২০২১-এ ভারতে ধেয়ে আসছে ‘দারিদ্র্য- মহামারি’, বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট

২০২০ সালের করোনা- মহামারি, ২০২১-এ ‘দারিদ্র্য- মহামারি’ !

করোনা- মহামারির থেকেও শক্তিশালী মারন-ক্ষমতা নিয়ে ২০২১ সালে ভারতে ধেয়ে আসছে ‘দারিদ্র্য- মহামারি’৷ বিশ্ব ব্যাঙ্কের ‘পভার্টি অ্যান্ড শেয়ারড প্রসপারিটি রিপোর্ট’ এই ‘ভয়ঙ্কর’ তথ্য সামনে এনেছে৷ ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গোটা বিশ্বে কমপক্ষে ১৫ কোটি মানুষ ২০২১-এর মধ্যে নতুনভাবে চরম দারিদ্রের মুখে পড়বেন৷ অতিরিক্ত ৮ কোটি ৮০ লক্ষ থেকে ১১ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ চরম দারিদ্রসীমায় পৌঁছবেন।
করোনা-মহামারির কারনেই বিশ্বজুড়ে এই বিপর্যয় নেমে আসছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক৷

বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই ‘পভার্টি অ্যান্ড শেয়ারড প্রসপারিটি রিপোর্ট’ বলেছে, দেশবাসীর আয় সম্পর্কিত সাম্প্রতিক তথ্য ভারত সরকার দেয়নি। তাতে ভারতের পরিস্থিতি জানা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের বক্তব্য, ‘‘বিশ্বের অন্যতম বড় অর্থনীতির কাছেই তথ্য নেই! অথচ ভারতে দরিদ্রের সংখ্যা যথেষ্টই। এ অবস্থায় অসম্পূর্ণ তথ্য, ভারতের পরিস্থিতি বোঝার পক্ষে আরও অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।’’
ভারতের বিপুল জনসংখ্যা নিয়ে বিশেষভাবে চিন্তিত বিশ্ব ব্যাঙ্ক। বলা হয়েছে, ভারতের কাছেও দারিদ্র্য- তথ্য চাওয়া হয়েছিলো, কিন্তু দিল্লির কাছে দেশের দারিদ্র্য নিয়ে সম্পূর্ণ তথ্য নেই। ফলে আসন্ন পরিস্থিতি নিয়ে ভারত নিজেই এখন পুরোপুরি আঁধারেই।

বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মহামারি ও টানা লকডাউনের জেরে কাজকর্ম হারিয়ে পৃথিবীতে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৮০ লক্ষ থেকে ১১ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ চরম দারিদ্রসীমায় পৌঁছবেন। তাতে মোট ১৫ কোটি মানুষ চরম দারিদ্রের মুখোমুখি হবেন। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য আরও তীব্র হবে।

এই ‘পভার্টি অ্যান্ড শেয়ারড প্রসপারিটি রিপোর্ট’ বলছে, ২০১৭ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৯.২ শতাংশ। ২০২০ সালে বিশ্ব করোনা-মহামারির মুখোমুখি না-হলে ওই ৯.২ শতাংশ সংখ্যা নেমে ৭.৯ শতাংশে চলে আসতে পারতো। কিন্তু উল্টে তা বৃদ্ধি পেতে চলেছে৷

বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন, ‘‘বিশ্বজুড়ে মহামারি ও বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দার জেরে পৃথিবীর জনসংখ্যার ১.৪ শতাংশেরও বেশি মানুষ তীব্র দারিদ্র্যের মুখে পড়বেন। এই ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতি সামলাতে ও অর্থসঙ্কট কমাতে দেশগুলোর উচিত এখনই বিকল্প অর্থনীতি তৈরি করা। মূলধন, শ্রম, দক্ষতা এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন ব্যবসা এবং কর্মক্ষেত্র তৈরি করা।’’ তিনি জানিয়েছেন, যে দেশে দারিদ্র্য বেশি, সেখানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আরও নতুন দরিদ্র শ্রেণি তৈরি হবে। মধ্য-আয়ের দেশগুলি সব চেয়ে বিপাকে পড়বে বলে আশঙ্কাও করা হয়েছে রিপোর্টে। এই রিপোর্টই বলছে, এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যে ভ্যাকসিন তৈরি হলেও দুনিয়ার সব প্রান্তে, প্রতিটি পরিবারে প্রতিষেধক পৌঁছতে সময় লাগবে। ওই ভ্যাকসিনে করোনা রোখা গেলেও আসন্ন দারিদ্র্য কোন ‘ভ্যাকসিন’ রোধ করবে তা নিয়ে চিন্তায় বিশ্ব ব্যাঙ্ক।

আরও পড়ুন-চিনের ‘একতরফা আগ্রাসন’-এর প্রতিবেদন ওয়েবসাইট থেকে সরাল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক

Previous articleকয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভোলবদল পায়েলের, টুইটে জানালেন “ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই”
Next articleপাড়ুইয়ের বোমাবাজিতে অভিযুক্ত বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতির পুলিশ হেফাজত