Sunday, August 24, 2025

কেন্দ্র বিরোধিতায় জোর, গানে জেল প্রশাসনকে তুলোধনা

Date:

Share post:

প্রায় ১০ বছরেরও বেশি সময় পর জামিনে মুক্তি পেলেন মাওবাদী নেতা মধুসূদন মণ্ডল। আজ, শুক্রবার ঠিক বিকেল ৫টার সময় কলকাতার আলিপুর জেল থেকে জামিনে মুক্ত করা হয় তাঁকে। এদিন মাওবাদী নেতার মুক্তির পর জেলের বাইরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তাঁর রাজনৈতিক অনুগামীরা। প্রিয় নেতার নামে জয়ধ্বনি দিতে থাকেন তাঁরা। ছিলেন তাঁর পরিবারের লোকেরাও।

প্রেসিডেন্সি জেল থেকে বাইরের রাস্তায় এসেই গান শুরু করেন মধুসূদন মণ্ডল। তাঁর গানে গানে ধরা পড়ে সেই বিদ্রোহী রূপ। এখন বিশ্ববাংলা সংবাদের মুখোমুখি হয়ে মধুসূদন মণ্ডল কার্যত কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে নিশানা করেন। নোটবন্দি থেকে শুরু করে জিএসটি, NRC প্রভৃতি ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার তথা তার শাসকদল বিজেপিকে একহাত নেন মাওবাদী নেতা। একইসঙ্গে ২০১০ সালে যখন তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন, সেই সময়কার বাংলার শাসক দল বাম তথা সিপিএমকে একহাত নেন মধুসূদন মণ্ডল। সিপিএম জমানায় মানুষের উপর অত্যাচারের কথা তুলে ধরেন তিনি। তাঁকে যে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়, সেটাও জানান মধুসূদন মণ্ডল।

বাম জমানায় মূলত নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মধুসূদনবাবু। ওইসব এলাকায় তিনি নারায়ণ নামেই পরিচিত ছিলেন। পরে ২০১০ সালে সিপিএম সরকারের পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তারপর থেকেই বন্দিদশা কাটাচ্ছিলাম তিনি। এই দীর্ঘ কারাবাস জীবনে একমাত্র মা মারা যাওয়ার সময় মাত্র চারদিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়েছিলেন মধুসূদন মন্ডল। এদিন জামিনে মুক্তির পর মধুসূদনবাবু বলেন, তাঁর মা-ই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় আদর্শ-অনুপ্রেরণা। ভগৎ সিং-মাস্টারদা সূর্য সেনের ভক্ত মধুসূদন মণ্ডল দাবি করেন, তাঁকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার হয়েছে। এবং ভগৎ সিংকে ইংরেজরা ভারতীয় দণ্ডবিধির যে যে ধারা দিয়েছিল, তাঁকেই পুলিশ সেই ধারাই দিয়েছে।

তবে মাওবাদী বলা হলেও তিনি আদপে মার্ক্সবাদী বলেই নিজেকে দাবি করেন। এছাড়া সশস্ত্র রাজনৈতিক আন্দোলনে তিনি বিশ্বাস করেন না বলেই জানালেন। তাঁর রাজনীতির হাতিয়ার গান-কবিতা।

আপাতত জেল থেকে মুক্তির পর তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি, তিনি কি ফের রাজনীতি করবেন? মধুসূদন মণ্ডলের উত্তর, মানুষের স্বার্থে তাঁর লড়াই জারি থাকবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদ করতে গিয়ে যদি তাঁকে ফের জেলে আসতে হয়, তিনি রাজি আছেন। এবং জেল থেকে বেরিয়েই গানে গানে জেল প্রশাসনকে তুলোধনা করেন তিনি।

বর্তমান রাজ্য সরকার সম্পর্কে অবশ্য কিছুটা নরম মধুসূদন মন্ডল। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এই সরকার অনেক উন্নয়ন করেছে শুনেছি। কিন্তু জেল থেকে বেরোনোর পর এবার নিজে চোখে সেটা দেখতে চান। তারপরই রাজ্য সরকার নিয়ে মন্তব্য করবেন।

অন্যদিকে, মধুসূদন মন্ডল-এর পরিবারে তাঁর মা মূলত সংসার চালাতেন। কিন্ত তিনি প্রয়াত হয়েছেন। স্ত্রী-সন্তানদের জন্য রোজগারের পথ খোঁজাই এখন প্রাথমিক উদ্দেশ্য মধুসূদন মণ্ডলের। আপাতত কিছুদিন পরিবারের সঙ্গেই তিনি পুরো সময়টা কাটাতে চান বলে জানিয়েছেন মধুসূদন মন্ডল।

spot_img

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...