সরকারি অফিস নয় যে ৬০ বছরে অবসর! পরোক্ষভাবে রাহুলকে কটাক্ষ অনুপমের

“বিজেপি কোনও সরকারি অফিস নয়, যে চাকরি পেলেই ৬০ বছর পর্যন্ত নিজের পদে বহাল থাকবেন। একটা সময় পর পদ। ছাড়তে হবে, সেখানে অন্য কেউ আসবে।” রাহুল সিনহা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে নাম না করে এমনই কটাক্ষ করলেন সর্বভারতীয় বিজেপির নব-নিযুক্ত জাতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। একইসঙ্গে অনুপম বলেন, “আমার পদ আমি নিজে ঠিক করিনি। এটা দিল্লি থেকেই ঠিক হয়েছে। আমাদের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা আমাকে যোগ্য মনে করেছেন, তাই দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি আমার পদের মর্যাদা রাখার চেষ্টা করবো। আর রাহুলদা-কে আমি সরাই নি। সেটাও জে পি নাড্ডার সিদ্ধান্ত। এখানে আমার কিছু বলার নেই।”

প্রসঙ্গত, বঙ্গ বিজেপির “পোস্টার বয়”, যিনি কঠিন সময়েও এ রাজ্যে গেরুয়া ঝান্ডা ধরে লড়াই চালিয়েছেন, সেই রাহুল সিনহাই কি-না কেন্দ্রীয় কমিটিতে ব্রাত্য। তাঁর পরিবর্তে এ রাজ্য থেকে সর্বভারতীয় জাতীয় সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন অনুপম হাজরা। আর এরপরই দলের উপর ক্ষোভ উগরে দেন রাহুল সিনহা। বিজেপির জাতীয় সম্পাদকের পদ খুঁইয়ে তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের নিশানা করেছেন রাহুল। তাঁর কথায়, “৪০ বছর দল করার পুরস্কার পেলাম। আগামী ১০-১২দিনে আমার ভবিষ্যৎ কর্মসূচি ঠিক করবো”।

রাহুল সিনহা দিল্লির নেতাদের পাল্টা চাপে রাখার কৌশল হিসেবে এমন মন্তব্য করলেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁর জায়গায় জাতীয় সম্পাদক হয়েছেন রাজনীতিতে অপেক্ষা নবীন ও অন্য দল থেকে আসা অনুপম হাজরা। স্বাভাবিকভাবেই নাম না করলেও রাহুল নিশানায় অনুপমই।

রাহুল সিনহার নিশানায় তিনি। এ প্রসঙ্গে অনুপম জানান, “রাহুল সিনহার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো। উনি সম্ভবত মানসিকভাবে একটু বিপর্যস্ত। সব ঠিক হয়ে যাবে। বিজেপি একটা পরিবারের মতো। একটা সংসারে থাকতে গেলে এমন ঠোকাঠুকি লেগেই থাকে। চায়ে চুমুক দিতে দিতে আমরা সমস্যা মিটিয়ে ফেলব।”

তাহলে কি রাহুলের মান ভাঙানোর দায়িত্ব নিচ্ছেন অনুপম? উত্তরে তিনি বলেন, “আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটা পালন করবো। ওনার মান ভাঙানোর দায়িত্ব আমার নয়। সেটা আমাকে কেউ করতেও বলেননি। আমি ব্যক্তিগত সম্পর্কের জায়গা থেকে ওনার সঙ্গে বসবো, চা খাবো ব্যাস টুকুই।”

রাহুল সিনহা ১০ থেকে ১২দিন সময় নিয়েছেন, তার আগেই কি চায়ে চুমুক পর্ব চলবে? সেখানেও কটাক্ষের সুরে অনুপম বলেন, “আশা করছি এর মধ্যেই দেখা হবে। আপনারা সকলেই জানেন চায়ে পে চর্চা নামে বিজেপির একটা জনপ্রিয় কর্মসূচি আছে, যেখানে আমরা জনসংযোগ বাড়াই!”

তবে রাহুল সিনহাকে নিয়ে অনুপমের এই ছোট্ট প্রতিক্রিয়াও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনীতিতে অনুপমের থেকে অনেক সিনিয়র লিডার রাহুল সিনহা। সেখানে রাহুলকে সরিয়ে জাতীয় সম্পাদক অনুপমকে করার মধ্য দিয়ে দিল্লির নেতারা কী বার্তা দিতে চাইলেন এখনই রাজনৈতিক মহলে তা স্পষ্ট না হলেও, একজন সিনিয়র নেতাকে চায়ে চুমুক দেওয়ার মধ্যে দিয়ে দেখা করার যে মন্তব্য অনুপম করেছেন, সেটা কিন্তু ভালো চোখে দেখছে না রাহুল শিবির।

আরও পড়ুন : অনুপম হাজরাকে গ্রেফতারের দাবিতে থানায় মুকুল

Previous articleলুডো খেলায় চিটিং করেছে বাবা, কোর্টে মামলা ঠুকল মেয়ে!
Next articleফালাকাটার উপনির্বাচন সম্ভবত হচ্ছে না, মঙ্গলবার কমিশনের জরুরি বৈঠক