করোনা আবহে ভোলবদলে নতুন রূপে শিয়ালদহ স্টেশন যেন পাঁচতারা হোটেল

কোথাও দেওয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে। কোথায় আবার পানের পিক, তাকানো দায়। ইতিউতি ছড়িয়ে আছে গুটখা কিংবা ফাস্ট ফুডের ফেলে দেওয়া প্যাকেট! হ্যাঁ, এতদিন পর্যন্ত শতাব্দীপ্রাচীন শিয়ালদহ স্টেশনের চিত্র ছিল এরকমই। কিন্তু করোনা আবহে দীর্ঘ লকডাউন পর্বে বদলে গেছে শিয়ালদহ। বদলে গেছে তার রূপ। নতুন রূপে শিয়ালদহ যেন পাঁচতারা হোটেল! বিশ্বাস হচ্ছে না? না হওয়ারই কথা। কিন্তু গল্প হলেও সত্যি, আধুনিকতা আর ঐতিহ্যের মোড়কে বর্তমানে অন্য রূপে ধরা দিচ্ছে শিয়ালদহ স্টেশন!

এখন শিয়ালদা স্টেশনে আপনি এলে মনে হবে যেন অন্য কোনও দেশ, অন্য কোনও গ্রহে এসে পড়েছেন। করোনাকালে ট্রেন বন্ধ, সকলে গৃহবন্দি, এই সুযোগে নিজের যত্ন নিল শহর-দেশ তথা বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত রেলস্টেশন শিয়ালদহ। আপাদমস্তক বদলে গিয়েছে তার চেহারা। এবার স্টেশনেই মিলবে পাঁচতারা হোটেলের মতো পরিষেবা। রয়েছে শপিং মল। রেস্তোরাঁয় ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতে চাইলে শিয়ালদহ স্টেশনেই মিলবে সেই সুযোগ। আরও কত কিছু। শুধু রেলের চাকা ঘোরার অপেক্ষা।

তথ্য বলছে, সবমিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৯০০টির বেশি ট্রেন ও প্রায় ১২ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন আমাদের গর্বের-ঐতিহ্যের শিয়ালদহ স্টেশন থেকে। কিন্তু শতাব্দীপ্রাচীন স্টেশনের পরিবেশ খুব একটা সুখকর ছিল না। তবে করোনা বদলে দিয়েছে বলা ভালো আমূল পরিবর্তন করেছে শিয়ালদহ স্টেশনকে। লকডাউনের সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

 

সুসজ্জিত ফুলের টবে ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে গোটা স্টেশন। চোখ ধাঁধিয়ে দেবে দেওয়ালে আঁকা নানা শিল্পকর্ম ও মুর‌্যাল। শপিংমল তৈরি হচ্ছে দক্ষিণ শাখার প্ল্যাটফর্মের কাছে। আর পাশেই একটি নামী সংস্থার রেস্তোরাঁ।

আরও পড়ুন- কৃষি বিলের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনে তৃণমূল, কেন্দ্রকে তুলোধনা পার্থর

 

জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ স্টেশনে একই জায়গায় সব টিকিট কাউন্টার নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। প্ল্যাটফর্ম নম্বরও পাল্টে গিয়েছে। দক্ষিণ শাখায় প্ল্যাটফর্মের নম্বর ছিল ১০এ থেকে ১৪এ। সেটি হচ্ছে ১৫ থেকে ২১। উত্তর শাখায় ১এ থেকে ৯ডি প্ল্যাটফর্ম এবার হচ্ছে ১ থেকে ১৪।

তবে সবচেয়ে বৈচিত্র এনেছে শিয়ালদহ স্টেশনের এগজিটিউটিভ লাউঞ্জ। করোনা পূর্বে এটি তৈরি হলেও লকডাউনে তার রূপ-বৈচিত্র অন্য মাত্রা পেয়েছে। এই ফাঁকে আরও সাজিয়ে তোলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বিলাসবহুল লাউঞ্জে এক ঘণ্টা সময় কাটাতে লাগবে মাত্র ৫০ (জিএসটি নিয়ে ৫৬ টাকা) টাকা। ট্রেন ধরতে এসে অপেক্ষা করার জন্য আর মেঝেতে কাগজ বিছিয়ে থাকতে হবে না। বেশি সময় কাটানোর জন্য এসি সুইট, এসি ডরমেটরি, ২ শয্যা, ৪ শয্যা রুমেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১২ এবং ২৪ ঘণ্টা তাতে থাকা যাবে। ভাড়া ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে। যা ভারতীয় রেলের আদলেই তৈরি!

আরও কিছু দিনের অপেক্ষা। কেন্দ্রীয় সরকারের সবুজ সংকেতের পরই ঘুরবে রেলের চাকা। আপনিও হয়তো সওয়ারী হবেন। বদলে গেছে শিয়ালদহ, বদলে যাবে না আপনিও! বিমানে যাতায়াত করলে যেমনটি অনুভূতি হয়, এবার রেলে যাতায়াত করলে ঠিক তেমনই অনুভূতি পাবেন আপনিও!

আরও পড়ুন- গোয়া থেকে সমন পেয়েই তিন আইনজীবীর সঙ্গে ভিডিও আলোচনায় দীপিকা

Previous articleকৃষি বিলের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনে তৃণমূল, কেন্দ্রকে তুলোধনা পার্থর
Next articleজুলজিক্যাল পার্ক থেকে উধাও চিতা বাঘের শাবক, পাচারের আশঙ্কা পশুপ্রেমীদের