সুস্থ হয়ে ফের করোনা আক্রান্তের ঘটনা বাড়ছে দেশে, উদ্বিগ্ন আইসিএমআর

দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। বাড়তে থাকা করোনা পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন ভারত সরকার। এরই মাঝে সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে জানা গেল, একবার আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠার পর দ্বিতীয়বার ফের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে দেশের নানা প্রান্তে। যা নিশ্চিতভাবেই চিন্তার কারণ। কেন এই ঘটনা ঘটছে তা জানতে ইতিমধ্যে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা শুরু করে দিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)।

মঙ্গলবার একটি বৈঠকে আইসিএমআর এর ডিরেক্টর জেনারেল ডক্টর বলরাম ভারগাভ বলেন, নতুন করে তিনটি পুনঃসংক্রমণের ঘটনা সামনে এসেছে। যার মধ্যে দুটি মুম্বইয়ের এবং একটি আহমেদাবাদের।তিনটি ঘটনাতেই করোনা আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠার অন্তত ১১০ দিন পর ফের আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে কারও শরীরে উপসর্গ রয়েছে কারও আবার নেই। ফলে পরিস্থিতিতে বেশ উদ্বেগজনক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ প্রসঙ্গে ভার্গো বলেন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সারিয়ে ওঠার পর বর্তমানে খুব কম দিন অ্যান্টিবডি স্থায়ী হচ্ছে রোগীর। আগে যেখানে তিন মাস রোগীর শরীরে অ্যান্টিবডি দেখা যেত। সেটাই বর্তমানে দু’মাসের কম সময় স্থায়ী হচ্ছে। ফলে দুর্বল ইমিউনিটির কারণে দ্বিতীয় দফায় সহজে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।

সম্প্রতি এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে ‘ল্যানসেট ইনফেকশিয়াস ডিজিজ’ সায়েন্স জার্নালে। যেখানে দাবি করা হচ্ছে দ্বিতীয় দফায় আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে রোগীর শরীরে প্রথমবার যে ভাইরাল স্ট্রেন সংক্রমণ ছড়িয়েছিল, দ্বিতীয়বার সম্পূর্ণ অন্য ভাইরাল স্ট্রেন সংক্রমণ ছড়িয়েছে। দুই স্ট্রেনের মধ্যে জিনের গঠন বিন্যাসে কিছু মিল আছে তবে দ্বিতীয়বার জিনের বিন্যাস অনেকটাই বদলে ফেলেছে মারণ এই ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে পৃথিবীজুড়ে অন্তত ডজনখানেক এই ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এর পেছনে মূল কারণ অবশ্য দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। অ্যান্টিবডি রোগীর শরীরে বেশি দিন কার্যকরী হচ্ছে না। মাত্র তিন মাস থাকছে তার স্থায়িত্ব। পরে এক ধাক্কায় তা অনেকখানি কমে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: কলকাতা হাইকোর্টে অকারণে ঢোকা বন্ধ বুধবার থেকেই, বিজ্ঞপ্তি জারি

এর পাশাপাশি জিনের গঠন বদলে মানুষের শরীরে ঢোকা ও টিকে থাকার কৌশল শিখে ফেলেছে এই ভাইরাস। তাই একবার সংক্রমণের পরেও রোগীর ফের সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে অবশ্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষবর্ধন জানিয়ে দিয়েছেন, করোনার রিইনফেকশন বা পুনঃসংক্রমণের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, এখনও অবধি পুনঃসংক্রমণের কোনও মারাত্মক প্রভাব সামনে আসেনি। তবে প্রতিটি ঘটনা খুঁটিয়ে দেখছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

Previous articleকলকাতা হাইকোর্টে অকারণে ঢোকা বন্ধ বুধবার থেকেই, বিজ্ঞপ্তি জারি
Next articleকথা রাখেননি, বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দিলেন চিরাগ