Saturday, August 23, 2025

শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে যে ভারতীয় জনতা পার্টি কথায় কথায় জয়ধ্বনি দেয়, সেই বিজেপির জাতীয় পরিষদ থেকে মুছে দেওয়া হলো আদি বিজেপিদের। এবার শুধু তৎকাল বিজেপির ভিড়। দিল্লির রাজনৈতিক মহল বলছে, ক্ষমতা বিষম বস্তু। আর তা পেতে দীন দয়াল মার্গের নেতৃত্বের এখন একটাই স্লোগান… ‘মারি অরি পারি যে কৌশলে।’

এ রাজ্যে আদি বিজেপির অন্যতম অবশ্যই রাহুল সিনহা। তিনি দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। ছিলেন সর্বভারতীয় সম্পাদকও। এক ধাক্কায় তিনি নেই, কোত্থাও নেই। না রাজ্যে, না কেন্দ্রে। এবার শুধু তৎকাল বিজেপির ভিড়৷

মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে। দীর্ঘ ৪০ মাসের বেশি সময় তিনি পদহীন ছিলেন। ‘এখন বিশ্ববাংলা সংবাদ’ই প্রথম জানিয়েছিল, মুকুল হয় দলের সাংগঠনিক গুরুত্বপূর্ণ পদ পাচ্ছেন। নইলে তাঁকে সাংসদ করে মন্ত্রী করার সম্ভাবনা থাকছে। মুকুল গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক পদই পেলেন। যে মুকুল রায় তাঁর ভাষণে বলেছিলেন মোদির গায়ে রক্তের দাগ রয়েছে, কিংবা বিজেপির বর্তমান উত্তরপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রী এবং এক সময়ের বাংলার দায়িত্বে থাকা সিদ্ধার্থনাথ সিং বলেছিলেন ‘ ভাগ মুকুল ভাগ’, সেই তৎকাল বিজেপি মুকুল রায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। বিজেপি চায় তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রীর অভিজ্ঞতা দলের কাজে লাগবে।

আরও পড়ুন- NCB তদন্ত চওড়া হচ্ছে, ড্রাগ-কাণ্ডে এবারের নিশানা হৃত্বিক-শাহিদ

একই কথা অনুপম হাজরার ক্ষেত্রেও বলতে হয়। মুকুল ঘনিষ্ঠ। বোলপুরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। দল ছাড়ার পরেও বোঝা যেত না তিনি ঠিক কোন দলে আছেন। নানা সময়ে নানা বিতর্কে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে খুব একটা দেখা যায় না। তৃণমূলে থাকাকালীনও তাঁর গুরুত্ব সেভাবে ছিল না। যেটা একজন সাংসদ হিসাবে থাকা উচিত ছিল। অথচ সেই অনুপম বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক। তৎকাল বিজেপির দ্বিতীয় পদাধিকারী।

আর রাজু বিস্তের কথা যত কম বলা যায়, ততই ভাল। ব্যবসায়ী। বাইরে থেকে এসে এখন বাংলার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি। বাংলার হালচাল জানেন না। কৃষ্টি-সংস্কৃতি বোঝেন না। গোর্খাল্যান্ডের সমর্থক। আলাদা রাজ্য চান। তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র। ভাবা যায় না। তৎকাল বিজেপির শ্রেষ্ঠ উদাহরণ তিনি।

আরও পড়ুন- গরিব মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে “দিদির রান্নাঘর”, ১০ টাকায় পেটপুরে খাবার

বাংলায় তৃণমূলনেত্রীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোনও মহিলা নেত্রীকে সামনে আনাই হলো না। সংসদ কাঁপাচ্ছেন, এক সময় রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী হিসাবে আন্দোলনের ঢেউ তুলেছিলেন লকেট। কী আশ্চর্য সেই লকেটও নেই কমিটিতে। দীর্ঘদিন ধরে যারা রাজ্য বিজেপির অস্তিত্ব অক্ষুন্ন রেখেছিলেন, তারা নেই কোত্থাও। সব জায়গাতেই তৎকাল গন্ধ।

এই বিজেপি আসলে আদর্শ নয়, ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। ক্ষমতায় আসতে বড় বল-ভরসা মুকুল-অনুপমের মতো তৎকাল বিজেপিরা। সেই ছায়া জাতীয় পরিষদ জুড়ে। দিল্লির রাজনৈতিকমহল বলছে, বাংলায় বিজেপির ভবিষ্যৎ যাই হোক না কেন, আগামী তিন বছর দীন দয়াল মার্গে মুকুল আর অনুপমের নিজস্ব চেম্বার কিন্তু কেউ কাড়তে পারবে না!

আরও পড়ুন- মর্মান্তিক ! বৎসোয়ানায় জলে ভয়ঙ্কর বিষ, মৃত্যু ৩৫০ হাতির

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...
Exit mobile version