“মানুষ মানুষের জন্য একটু সহানুভূতি কী মানুষ পেতে পারে না…!” কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী ভূপেন হাজারিকার এই গান এবার বাস্তবের রূপ পেলো। করোনা আক্রান্ত TMC নেতাকে প্লাজমা দান করে নজিরবিহীন কাজ করলেন CPM-এর এক নেতা। যেখানে ধর্ম-বর্ণ-রাজনীতির রংয়ের থেকেও আগে মানুষের জীবন! তৃণমূল নেতার জীবন বাঁচিয়ে এমনটাই প্রমাণ করলেন CPM নেতা।

একটা সমও সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা। বাংলার বুকে সিপিএম নামক দীর্ঘ ৩৪ বছরের জগদ্দল পাথরকে হটিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। এ রাজ্যে এখনও বামদের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক শত্রু তৃণমূল-ই।
কিন্তু, সঙ্কটকালে মানুষের জীবনের প্রশ্নে রাজনীতির লড়াই ভুলে প্রতিদ্বন্দ্বীর পাশে দাঁড়ালেন হাবড়ার সিপিএম নেতা ঋজিনন্দন বিশ্বাস। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন হাবড়া পুরসভার প্রশাসক তথা এলাকার ডাকাবুকো তৃণমূল নেতা নেতা নীলিমেশ দাস। তা জানতে পেরে হাসপাতালে প্লাজমা দিতে ছুটে যান ঋজিনন্দন। তবে কিছু সমস্যা থাকায় তাঁর প্লাজমা নেননি চিকিৎসকরা। কিন্তু রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ঋজিনন্দনের এমন মানবিক পদক্ষেপে সমাজে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের বক্তব্য, রং না দেখে দল সবসময় মানুষের পাশে থাকে।

আরও পড়ুন- ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত কবি পার্থসারথি বসু
উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্ত তৃণমূল নেতা নীলিমেশ দাসের চিকিৎসা চলছে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি হাবড়া পুরসভার প্রশাসক। সেই খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে প্লাজমা দান করতে যান সিপিএম নেতা ঋজিনন্দন বিশ্বাস। গত অগাস্টে অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় তাঁর করোনা ধরা পড়েছিল। কিন্তু তাঁর প্লাজমা গ্রহণ করেননি চিকিৎসকরা। হাসপাতালের যুক্তি, ঋজিনন্দনবাবুর লালরসের নমুনা পরীক্ষায় করোনার অস্তিত্ব মেলেনি। তাই প্লাজমা নেওয়া যায়নি।

চিকিৎসকদের এমন যুক্তি শুনে খানিকটা স্তম্ভিত ঋজিনন্দন বিশ্বাস। তাঁর কথায়,”সরকারি নির্দেশিকায় তো রয়েছে, অ্যান্টিজেন টেস্টে ধরা পড়লেও তাঁকে করোনা রোগী হিসেবেই দেখতে হবে। তাহলে এটা কী ধরনের যুক্তি হতে পারে! ” বিরোধী দলের নেতার এমন সৌজন্যে তৃণমূল নেতা নীলিমেশবাবুর প্রতিক্রিয়া, ”এটাই হাবড়ার রাজনৈতিক সংস্কৃতি।”
আরও পড়ুন- কোভিড মোকাবিলায় দুর্যোগ ত্রাণ তহবিলের ৫০ শতাংশ খরচ করতে পারবে রাজ্য: প্রধানমন্ত্রী
