজিৎ ঘোষের কলম

অভিজিৎ ঘোষ

কতরঙ্গ দেখি দুনিয়ায়!

সিপিএমের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী কথাটা বেশি বলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, তৃণমূল-বিজেপি ভাই ভাই। দিল্লিতে দোস্তি, বাংলায় কুস্তি। কিন্তু সুজন চক্রবর্তীর দল সিপিআইএম-এর সোশ্যাল সাইট ফেসবুকে এ কী দৃশ্য? দেখলে যে চমকে যেতে হয়!

কৃষি বিল নিয়ে রাজ্যসভার ৮ সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রসের ২জন, সিপিএমের ২জন, কংগ্রেসের ৩জন, আপের ১জন। সংসদ ভবনের বাইরে গান্ধী মূর্তির তলায় সব ক’জন সাংসদদের নিয়ে অন্য সাংসদরা ধরণায় বসেছেন। চলবে রাতভর। তো সেই ধরণার ছবিতে জ্বল জ্বল করছে দোলা সেনের ছবি। অতীতে কখনও তৃণমূলের কোনও নেতার ছবি এভাবে বামেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাপা হয়নি। আর যদি বা হয়েও থাকে, তাহলে সেটা নিশ্চিতভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘খাস্তা’ করার জন্য। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতারা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন, বিজেপি-তৃণমূলের সেটিং আছে। দুজনই সমান শত্রু। তাহলে কেন সেই ‘সেটিং’ পার্টির সঙ্গে ধরণায় বসা, কেনই বা ‘সেটিং’ পার্টির সঙ্গে ছবি তোলা, আর কেনই বা তা নিজেদের সোশ্যাল সাইটে দেওয়া? শ্রেণি শত্রুর সঙ্গে এক মঞ্চে বসে বিক্ষোভ? ভুল বার্তা গেল না? বিজেপির ‘দোস্ত’ পার্টির এমপির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়ার পর ‘জাত’ থাকবে তো সিপিএমের?

আসলে কেউ কেউ বলছেন, একেই বলে ঠেলার নাম বাবাজি। একলা হতে হতে, জনবিচ্ছিন্ন হতে হতে যে সিপিএম নেতা জ্যোতি বসুকে এক সময় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তাদের এখন কেরলের বিরোধী দল কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলায় জোট করতে হয়। আর সংসদে বেকায়দায় পড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদের পাশে বসে ছবি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে হয়।

একেই বোধহয় বলা যায় ঠেলার নাম বাবাজি। সুমনের গানটা মনে পড়ছে…’কখন কী ঘটে যায় কিচ্ছু বলা যায় না’…!!!

আরও পড়ুন-সংসদীয় গণতন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করার প্রবণতা রুখতেই হবে : সুখেন্দু শেখর রায়