৯দিন ৯রাত যুদ্ধের পর অসুর নিধন করে বিজয়া হয়েছিলেন দেবী দুর্গা

আজ বিজয়া দশমী। এবার করোনা মহামারি আবহের মধ্যেই মানবজাতির মঙ্গলার্থে মর্ত্যে এসেছেন দেবী দুর্গা। জৌলুস বা আড়ম্বর অনেকটা কম হলেও বাঙালি মেতে উঠেছিল শারদ উৎসবে। আশ্বিন মাসের শুক্লা পক্ষের দশমী তিথিতে শ্বশুরবাড়ি কৈলাসে পাড়ি দেন দেবী দুর্গা। আজ সেই দিন। বিষাদের সুরেই এইদিনে বিজয়া পালন করেন মর্ত্যবাসী। কেন এমন রীতি, তার পৌরাণিক ব্যাখ্যায় নানা কাহিনীর উল্লেখ পাওয়া যায়।

পুরাণ মত

পুরাণে কথিত আছে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ও ৯ রাত্রি যুদ্ধ করার পর দশম দিনে জয় লাভ করেন দেবী দুর্গা। এই দিনেই অসুর নিধন করে হয়ে ছিলেন বিজয়া। আর সেই জয়কেই চিহ্নিত করে বিজয়া দশমী।

তবে উত্তর ও মধ্য ভারতে এই দিনে দশেরা উদযাপিত হয়, তার তাৎপর্য ভিন্ন। বাল্মীকি রচিত রামায়ণে কথিত আছে, আশ্বিন মাসের শুক্লা পক্ষের দশমী তিথিতেই রাবনকে বধ করেছিলেন শ্রী রামচন্দ্র। তাই এই দিনটিকে দশেরা বা দশহরা হিসেবে পালন করেন উত্তর ও মধ্য ভারতের মানুষ।

 

আবার কালিদাসের রঘুবংশ ও তুলসিদাসের রামচরিতমানসে বলা হয়েছে যে, আশ্বিনের তিরিশতম দিনে লঙ্কা জয় করে সস্ত্রীক অযোধ্যায় ফিরেছিলেন শ্রী রামচন্দ্র। সেই প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঘরে ঘরে জ্বলেছিল দীপ। সেই রীতিই দশেরা ও দীপাবলি রূপে পালন করা হয়।

দর্শন

দেবী দুর্গার বিদায়ের দিনে বিষাদের সুরেই বিজয়া দশমী পালন করে মর্ত্যবাসী। সধবা মহিলারা সিঁদূর খেলায় মেতে ওঠেন। আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয় মানবকুল। চলে মিষ্টিমুখ। বিশ্ব সংসারে ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। আর এখানেই বিজয়া দশমীর বিশেষত্ব অন্যরকম বলে মনে করা হয়।

অপরাজিতা পুজো

পুরাণ মতে, অপরাজিতা আরাধনা দুর্গাপুজোরই অন্য অঙ্গ। কারণ, উমা তথা দুর্গার অন্য নামই অপরাজিতা। তবে এই দেবীর মূর্তি অন্যরকম। অপরাজিতা চতুর্ভূজা। হাতে শঙ্খ, চক্র, বর ও অভয়মুদ্রা শোভিত, ত্রিনয়না ও মাথায় চন্দ্রকলা সম্বলিত এই দেবী নীল বর্ণা বলে পুরাণে কথিত। দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর পুজো মণ্ডপের ইশান কোণে অষ্টদল পদ্ম এঁকে অপরাজিতা লতা রেখে পুজো করা হয়।

আরও পড়ুন-মাস্ক, স্যানিটাইজারের সাজে দুর্গাপুজোর মণ্ডপ

Previous articleতিস্তায় নতুন রেলসেতু, বাড়বে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য
Next articleদুঃসময়ে আড়ম্বর নয়: সরকারি অনুদান ফেরাল হাওড়ার পুজো কমিটি